মাতৃকুল থেকে সম্পত্তি প্রাপ্তির যোগ। ডাক্তার, আইনজীবী, প্রমুখের পেশার প্রসার, সুনাম ও উপার্জন বৃদ্ধির সম্ভাবনা। ... বিশদ
অনীকের সারাদিন অফিসে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ। বহুজাতিক সংস্থার সোশ্যাল এসইও সামলাতে হয় তাকে। পুরো কাজটাই ল্যাপটপ নির্ভর। অফিস থেকে ফেরার পথটুকু তাই ‘রিল্যাক্স’ চায় মন। আর ইদানীং মনের আরাম মানেই চোখের উপর চাপ! অর্থাৎ আঙুল ও চোখ দ্রুত গতিতে সরছে এক থেকে অন্য কনটেন্টে। সৌজন্যে রিলস।
চটকদার ও আকর্ষণীয় ছোট কন্টেন্ট, সঙ্গে উপযুক্ত ইমোজি ও গান-বাজনা জুড়ে এমন এক ‘প্যাকেজ’ তৈরি করা হয়, যা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখতে পারে ব্যবহারকারীকে। সেগুলো আবার নানা রান্না, খাবার, কনে সাজানো, বেড়ানো বা নিছকই মজার স্ট্যান্ড আপ কমেডিতে ঠাসা। কেউ আবার লাইফ হ্যাকস, স্বাস্থ্যকর টিপস, ডায়েট এসবে মজে। একটা রিলের পিছনে সময় খরচ হয়তো এক মিনিটেরও কম। কিন্তু এই নেশায় জড়ালে দেখা যায় কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে যাচ্ছে স্রেফ রিলস দেখে। এতে সাময়িকভাবে সুখী হরমোন ডোপামিন ক্ষরণ হয়ে মনের আরাম হলেও আসলে মন বা চোখ কোনওকিছুরই স্থায়ী আরামের ব্যবস্থা করতে পারে না এই রিলস। শুধু রিলই নয়,ওটিটি, মিউজিক ভিডিও, অনলাইন গেমস, অনলাইনে সিনেমা বা সিরিয়াল দেখা, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম স্ক্রল করে চলা সবকিছুই একসঙ্গে ক্ষতি করে চোখের।
প্রথমেই ধর যাক ছোটদের কথা। তাদেরও রুটিন ঠাসা অনলাইন কোচিং ক্লাস, স্কুল প্রোজেক্টের জন্য অলনাইনে নানা সার্চ ইঞ্জিন ঘাঁটাঘাঁটি করা এসব আছেই। তার উপর বেশিরভাগ পরিবারেই ছোট শিশুদের বেলায় তাদের বাবা-মায়েরা শান্তিতে খাইয়ে দিতে বা চুপ করে এক জায়গায় বসিয়ে রাখতে হাতে একটি মোবাইল ধরিয়ে দেন। এতেই ঘাপটি মেরে থাকে বিপদ। অস্ট্রেলিয়া-সহ নানা পাশ্চাত্যের দেশে ছোটদের হাতে মোবাইল দেওয়ার কোনও আইন নেই। যদিও ভারতে এমন কোনও আইন নেই। আর এখানেই রয়েছে মূল সমস্যা।
কী কী সমস্যা?
চোখের খুব কাছে একটি পরিবর্তনশীল স্লাইড (মুভিং স্লাইড) দেখলে মাইনাস পাওয়ার তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। আগে থেকে মাইনাস পাওয়ার থাকলে মায়োপিয়ার ঝুঁকি বরং বাড়ে।
অনেকটা সময় ধরে মোবাইল, কম্পিউটারের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ লাল হওয়া, চোখ জ্বালা করার মতো সমস্যা হতে পারে। এই জটিলতাকে ‘ড্রাই আইজ’-এর সমস্যা বলা হয়। আজকাল অধিকাংশ অফিসই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এমন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে দীর্ঘসময় কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করলে চোখে আরও দ্রুত প্রভাব পড়ে। দৃষ্টি ঝাপসা হয়।
সমাধান কোন পথে?
একটানা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার বদলে প্রতি ২০ মিনিট অন্তর স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে ২০ সেকেন্ডের জন্য দূরের বস্তু দেখুন।
এক ঘণ্টা অন্তর চোখে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন। চোখ ভিজে অবস্থাতেই কিছুক্ষণ রাখুন। বাইরের বাতাসে ভিজে ভাব টেনে নেবে।
কাজের বাইরে স্ক্রিনটাইম নিয়ন্ত্রণ করুন। রিলস দেখতে গিয়ে সময়জ্ঞান হারালে চলবে না। নির্দিষ্ট কতক্ষণ সময় বরাদ্দ করবেন, তা বলে দেওয়া যায় না। তবে নানা গবেষণায় দেখা গিয়েছে মুভিং স্লাইড একটানা ২০ মিনিট দেখার পরেই চোখের ও মস্তিষ্কের ক্লান্তি আসে।