গোপাল মিস্ত্রি, বর্ধমান, বিএনএ: আজ বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আপ ও ডাউন দার্জিলিং মেল ঘুরপথে চলাচল করবে। এর ফলে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়বেন বর্ধমান ও বীরভূমের যাত্রীরা। কারণ আপ ও ডাউন দার্জিলিং মেলের স্টপেজ রয়েছে বর্ধমান ও বোলপুর স্টেশন। যেখান থেকে বহু যাত্রী এই ট্রেনে যাতায়াত করেন। তাঁদের ব্যান্ডেল, কাটোয়া বা আজিমগঞ্জে গিয়ে ট্রেন ধরতে হবে। শুধু এই একটি ট্রেন নয়, হাওড়া বর্ধমান মেন লাইনে শক্তিগড় ও পাণ্ডুয়ার মধ্যে ট্রাফিক ও পাওয়ার ব্লক নেওয়ার জন্য দার্জিলিং মেল সহ আরও অনেক ট্রেন যেমন ঘুরপথে চলাচল করবে, তেমনই বহু ট্রেন বাতিল করা হচ্ছে বলে পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। বাতিল করা হচ্ছে হাওড়া বর্ধমান মেন লাইনের অসংখ্য লোকাল ট্রেন। টানা কুড়িদিন ধরে এই অবস্থায় যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়বেন।
আজ বৃহস্পতিবার থেকে হাওড়া বর্ধমান মেন লাইনে দেবীপুর ও রসুলপুরের মধ্যে থার্ড লাইন কমিশনিংয়ের জন্য পাণ্ডুয়া ও শক্তিগড়ের মধ্যে ট্রাফিক ও পাওয়ার ব্লক নেওয়া হবে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই কাজ চলবে। এজন্য রেলের তরফে আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে।
এই ২০ দিন ধরে ঘুরপথে যাওয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন দার্জিলিং মেল। ট্রেনটি বর্ধমান, বোলপুর, মালদহ হয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার থেকেই ট্রেনটি বর্ধমান, বোলপুরের বদলে নৈহাটি, ব্যান্ডেল, কাটোয়া, আজিমগঞ্জ, নিউ ফরাক্কা হয়ে যাতায়াত করবে। তার ফলে বর্ধমান ও বোলপুর স্টেশন থেকে ওঠা যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়বেন। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূমের বহু যাত্রী এই দু’টি স্টেশন থেকেই দার্জিলিং মেলে ভ্রমণ করেন। তাঁদের এবার ব্যান্ডেল, কাটোয়া বা আজিমগঞ্জ স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরতে হবে। বা সেখানে নেমে তাঁদের গন্তব্যে যেতে হবে। কারণ ওই তিনটি স্টেশনেই ট্রেনটি থামবে। যাত্রীদের অভিযোগ, টানা ২০ দিন ধরে যেখানে ট্রেনটি ঘুরপথে চলবে তাহলে এই সময়ের জন্য বর্ধমান ও বোলপুরের যাত্রীদের টিকিট দেওয়া হল কেন? চার মাস আগে যাত্রীরা টিকিট কেটেছেন। ট্রেনটি বর্ধমানে স্টপেজ রাত পৌনে বারোটায়। তেমনি বোলপুরের সময় রাত পৌনে একটা নাগাদ। মধ্যরাতে যে ট্রেন ধরতে হয় সেই ট্রেন ব্যান্ডেল, কাটোয়া বা আজিমগঞ্জ গিয়ে কি ধরা আদৌ সম্ভব? তেমনই ডাউন ট্রেনও গভীর রাতে আসবে। তখন যাত্রীরা কীভাবে গন্তব্যে যাবেন? মঙ্গলবার রাতে দার্জিলিং মেলের এক মহিলা যাত্রী বললেন, চারদিন পরেই এই ট্রেনে শিলিগুড়ি ফিরব। রেল এসএমএস দিয়ে জানিয়েছে ঠিকই, কিন্তু দুর্ভোগ তো হবেই।
অবশ্য শুধু দার্জিলিং মেল নয়, এই সময়ের মধ্যে আপ ও ডাউন আপার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস, আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস, ভাগলপুর কবিগুরু এক্সপ্রেস, গয়া এক্সপ্রেস ভায়া আহমদপুর, কাটোয়া, ব্যান্ডেল হয়ে যাতায়াত করবে। তেমনই মেন লাইন দিয়ে চলাচলকারী বেশ কিছু ট্রেন কামারকুণ্ডু হয়ে যাতায়াত করবে। সেই ট্রেনগুলি অবশ্য ব্যান্ডেলের পরিবর্তে কামারকুণ্ডুতে স্টপেজ দেবে। সেখানেও যাত্রীদের একই সমস্যায় পড়তে হবে।
এই সময়ের মধ্যেই বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেন বাতিলও করা হয়েছে। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আপ ও ডাউন কবিগুরু এক্সপ্রেস, হুল এক্সপ্রেস, হাওড়া সিউড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, মালদা টাউন ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, মিথিলা এক্সপ্রেস, মোকামা ফাস্ট প্যাসেঞ্জার, যশিডি প্যাসেঞ্জার, রাজগীর প্যাসেঞ্জার বাতিল করা হচ্ছে।
শুধু দূরপাল্লার ট্রেন নয়, এই সময়ে হাওড়া বর্ধমান মেন শাখায় অসংখ্য লোকাল ট্রেনও বাতিল করা হয়েছে। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়বেন এই শাখার হাজার হাজার নিত্যযাত্রীও।