Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

দুই প্রজাপতি
সর্বাণী বন্দ্যোপাধ্যায়

ছাদের আলসের ধারে দাঁড়িয়েছিল মেয়েটি। আমি সিঁড়িতে উঠতে উঠতেই মনে হল দেখলাম। তারপরে আর দেখতে পেলাম না। আসলে আমার হাতে মোবাইল ছিল। মোবাইলে আসা পাক খাওয়া ছোট খরগোশের মতো ইমোজিটার নাম দিয়েছি বিচ্চু। সময় পেলেই ওই ঘুরন্ত ইমোজিটাকে দেখি আমি। ওটাই দেখছিলাম, আবছা মনে হল একটি মেয়ে যেন সরে গেল আলসের ধার থেকে।
ওই দেখাটার কথা বিমলকে বলিনি। ঘটনাটা নিয়ে সন্দেহ ছিল। তাছাড়াও এটা বললে ও হয়তো এ বাড়িতে থাকবে না। 
বিমল বলছিল সেদিন, ‘আপনি কিছু দেখেছেন স্যার?’
আমি হাসলাম, ‘কী দেখব?’  
‘না, সবাই বলে তো। আপনি কিছু দেখেননি?’
আমি হাসি, ‘আমি? আমি কী করে দেখব?’
‘কেন, আপনি তো এ বাড়ির ছাদে ঘুরে বেড়ান। ঠিক করে বলুন, সত্যি আপনি...। ’
আমি হেসেই উড়িয়ে দিই ওর কথা। আসলে তিন সপ্তাহ হল এই বাড়িটাতে আমরা এসেছি। বাড়ির বর্তমান মালিক বিদেশে থাকেন। উনি ই-মেলে যোগাযোগ করেছিলেন আমাদের মালিকের সঙ্গে। দোতলা বিশাল বাড়ি, জমি, সব মিলিয়ে প্রায় পনেরো কাঠার মতো জায়গা। একেবারেই মেন রোডের ওপরে। হাঁটা দূরত্বে মুর্শিদাবাদ শহর। খুব কম দামেই উনি সবটা ছেড়ে দিলেন। এদিকে সেরকম বড় শপিং মল নেই। বড়সড় একটা শপিং মল তৈরির  জন্য পুরো জমিটাই আমাদের কোম্পানি কিনেছে। প্রজেক্টের প্ল্যান অনুযায়ী বাড়িটা না ভেঙে উপায় নেই। অথচ বাড়িটায় ভাঙার জন্য হাত দিলেই একটা না একটা অঘটন ঘটছে।
এর আগে রোড অ্যাক্সিডেন্ট হল। লরিটা বিদঘুটে ভাবে উল্টে গিয়ে চারজন লেবার এখন হাসপাতালে। কথাটা ভালোই রটেছে। ফলে স্থানীয় মজুরেরা কাজ করতে চাইছে না। আমি সদ্য এই কোম্পানিতে জয়েন করেছি। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বছরখানেক বাড়িতেই বসেছিলাম। সাধারণ প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করলে যা হয়। এখন তো ঘরে ঘরেই আমার মতো ইঞ্জিনিয়ার। তাই এই প্রতিযোগিতার বাজারে পাওয়া চাকরিটা টিকিয়ে রাখার জন্য আমি অনেক কিছুই করতে পারি। এমনকী ভূত তাড়ানোর মতো ভয়ঙ্কর কাজেও কোনও অসুবিধে নেই।
হ্যাঁ, কথাটা সেরকমই দাঁড়িয়েছে। এখানে এসেই শুনেছি জমিটা কমদামে ছেড়ে দেওয়ার একটাই কারণ এই বাড়িটার বদনাম আছে। এই বাড়িতে নাকি সন্ধে হলেই একটি অশরীরী মেয়েকে দেখা যায়। তাই কেয়ারটেকার রাতে এ বাড়িতে থাকে না। 
আমার উপর এই প্রজেক্টের দায়িত্ব পড়েছে। কিন্তু সেভাবে কাজ এগচ্ছে না। চারপাশের পাঁচিল ভাঙার পর এখন মাটি সমান করা হচ্ছে। এরপর বাড়িতে হাত পড়বে। কিন্তু এ বাড়ির প্রধান দরজাটা খুলতে গিয়েই যা কাণ্ড হল!
....
