বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
অন্যান্য জায়গার মতো এদিন সকালেই জামালপুরের তৃণমূলকর্মীরাও বাসে করে কলকাতার উদ্দেশে বের হয়েছিলেন। অভিযোগ, হুগলি-বর্ধমান সীমান্ত খানপুর এলাকা বিজেপির প্রায় ৪০-৪৫ জন লোক বাস ঘিরে ধরে। তারা প্রথমে দূর থেকে ইঁট ও পাথর ছুঁড়ে বাসের কাচ ভাঙচুর করে। তারপর বাস থামিয়ে তৃণমূলকর্মীদের মারধর করে পালিয়ে যায়। এই খবর জামালপুরে এসে পৌঁছাতেই মাধবপুর এলাকায় তৃণমূলকর্মীরা রাস্তার অবরোধ করে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের দাবি, হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে অবরোধ চলবে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিস গিয়ে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়। এদিকে, এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে শক্তিগড়ের বড়শুলে কয়েকজন বিজেপিকর্মী তৃণমূলকর্মীদের বাস আটকে বিক্ষোভ দেখায়। তৃণমূলকর্মীদের উদ্দেশ করে গালাগাল দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পরে পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বাঁকুড়ার ওন্দার সভা থেকে তৃণমূলকর্মীদের বাস আটকানোর নিদান দিয়েছেন। সেই উস্কানিতেই বিজেপির লোকজন এই হামলা করেছে।
এদিকে, ২১ জুলাই উপলক্ষে এদিন বর্ধমান শহর ছিল কার্যত শুনশান। শহরের বহু দোকানপাটও বন্ধ ছিল। বিভিন্ন রুট থেকে বহু বাস তুলে নেওয়ায় বর্ধমানের আলিশা ও নবাবহাট বাসস্ট্যান্ডও ছিল কার্যত ফাঁকা। এদিন সকালে বর্ধমানের আলিশা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেল, বেশ কয়েকজন যাত্রী দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাসে কলকাতায় যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে রয়েছেন। টিকিট কাউন্টার থেকে তখনও টিকিট মেলেনি। বলা হয়েছে, বাস ঢুকলে টিকিট দেওয়া হবে। কাউন্টারে গিয়ে বিকালের বাসের অগ্রিম টিকিট বুকিং চাইলে বলা হয়, আজ বাসের ঘাটতি আছে। কোনও অগ্রিম টিকিট বুকিং দেওয়া যাবে না। সোমবার থেকে আবার অগ্রিম টিকিট মিলবে। ফলে, অনেকেই হয়রানের শিকার হন। অন্যদিকে, এদিন বর্ধমান শহরে জেলা কংগ্রেসের অফিসের সামনে ২১ শে জুলাই উপলক্ষে শহিদ স্মরণের একটি সভার আলোচনা করা হয়েছিল। সেখানে পূর্ব বর্ধমান জেলার কংগ্রেস সভাপতি আভাস ভট্টাচার্য, কার্যকরী সভাপতি কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায় সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
২১ জুলাই উপলক্ষে হাজার হাজার তৃণমূলকর্মী বাসে, ম্যাটাডোরে, গাড়িতে করে জাতীয় সড়ক হয়ে কলকাতায় গিয়েছেন। তাই জাতীয় সড়কের ধারে জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে ক্যাম্প করা হয়েছিল। যাতে কর্মীদের কোনও অসুবিধা না হয়। এক একজন জেলা নেতা এক একটি ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন। এদিন বিকালের দিকে শক্তিগড়ে তৃণমূলকর্মীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ভিন জেলার তৃণমূলকর্মীরা বাড়ি ফেরার সময় এখানে দাঁড়িয়ে টিফিন সেরেছেন, আবার বাড়ির সদস্যদের জন্য শক্তিগড়ের বিখ্যাত ল্যাংচাও প্যাকেটবন্দি করে নিয়ে গিয়েছেন। সঙ্গে বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানাও।
হামলার ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলার সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, এদিন খানপুরে বিজেপির লোকজন পরিকল্পিতভাবেই জামালপুরের কর্মীদের উপর হামলা করেছে। আগে থেকে প্রস্তুত হয়ে তারা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েছিল। আমরা পুলিসকে বলেছি, যেন অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বলেন, এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর জন্যই বিজেপি এই হামলা করেছে। এদিকে, বাস তুলে নেওয়ার ব্যাপারে উত্তমবাবু বলেন, অনান্য বছর দু’দিন আগে থেকে বাস নেওয়া হয়। এবার আগেরদিন আমরা বাস ভাড়া নিয়েছি। ২১ জুলাই রবিবার পড়েছিল। ফলে, নিত্যযাত্রী, চাকুরিজীবী, ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধায় পড়তে হয়নি। সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য বিভিন্ন রুটে কিছু করে বাস রাখাও হয়েছে। ফলে, খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
হামলার ব্যাপারে বর্ধমানের বিজেপির জেলা সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, অন্য রাজনৈতিক দলের কর্মীদের উপর হামলা কিংম্বা তাদের বাস আটকানোর রাজনীতি বিজেপি করে না। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখুন, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জন্যই ওই হামলা ও বাস আটকানোর ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে আমাদের বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। অযথা আমাদের নাম জড়ানো হচ্ছে।