উচ্চতর বিদ্যায় আগ্রহ বাড়বে। মনোমতো বিষয় নিয়ে পঠন-পাঠন হবে। ব্যবসা স্থান শুভ। পৈতৃক ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারত এখনও অপরাজিত। পাঁচটি খেলে সবক’টিতে জিতে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে (২৪০) রয়েছে ‘টিম ইন্ডিয়া’। সেখানে বাংলাদেশ সবে অভিযান শুরু করছে। ভারত-বাংলাদেশ এখনও অবধি ৯টি টেস্ট খেলেছে। তার মধ্যে সাতটিতে জয় পেয়েছে ‘টিম ইন্ডিয়া’। ড্র হয়ে দু’টি ম্যাচে। এখনও অবধি ভারতের মাটিতে টাইগাররা একটা টেস্টই খেলেছে। সেটা ২০১৭ সালে হায়দরাবাদে। ওই ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন বিরাট। স্বভাবতই এবারও বাংলাদেশের সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ।
ভারতীয় দলে যেখানে তারকার ছড়াছড়ি সেখানে বাংলাদেশ স্কোয়াডে সাকিব-আল-হাসান, তামিম ইকবালদের মতো তারকাদের অভাব স্পষ্ট। বিরাট কোহলি (২৬), অজিঙ্কা রাহানে (১১) চেতেশ্বর পূজারার (১৮) মতো ভারতের তারকা ব্যাটসম্যানদের মোট সেঞ্চুরি সংখ্যা যেখানে পঞ্চাশের বেশি, সেখানে বাংলাদেশের অধিনায়ক মমিনুল হকের শতরানের সংখ্যা (৮) দশ টপকায়নি। ছয়ে আটকে আছেন মুশফিকুর রহিম। চারটি শতরান হাঁকিয়েছেন মাহমুদুল্লা। ফলে বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা কোনওভাবেই বিরাটদের সাফল্যের ধারেকাছে নেই।
তবে বাংলাদেশ কিন্তু টি-২০ সিরিজে খুব খারাপ খেলেনি। প্রথম ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে টাইগাররা বড় চমক দিয়েছিল। সিরিজের অন্তিম ম্যাচেও সাড়া জাগানো পারফরম্যান্স মেলে ধরেও তারা শেষরক্ষা করতে পারেনি। সেই লড়াই বাংলাদেশকে টেস্ট সিরিজে ভালো খেলার রসদ জোগাবে। বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন মমিনুল হক বলেছেন, ‘ভারত খুবই শক্তিশালী দল। এটাই আমাদের প্রথম ভারত সফর। সিরিজের ফল নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমাদের লক্ষ্য ভালো পারফর্ম করা।’
বেশ কিছুদিন বিশ্রামের পর ফের বাইশ গজে ফিরছেন বিরাট। হোলকার তাঁর পয়মন্ত মাঠ। তাঁর বহু মধুর স্মৃতি রয়েছে এখানে। আর সেই মাঠেই সৌরভ গাঙ্গুলিকে টপকে যাওয়ার হাতছানি কোহলির সামনে। বছর তিনেক আগে এই হোলকারে ঝলসে উঠেছিল বিরাটের চওড়া ব্যাট। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের তুলোধনা করে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন ভিকে। টেস্টে সৌরভের রান টপকে যাওয়ার জন্য কোহলির দরকার আর মাত্র ১৪৭ । ১১৩টি টেস্টে মহারাজের রান ৭২১২। ৮২টি টেস্টে কোহলি ৭০২৬ রান করে ফেলেছেন। বিরাট যেরকম ফর্মে আছেন, তাতে সৌরভকে টপকে যাওয়া তাঁর কাছে কঠিন কাজ নয়। ক্রিকেট যদিও এক বলের খেলা। তাই ইন্দোরে না হলেও, আরও একটা সুযোগ তিনি পাবেন ইডেনে।
২০০০ সালে টেস্টে অধিনায়ক হিসাবে সৌরভের অভিষেক হয়েছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। ২০০৪ সালে অনিল কুম্বলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে কপিল দেবের ৪৩৪ উইকেট টপকে গিয়েছিলেন। ওই ম্যাচেই সুনীল গাভাসকরের ৩৪তম টেস্ট শতরানের নজির স্পর্শ করেছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার শচীন তেন্ডুলকর। আর ওই সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে রাহুল দ্রাবিড় সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে এক অনন্য কীর্তিক মালিক হয়েছিলেন। টেস্ট খেলিয়ে দশটি দলের বিরুদ্ধেই শতরানকারী প্রথম ব্যাটসম্যানের তকমা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ‘দ্য ওয়াল’। তাই শুধু বিরাট নন, রহিত শর্মা, মায়াঙ্ক আগরওয়াল, চেতেশ্বর পূজারা, অজিঙ্কা রাহানে, ঋদ্ধিমান সাহাদের মুকুটে অনেক পালক যোগ হতে পারে।
পিচে ঘাস রয়েছে। ফলে প্রথম দিকে পেসাররা বাড়তি সুবিধা পাবেন। সেক্ষেত্রে নতুন বলে সমস্যা হবে দুই দলের প্রারম্ভিবক ব্যাটসম্যানদের। তিন পেসার নিয়ে দল সাজিয়েছেন ক্যাপ্টেন কোহলি। পেস ত্রয়ী ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদব ও মহম্মদ সামির উপরই ভরসা রেখেছেন তিনি। নতুন বলে উমেশ ও ইশান্ত দারুণ কার্যকরী। উমেশ ভালো স্যুইং করাচ্ছেন। বল একটু পুরানো হলে রিভার্স স্যুইংয়ে বিপক্ষ দলের ব্যাটিংয়ে ধস নামাতে পারেন সামি। সেই সঙ্গে দুই বর্ষীয়ান স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজার যুগলবন্দি জমে গেলে প্রথম টেস্ট হয়তো পঞ্চম দিনে গড়াবে না। অনভিজ্ঞতাই বাংলাদেশের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। মুশফিকুর রহিম, ক্যাপ্টেন মমিনুল হক, মাহমুদুল্লাহ, লিটন দাস, মহম্মদ মিঠুনের মতো বেশ কিছু পরিচিত মুখের পাশাপাশি শাদমান ইসলাম, সায়িফ হাসানের মতো নবাগতদের দিকে নজর থাকবে। টি-২০ সিরিজে দারুণ খেলেছিলেন সায়িফ। যা তাঁকে টেস্টের মঞ্চে আত্মবিশ্বাস জোগাবে। বোলিংয়ে মেহেদি হাসান, তাইজুল ইসলামের সঙ্গে আববু জায়েদকে খেলানো হতে পারে। প্রথম একাদশে মুস্তাফিজুর রহমানের খেলা নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। টি-২০ সিরিজে একেবারেই ফর্মে ছিলেন না ঠিকই, তবে টেস্টে মুস্তাফিজুর কিন্তু ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। ম্যাচ শুরু সকাল ৯-৩০ মিনিটে।