বিদ্যার্থীদের পঠনপাঠনে আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের কর্মপ্রাপ্তির যোগ। বিশেষত সরকারি বা আধা সরকারি ক্ষেত্রে যোগ প্রবল। ... বিশদ
প্রথম এপিসোড দেখতে দেখতে সেই আশা চতুর্গুণ হয়, যখন তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসতে চলা দেবকীনন্দন সিং (তিগমাংশু ধুলিয়া) তাঁর ছেলে সমরপ্রতাপ (সইফ আলি খান) সম্পর্কে বলে ওঠে, ‘একে দেখ, স্বৈরাচারী শাসকের ছাপ চেহারায় স্পষ্ট। ওকে দেখলে আমার সঞ্জয়ের কথা মনে পড়ে যায়।’ পরক্ষণেই পাশে বসা দেবকীনন্দনের বন্ধু ও দলের দ্বিতীয় মুখ গোপাল দাশমুন্সি (কুমুদ মিশ্র) বলে, ‘রক্ষে এটাই যে তুমি ইন্দিরা নও’। রাজধানী দিল্লির সীমান্তে কৃষক বিক্ষোভ চলছে। কৃষিজমিতে জোর করে কেমিক্যাল হাব তৈরির প্রতিবাদে সরব চাষিরা। সেখানে সমরপ্রতাপের ডানহাত গুরপাল চৌহানের (সুনীল গ্রোভার) নির্দেশে ঠুঁটো জগন্নাথ পুলিস আখের খেতে ঢুকে গুলি করে মেরে ফেলে কৃষক আন্দোলনের এক নেতাকে। বিবেকানন্দ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি যার সংক্ষিপ্ত নাম ‘ভিএনইউ’ (জেএনইউ-র সঙ্গে মিল পাচ্ছেন?), সেখান থেকে জোর করে আন্দোলনরত ছাত্রকে ধরে জেলে পোরে পুলিস। এইসব টুকরো টুকরো ঘটনা ও সংলাপ দর্শককে মনে করিয়ে দেয় সাম্প্রতিক ও অতীতে ঘটে যাওয়া কিছু রাজনৈতিক ঘটনাবলির কথা। যেমন জেএনইউ-র ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রনেতা উমর খালিদ, কানহাইয়া কুমারের গ্রেপ্তারি, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলন, দিল্লিতে সাম্প্রতিক কৃষক আন্দোলন, ইন্দিরা গান্ধী-সঞ্জয় গান্ধী সম্পর্ক ইত্যাদি। দর্শকমনে কৌতূহল চলকে ওঠে।
কিন্তু রাজনীতির মনোযোগী নিরীক্ষকদের এই সিরিজ শেষ পর্যন্ত হতাশই করবে। কারণ, গৌরব সোলাঙ্কির চিত্রনাট্যে গভীরতার বড়ই অভাব। আর তার ছাপ পড়েছে চরিত্রগুলোতেও। ভারতের মতো বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র যেখানে কাহিনির প্রেক্ষাপট, সেখানে বিরোধীশক্তির কোনও চিত্র থাকবে না! রাজধানী দিল্লির হাই সিকিউরিটি জোনে একজন একটা ব্যাগ ডাস্টবিনে ফেলে দিল, অথচ তা নিয়ে পুলিস-প্রশাসনের মধ্যে কোনও হেলদোল নেই! ব্যাগে তো বোমাও থাকতে পারত। তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসতে চলা সুস্থসবল দেবকীনন্দন হঠাৎ রাতে বাড়িতে মারা যাচ্ছে অথচ তা নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ থাকছে না! চিত্রনাট্যে এই ধরনের ছেলেমানুষি আজকের দিনে অন্তত চলে না।
সইফ আলি খান অভিনীত সমরপ্রতাপ সিংয়ের চেহারা ছবিতে যতটা মানানসই, অভিনয়ের দিক থেকে ততটা একেবারেই নয়। বড় একবগ্গা হয়ে পড়েছে চরিত্রটি। তার খানিকটা দোষ অবশ্যই বর্তায় চিত্রনাট্যকার ও পরিচালকের ওপর। বরং তিগমাংশু ধুলিয়ার অভিনয় ভালো লাগে। অন্যরকম কাঠখোট্টা চরিত্রে সুনীল গ্রোভারকে বেশ লাগে। ভালো অভিনয় করেছেন ভিএনইউ-র ছাত্রনেতা শিবা শেখরের চরিত্রে মহম্মদ জিশান আইয়ুব। তবে, দেবকীনন্দনের রক্ষিতা ও দলের অন্যতম মুখ অনুরাধা কিশোরের চরিত্রে ডিম্পল কাপাডিয়াও বিশেষ কোনও ছাপ রাখতে ব্যর্থ।
শেষে কোলাকাওস্কির ঢঙে বলা যায়, ট্রেলারের ফাঁদে পড়ে মূল ছবি দেখতে গিয়ে হতাশ হলে দয়া করে কাঁদুনি গাইবেন না যে, আপনাকে ঠকানো হল।