কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
শনিবার বিকালে তৃণমূল-বিজেপির গণ্ডগোলে এই ভাঙ্গিপাড়া গ্রামে ভেড়ির শান্ত জলও কেঁপে উঠেছিল বোমার শব্দে। সরকারিভাবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা তিনজন। প্রদীপ মণ্ডল ও সুকান্ত মণ্ডল নামে দু’জন বিজেপি কর্মী এবং কায়ুম মোল্লা নামে একজন তৃণমূল কর্মী। সরকারিভাবে নিখোঁজের একজন বিজেপি কর্মী। তাঁর নাম দেবদাস মণ্ডল। ঘটনার চারদিন পার হলেও তাঁর এখনও কোনও খোঁজ নেই। তিনি জীবিত না মৃত সেই তথ্যও পরিবারকে দিতে পারেনি পুলিস। তাই আতঙ্কের সঙ্গে ক্ষোভও বাড়ছে। গ্রামবাসীদের দাবি, ঘটনার পর অনেকে গ্রাম ছেড়ে আত্মীয়দের বাড়ি চলে গিয়েছেন। এখনও অনেকেই গ্রামে রয়েছেন। তাঁরা রাতের বেলা বাড়িতে থাকার ঝুঁকি নিতে পারছেন না। তাই সূর্যাস্তের আগেই গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। গ্রামবাসীর দাবি, ঘটনার পর গ্রামে বেশি পুলিস মোতায়েন থাকলেও এখন পুলিসের সংখ্যাও কমেছে। তাই যে কোনও হামলা হতে পারে, এই ভয়েই সকলে আতঙ্কে রয়েছেন।
এদিকে, এতবড় ঘটনার পর চারদিন কেটে গিয়েছে। মৃত প্রদীপ মণ্ডলের স্ত্রী পদ্মা মণ্ডল প্রদীপবাবু ও সুকান্ত মণ্ডলের খুনের ঘটনায় ন্যাজাট থানায় সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাজাহান, কাদের আলি মোল্লা সহ ২৫ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও এখনও পর্যন্ত পুলিস কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। অন্যদিকে, কায়ুম মোল্লার পরিবারের তরফে দায়ের করা খুনের অভিযোগেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। পুলিসের দাবি, ঘটনার তদন্ত চলছে। এলাকায় তল্লাশিও চালানো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত কেউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। গ্রামবাসীদের আক্ষেপ, গ্রেপ্তার তো দূরের কথা, পুলিস কাউকে আটক পর্যন্ত করেনি। এদিন বাদুড়িয়া ইছামতী নদী থেকে মাংস ভর্তি চারটি বস্তা উদ্ধার হওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ভাঙ্গিপাড়ার ঘটনায় কোনও লাশকে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও হইচই ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পুলিস জানিয়েছে, বস্তাগুলি উদ্ধার করে দেখা গিয়েছে, তাতে গোরুর মাংস রয়েছে।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার নিহত দুই বিজেপি কর্মীর তিনদিনের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়। এই উপলক্ষে ভাঙ্গিপাড়া গ্রামে যান বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তিনি মৃত বিজেপি কর্মী প্রদীপ মণ্ডল ও সুকান্ত মণ্ডল এবং নিখোঁজ দেবদাস মণ্ডলের বাড়িতেও যান। নিহত দুই দলীয় কর্মীর পরিবারের হাতে ৫০ হাজার টাকা করে তুলে দেওয়া হয়। তাঁদের সন্তানদের পড়াশুনোর ভার বিজেপি নেবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়।
মুকুলবাবু সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, পুরো ঘটনার রিপোর্ট পার্টির সদর দপ্তরে জমা দেব। আমাদের দলের সভাপতি অমিত শাহর কাছে আবেদন করব প্রকৃত তদন্ত হোক এবং যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। পুরো ঘটনাটি ঘটেছে শেখ শাজাহানের নেতৃত্বে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানিতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেও এফআইআর হওয়া উচিত। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিসমন্ত্রী। তিনি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হবে না। তাঁর নির্দেশ আছে যাতে কেউ গ্রেপ্তার না হয়।