কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কবিরাজপাড়ার বটতলা এলাকার বাড়ি থেকে দুই হাত বাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় বেসরকারি মোবাইল সংস্থার কর্মী চয়ন বণিকের (২৪)। তাঁর দুই হাত বাঁধা থাকায় পুলিসের সন্দেহ হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস চয়নের বান্ধবী তৃষা মণ্ডল ও দুই বন্ধু বিবেক সিং, কৌশিক পট্টনায়ককে আটক করে। প্রত্যেকের বাড়ি কবিরাজপাড়া এলাকায়। ওই রাতে তৃষাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় বিবেক ও কৌশিককে।
এদিন সকাল ১০টা নাগাদ তৃষাকে বাড়ির মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে তার বাড়ির লোকজন। দ্রুত তাকে নামিয়ে কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। দুপুরে তার মৃত্যু ঘটে। তৃষা হালিশহরের জেটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। ধৃতদের জেরা করে পুলিস পুলিস জানতে পেরেছে, তৃষার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল চয়নের। তবে তৃষাকে ভালোবাসত বিবেকও। সে বেকার ছিল। ফলে চয়নের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকলেও হীনম্মন্যতায় ভুগত বিবেক।
পুলিস জানিয়েছে, পথের কাঁটা সরাতে সে চয়নকে খুনের ছক কষে। পুলিস সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে চয়নের বাড়িতে কেউ ছিল না। তাঁর মা ও ভাই আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বিবেকই চয়নের বাড়িতে মদের আসর বসানোর জন্য প্রস্তাব দেয়। আসরে যোগ দেয় তাদের বন্ধু কৌশিক পট্টনায়ক। গভীর রাত পর্যন্ত মদের আসর চলে। চয়নকে প্রচুর পরিমাণে মদ খাইয়ে বেহুঁশ করা হয়। বেহুঁশের পর তাঁর দুই হাত পিছমোড়া করে বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। খুনের পর মই লাগিয়ে সিলিংয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পেশাদারি খুনি না হওয়ায় দুই হাত খুলতে ভুলে যায় তারা। এমনকী মই সরাতেও ভুলে যায়।
রবিবার সকালে ওই বাড়ি থেকেই উদ্ধার করা হয় মই, ওড়না, মদের বোতল ইত্যাদি। ফরেন্সিক টিম এসে ফিঙ্গার প্রিন্ট সংগ্রহ করে। পরে ধৃতদের হাতের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। পুলিসের এক কর্তা জানান, ফিঙ্গার প্রিন্টে ধৃত দুই বন্ধুরই নমুনা পাওয়া গিয়েছে।
চয়নের খুনের ঘটনার পর ভেঙে পড়েছিল তাঁর প্রেমিকা তৃষা। তাকে থানায় ডেকে আনা হলেও চুপচাপ ছিল। এই খুনের ঘটনায় তার কোনও যোগসূত্র না পাওয়ায় পুলিস রাতে ছেড়ে দেয়। পুলিস সূত্রের খবর, প্রেমিকের মৃত্যুর ঘটনা তৃষা মেনে নিতে পারেনি। তাই এদিন সকালে সে বাড়ির মধ্যেই গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ে। বারাকপুর পুলিস কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) অজয়কুমার ঠাকুর বলেন, যুবক খুনের ঘটনায় তারই দুই বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুবকের প্রেমিকাও আত্মঘাতী হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।