উচ্চতর বিদ্যায় আগ্রহ বাড়বে। মনোমতো বিষয় নিয়ে পঠন-পাঠন হবে। ব্যবসা স্থান শুভ। পৈতৃক ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
নদীয়ার বাদকুল্লা, তাহেরপুর, বীরনগর স্টেশনের কাছে সব্জির বড় পাইকারি বাজার আছে। এর মধ্যে বাদকুল্লার বাজারটি সবচেয়ে বড় ও প্রতিদিন চালু থেকে। কৃষকরা এই পাইকারি বাজারগুলিতে সব্জি নিয়ে আসেন। বহু বছর ধরে কৃষকরা এই স্টেশনগুলি থেকে সব্জি নিয়ে দুপুর ১টা নাগাদ কৃষ্ণনগর থেকে ছাড়া লোকাল ট্রেনের ভেন্ডার কামরায় উঠতেন। ওই সব্জি শিয়ালদহের কোলে মার্কেট, দমদম, উল্টোডাঙার পাইকারি বাজারে বিক্রি করা হত। কিন্তু ১০ জুলাইয়ের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। রেল কর্তৃপক্ষ আচমকা কৃষ্ণনগর থেকে ছাড়া শিয়ালদহ অভিমুখী ওই লোকাল ট্রেনটির ওই তিনটি স্টেশনের স্টপেজ বন্ধ করে দেয়। প্রায় এক ঘন্টা পর আরও একটি লোকাল ট্রেন সেখানে ছিল। কিন্তু সেটি ইএমইউ নয়, মেমু লোকাল ট্রেন। এতে বড় ভেন্ডার কামরা না থাকায়, সব্জি নিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়।
এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর ওই তিনটি স্টেশনের বহু কৃষক সমস্যায় পড়েন। পরবর্তী যে ইএমইউ ট্রেনটি তাঁরা শেষ বিকেলে পেতেন, সেটি ধরলে শহরে পৌঁছতে রাত হয়ে যেত। এতে বিক্রিবাটায় সমস্যা হতো। তাই কৃষকরা তাঁদের সব্জি অনেক কম দামে ফড়েদের কাছে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছিলেন। রাজ্য সরকারের খাদ্য সামগ্রীর টাস্ক ফোর্সের সদস্য ও ভেন্ডার সংগঠনের নেতা কমল দে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারকে চিঠি দেওয়া হয়। নদীয়ার জেলাশাসক ও কৃষি দপ্তরের এক পদস্থ আধিকারিককেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল। কিন্ত কিছুই হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে লোকাল ট্রেনের এই সমস্যাটি তোলেন কমলবাবু। নদীয়ার সব্জিচাষিদের এতে কীভাবে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে, তা তিনি ব্যাখ্যা করেন। মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে নির্দেশ দেন, বিষয়টি নিয়ে রেল মন্ত্রকর সঙ্গে কথা বলতে। নদীয়ার ওই এলাকার কৃষকদের সব্জি শহরে নিয়ে আসার জন্য সরকারি উদ্যোগে গাড়ির ব্যবস্থা করার নির্দেশও দেন তিনি। সেইমতো শুক্রবার নদীয়ার জেলাশাসক গাড়ির ব্যবস্থা করেন। তাতে সব্জিও আনা হয়।
তবে যে ইএমইউ লোকালটির তিনটি স্টেশনে স্টপেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, শনিবার সেটি ফের সেখানে দাঁড়াতে শুরু করেছে। মেমু লোকালটিতেও বেশি পরিমাণে সব্জি ওঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তীও জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের তরফে অনুরোধ আসার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কমলবাবু জানিয়েছেন, ট্রেনের সমস্যা মিটে যাওয়ায় সব্জি নিয়ে আসার জন্য সরকারি গাড়ির আর দরকার পড়বে না বলে মনে হয়। দুপুরের ওই ট্রেনটি করে সব্জি নিয়ে আসতে পারলে কৃষকরা শহরের পাইকারি বাজারে বিক্রিবাটা করে রাতেই বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন। যেটা জুলাই মাসের ১০ তারিখের পর সম্ভব হচ্ছিল না। শহরে নিজেরা সব্জি নিয়ে আসতে পারলে কৃষকরা গ্রামের বাজারের তুলনায় বেশি দাম পান। তাই কৃষকরা পালা করে অন্যদের সব্জিও ট্রেনে করে নিয়ে এসে শহরের পাইকারি বাজারে বিক্রি করে যান।