উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
দেখা গিয়েছে, অন্তত ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের বেশি টাইপ ওয়ান বা টাইপ টু ডায়াবেটিক রোগী কিডনির অসুখে ভোগেন। ডায়াবেটিসে কিডনি বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি ছাড়াও কিডনির সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি কী?
যাঁরা দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাঁদের কিছু সংখ্যক মানুষের ইউরিন বা মূত্রের সঙ্গে প্রোটিন বা অ্যালবুমিন বেরিয়ে যেতে থাকে। প্রথমে অল্প হলেও উত্তরোত্তর তা বাড়তে থাকে। ডায়াবেটিসের প্রভাবে কিডনির এই সমস্যাকেই প্রাথমিকভাবে বলে ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি।
সমস্যার শুরুতে এই অ্যালবুমিন বা প্রোটিন নিঃসরণ খুব কম মাত্রায় থাকে। একে বলে ‘মাইক্রোঅ্যালবুমিনিউরিক’ স্টেজ, কিন্তু পরে এর মাত্রা বহুলাংশে বেড়ে যায়। তখন বলা হয় ‘ম্যাক্রো অ্যালবুমিনিউরি স্টেজ। এর পরেই শুরু হয় বিবিধ সমস্যা। রক্তচাপ বেড়ে যায়, হার্টের সমস্যা দেখা দেয়, ক্রিয়েটিনিন বাড়তে থাকে এবং ধীরে ধীরে কিডনি অকেজো হয়ে পড়ে যায় ফলশ্রুতি আজীবন ডায়ালিসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপন।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে টাইপ ওয়ান বা ইনসুলিন ডিপেন্ড্যান্ট ডায়াবেটিসের ৩৩ শতাংশ রোগী, রোগ নির্ধারণের প্রায় ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে মাইক্রোঅ্যালবুমিনিউরিক অর্থাৎ কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। অপরদিকে টাইপ টু ডায়াবেটিসের প্রতি দশ বছরে প্রায় ২৫ শতাংশ এই রোগের শিকার।
তবে যাঁরা প্রাথমিকভাবে রোগ নির্ধারণ করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো জীবনযাপন করবেন তাঁদের অনেকেই দীর্ঘদিন ভালো থাকবেন।
রোগ বুঝবেন কী করে?
দেখা গিয়েছে, ৭ থেকে ১০ শতাংশ রোগীদের ডায়াবেটিস ধরা পড়ার সঙ্গেই কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। ইনসুলিন ডিপেন্ড্যান্ট বা টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের ৫ বছর পর থেকে এই স্ক্রিনিং টেস্ট করতে হবে।
তবে যাঁরা অনিয়মিত চিকিৎসাধীন। উচ্চ রক্তচাপের শিকার বা ব্লাড সুগার অনিয়ন্ত্রিত তাঁদের কিডনির সমস্যা অনেক আগেই আসতে পারে।
‘স্পট ইউরিন টেস্ট’ অর্থাৎ দেখতে হবে মূত্রের সঙ্গে অ্যালবুমিন বা প্রোটিন যাচ্ছে কি না। ভোরের প্রথম ইউরিন বা দিনের যে কোনও সময়ের ইউরিন টেস্ট করানো যেতে পারে।
তবে দেখতে হবে যেন মূত্রের কোনও সংক্রমণ, জ্বর, উচ্চ রক্তচাপ, অনিয়ন্ত্রিত সুগার না থাকে। মূত্রের মধ্যে রক্ত থাকলে, ব্যায়াম বা শরীরচর্চার পর এই টেস্ট করা যাবে না।
‘ডিপস্টিক টেস্ট’ এবং ২৪ ঘণ্টার ইউরিনেও প্রোটিন দেখা যেতে পারে তবে প্রাথমিকভাবে এগুলো করা হয় না।
সারাদিনে ইউরিনে অ্যালবুমিনের পরিমাণ ৩০ থেকে ২৯৯ মিলিগ্রাম থাকলে মাইক্রো আর ৩০০ বা ততোধিক হলে ম্যাক্রো অ্যালবুমিনিউরিয়া স্টেজ হিসাবে গণ্য হবে।
কীভাবে প্রতিরোধ ও প্রতিকার করবেন?
ডায়াবেটিসে কিডনি সমস্যা প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি হল সম্পূর্ণ ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন।
দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র নিয়মমতো চিকিৎসায় ব্লাড সুগার ঠিক রাখলে কিডনি রোগের সমস্যা কমে যায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ।