কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
(মোরান্তে, বেইতয়া) (আশিস প্রধান)
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কলকাতা লিগে পিয়ারলেসের কাছে হারের ধাক্কা দ্রুত কাটিয়ে উঠল মোহন বাগান। বৃহস্পতিবার ডুরান্ড কাপের গ্রুপ-বি’র ম্যাচে তারা হারাল এটিকে’কে। দুই ম্যাচে ছয় পয়েন্ট সংগ্রহ করে সেমি-ফাইনাল কার্যত নিশ্চিত করল কিবু ভিকুনার দল। আগামী ১৭ আগস্ট গ্রুপের শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্ডিয়ান নেভি। এদিন মোহন বাগানের হয়ে গোল পেয়েছেন ফ্রান মোরান্তে এবং হোসেবা বেইতিয়া। এটিকে’র গোলদাতা আশিস প্রধান। মোহন বাগানের কাছে হারায় সেমি-ফাইনালে ওঠার কোনও সম্ভাবনা রইল না কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজিটির।
এদিন ম্যাচ শুরু হওয়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে থেকেই মাঠমুখো হতে দেখা যায় সবুজ-মেরুন সমর্থকদের। আই লিগ ও আইএসএলের দ্বন্দ্ব যে ক্রমশ চরমে উঠছে তা এদিন বেশ বোঝা গেল। ইডেন গার্ডেন্সের সামনে দাঁড়ানো একঝাঁক এটিকে সমর্থকদের দেখেই টিপ্পনি শুরু মোহন অনুরাগীদের। বুকে সাহস জুগিয়ে তারা গ্যালারিতে হাজির হলেও ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই তা ছেড়ে বেরিয়ে যান। ম্যাচের শেষেও সবুজ-মেরুন জনতার জয়োল্লাসে ছিল এটিকে’র জন্য বাছাই করা একাধিক বিশেষণ।
পিয়ারলেসের বিরুদ্ধে নামানো প্রথম একাদশে এদিন বেশ কিছু রদবদল করেছিলেন কোচ কিবু ভিকুনা। পাসিং ফুটবল খেলে গোল তুলে নেওয়া ছিল তাঁর লক্ষ্য। বিদেশিহীন এটিকে’তে প্রবীর দাস, কেভিন লোবো, কোমল থাটাল, সালামরঞ্জন সিংদের মতো পরিচিত ফুটবলাররা ছিলেন। রোদ ওঠার পর বৃষ্টিভেজা মাঠে বল নিয়ন্ত্রণ কিংবা পাস করতে দু’দলের ফুটবলাররাই অসুবিধায় পড়েছেন। ম্যাচের শুরুতেই গোলের সোনার সুযোগ হাতছাড়া করে বাগান। বাঁ দিক থেকে নাওরেমের তোলা মাপা সেন্টার ফাঁকায় পেয়েও গোল করতে পারেননি সুরাবুদ্দিন মল্লিক। স্প্যানিশ মিডিও হোসে বেইতিয়ার সৌজন্যে মাঝমাঠের দখল ছিল মোহন বাগানের কাছেই। ২৯ মিনিটে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে তিনি বিপক্ষের বেড়াজাল টপকে পরিকল্পিত আক্রমণ তৈরি করেন। বেইতিয়ার পাস থেকে বল পেয়ে নাওরেম তা সাজিয়ে দেন সুহেরকে। কিন্তু তিনি লক্ষ্যভেদে সফল হতে পারেননি। এদিন বোঝা গেল, বেইতিয়া ছন্দে থাকলে মোহন বাগান মাঝমাঠ সচল থাকে। দলের প্রথম গোলটির নেপথ্য কারিগর তিনিই। ৩৪ মিনিটে ডানদিক থেকে তাঁর ভাসানো ঠিকানা লেখা কর্নার ভেসে আসে এটিকে বক্সে। নিজেকে অরক্ষিত রেখে নেওয়া ফ্রান মোরান্তের হেড জালে জড়ায় (১-০)। এই পর্বে এটিকে’র বিক্ষিপ্ত আক্রমণ সামলাতে অসুবিধায় পড়েছে মোহন বাগান। আশুতোষ মেহতার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল সুস্পষ্ট। ম্যাচের ১৬ মিনিটে তাঁর ভুলে বল পেয়ে নেওয়া গোপী সিংয়ের শট তৎপরতার সঙ্গে রুখে দেন গোলরক্ষক শঙ্কর রায়। বিরতির আগে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল ভিকুনা-ব্রিগেড। কিন্তু গুরজিন্দরের সেন্টার থেকে নেওয়া রোমারিও জেসুরাজের দুর্বল হেড পোস্টে প্রতিহত হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় মোহন বাগান। সুরাবুদ্দিনের পাস ধরে তা বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পিছনে ঠেলে দেন সুহের। বক্সের মধ্যে থেকে নেওয়া হোসেবা বেইতিয়ার কোনাকুনি শট জাল কাঁপায় (২-০)। এরপর ফিটনেসের অভাবে ক্রমশ খেলা থেকে হারিয়ে যায় মোহন বাগান। কোমল থাটালের দু’টি শট বাঁচাতে হয় শঙ্কর রায়কে। ৭৭ মিনিটে অবশ্য এটিকে ব্যবধান কমায়। মালসোয়ামজোয়ালার থ্রু ক্লিয়ার করতে পারেনি সবুজ-মেরুন রক্ষণ। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শঙ্কর রায়কে হার মানান আশিস প্রধান (২-১)। শেষদিকে এটিকে বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেও তা কাজে লাগাতে পারেনি।
মোহন বাগান: শঙ্কর রায়, আশুতোষ, ফ্রান মোরান্তে, ফ্রান গঞ্জালেজ মুনোজ, গুরজিন্দর, সুরাবুদ্দিন, বেইতিয়া (চামোরো সিলভা), সাহিল (ধনচন্দ্র), নাওরেম, সুহের (ইমরান) ও রোমারিও।