উচ্চতর বিদ্যায় আগ্রহ বাড়বে। মনোমতো বিষয় নিয়ে পঠন-পাঠন হবে। ব্যবসা স্থান শুভ। পৈতৃক ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
উত্তর ২৪ পরগনার সহকারি উদ্যানপালন অধিকর্তা ড. শুভদীপ নাথ জানিয়েছেন, জমিতে যদি পেঁয়াজের বয়স ৫০ দিন হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে সার দেওয়া বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে নাইট্রোজেন ঘটিত সার দেওয়া যাবে না। দিলে পেঁয়াজ দু’ভাগ হয়ে যেতে পারে। সেই পেঁয়াজের বাজারে দাম মিলবে না। যেসব কৃষক একটু দেরিতে পেঁয়াজ লাগিয়েছেন এবং এখনও দ্বিতীয় চাপান সার দেওয়া হয়নি, তাঁদের সুপারিশ মাত্রায় চাপান দেওয়ার কাজ সেরে ফেলতে হবে। চাপান দেওয়ার ৫-৭ দিন পর জমিতে অনুখাদ্য প্রয়োগ করা যেতে পারে। মাটিতে প্রয়োগের বদলে এখন জলে গোলা জৈব অনুখাদ্য চলে এসেছে বাজারে। সেগুলির কার্যকারিতাও ভালো। পেঁয়াজের জমিতে এমনিতেই কপারের চাহিদা থাকে। জিঙ্ক প্রয়োগেও পেঁয়াজের গুণমান ভালো হয়। অনুখাদ্য দেওয়ার আগে নিড়ান দিয়ে জমি থেকে আগাছা পরিস্কার করে নিতে পারলে ভালো। নিড়ান দেওয়ার সময় গাছের গোড়ায় মাটি ধরিয়ে দিতে হবে।
অনুখাদ্য দেওয়ার পাশাপাশি পেঁয়াজের ভালো ফলন পেতে ভিটামিন ও বৃদ্ধিকারক (হরমোন নয়) প্রয়োগ করা যেতে পারে। পেঁয়াজ তোলার ৫-৭ দিন আগে ১০ শতাংশ নুন জল গাছে স্প্রে করলে গাছ দ্রুত শুকিয়ে আসে এবং পেঁয়াজের ‘নেক’ অর্থাৎ গলার গঠন ভালো হয়।
উদ্যানপালন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেঁয়াজের চারা রোয়ার ৬ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় চাপান দেওয়া দরকার। বিঘা প্রতি ১২ কেজি ইউরিয়া, ৮ কেজি মিউরিয়েট অফ পটাশ এবং ১ কেজি সমুদ্র শৈবাল নির্যাস প্রয়োগ করতে হবে। অনুখাদ্য হিসেবে জিঙ্ক ও বোরন কন্দের আকার বৃদ্ধি করে। মূল সার দেওয়ার সময় জিঙ্ক ও বোরনযুক্ত সিঙ্গল সুপার ফসফেট দেওয়া উচিত। মাটিতে অভাব থাকলে প্রথম ও দ্বিতীয় চাপানের সঙ্গে জলে গোলা অনুখাদ্য ২ মিলি/গ্রাম প্রতি লিটার জলের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে।
আমাদের রাজ্যে মূলত শীতকালে পেঁয়াজের চাষ হয়। কিন্তু, সেই পেঁয়াজ তিন-চার মাসের বেশি সংরক্ষণ করে রাখা যায় না। ফলে সারা বছরের চাহিদা মেটাতে ভিন রাজ্য থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। মহারাষ্ট্র দেশের মোট ফলনের অর্ধেক পেঁয়াজ উৎপাদন করে। কিন্তু, গতবারের চেয়ে এবার সেখানে ১৫ শতাংশ উৎপাদন কম হয়েছে। এর পর পেঁয়াজ উৎপাদক রাজ্য হিসেবে রয়েছে কর্ণাটক, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ। কিন্তু, দক্ষিণ ভারতে বন্যার কারণে এবার মারাত্মকভাবে মার খেয়েছে পেঁয়াজের ফলন। স্বাভাবিকভাবেই জোগানে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। নাসিকের লাসালগাঁও পাইকারি বাজার পেঁয়াজের নিয়ন্ত্রক। সেখানেও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সূত্রের খবর, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে লাসালগাঁওয়ের বাজারে পেঁয়াজের কুইন্টাল ৪,৩০০ টাকা হয়েছিল। সেই পেঁয়াজ কলকাতার বাজারে আসার পর পরিবহণ খরচ যোগ করে দাঁড়িয়েছিল ৭০ টাকা। এবার দামের নিরিখে সেই রেকর্ডও ছাপিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। পুজোর সময় কলকাতা শহরে ট্রাক ঢুকবে না। ফলে আগেভাগেই অনেক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ মজুত করে রাখতে চাইছেন। যাঁরা এখন পেঁয়াজ মজুত করছেন, তাঁদের আবার একটা ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে। এখন যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে তা মূলত গোডাউনের। বেশিদিন ভালো থাকছে না। পচে যাচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ীরা দাম পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ফাটকাবাজিরও অভিযোগ উঠেছে।
মজুত পেঁয়াজের উপর নজরদারি চালানোর দাবিও তুলছেন সাধারণ মানুষ। দিল্লিতে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দ্রীয় সরকার কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। এনসিসিএফ ও নাফেডকে দিয়ে বাজারে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করানো হচ্ছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, তাদের কাছে ৫৬ হাজার টন পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। তা থেকে ১৬ হাজার টন বন্টন করা হয়েছে। এ রাজ্যেও রাজ্য সরকার নিয়ন্ত্রিত ‘সুফল বাংলা’-র স্টলে কমদামে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়েছে। নাফেড সুফল বাংলাকে ২৫ টন পেঁয়াজ দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।