আমি আর বিমল এ বাড়িতে থাকছি। ওপরের দিকের ঘরগুলো বন্ধই থাকে। বড় দালানের দু’পাশে সারি দেওয়া ঘর। ফাঁকা দালানের শেষ প্রান্তে সিঁড়ি। নীচেও অনেকগুলো ঘর তালা আটকানো। তারই মধ্যে একটা ঘর সাফ করে কেয়ারটেকার মানিক আমাদের জন্য খুঁজে পেতে দুটো ছোট চৌকি পেতে দিয়েছে। বিমলের বাড়ি পাশের গাঁয়ে। চৌকিতে পাতার বিছানা ওরই কিনে আনা। দেওয়ালের একপাশে একটা নড়বড়ে টেবিল আর দুটো চেয়ার। আসবাব বলতে এই। দড়ি টাঙিয়ে বাড়িতে পরার জামা-প্যান্ট, গামছা রাখি আমরা। এছাড়া দু’জনের দুটো সুটকেস। মানিকের রান্নাঘরেই ও আমাদের জন্য দুটো চাল ডাল ফুটিয়ে দেয়। বেঁচে থাকার জন্য ওটুকুই যথেষ্ট। 
এখানে পুরোপুরি সাম্যের ব্যবস্থা চলছে। আমি ইঞ্জিনিয়ার সাব, আমার অধস্তন কর্মচারী বিমল আর কেয়ারটেকার একই খাবার খেয়ে একই রকম জীবন কাটাচ্ছি। এমনকী লোডশেডিং হলেও আমরা একদম একরকমের হাতপাখায় হাওয়া খাই। মানিক মাঝেমাঝে ওর খইনি দেয়। আমরা হাতে থাপ্পড় মেরে ফুঁ দিয়ে খইনি বানিয়ে দাঁতের সামনে নিই। এছাড়া বিমলের প্রেমিকার গল্প শুনতে শুনতে প্রায় প্রতিদিন রাতে আমি আর বিমল বিড়িতে সুখটান দিই। 
রাতে মানিক থাকে না। আর দিনে বিমল মাঝেসাঝে বাড়ি গেলেও সন্ধের আগেই ফিরে আসে।
ওকে আমি বলি, ‘একটা রাত আমি ঠিক একাই চালিয়ে দেব।’
বিমল বলে, ‘না স্যার। এ বাড়িতে আপনাকে একা রেখে আমি বাড়িতে শান্তি পাব না। আপনি বুঝছেন না, এ  বাড়িটা সত্যি খারাপ। নাহলে অত সস্তায় ছেড়ে দিত না!’
ওর এই কথাটা একেবারেই সত্যি। আমি নিজে দলিল দেখেছি। পাক্কা পনেরো কাঠা, অথচ পুরো ডিলিংসটাই হয়েছে পঁচিশ লাখে।  
তবে আমার চিন্তার বিষয় অন্য। তিন সপ্তাহ হল আমি এখানে জয়েন করেছি, কিন্তু আসল কাজটায় একটুও এগতে পারিনি। মানে আমি বাড়িটা ভাঙার কথা বলছি। সেদিন সদর দরজা খুলতে গিয়ে দরজার মাথার দিকের কাঠটাই পড়েছে হেড ছুতোরের কাঁধে। বেচারি হাসপাতালে। এর আগেও বালি ঢালার সময় লরি উল্টে চারজন মজুর আহত হয়েছে। এভাবে চললে, মানে বাড়িটা ভাঙা না গেলে আমার চাকরিটাই যেকোনওদিন নট হয়ে যাবে।
আমি তাই খানিকটা মরিয়া হয়েই আছি। ছাদে উঠছি বিকেল হলেই। শুনেছি, ওই চিলেকোঠার ঘরেই তার আস্তানা। মেয়েটাকে আমি ধরতে চাই। জানতে চাই কী করলে সে এখান থেকে যাবে। 
বিমল এ কথাটা জানে না। ও রাত বাড়লেই নিশ্চিন্তে ওর প্রেমিকার গল্প করে। ইলেভেনে পড়া সেই পরী নাকি স্কুলে যাওয়ার সময় আড়চোখে ওর দিকে তাকায়।
আমি আপত্তি করেছিলাম, ‘মোটে ইলেভেনে পড়ে। সে তো নেহাতই বাচ্চা। ওর সঙ্গে তোমার ম্যাচ করবে কী করে?’
জবাবে বিমল খুকখুক করে হাসল। ‘আপনি এও জানেন না। ইদিকে মেয়েছেলে সবাই এক কেলাসে দু’-বছর তিন বছর করে কাটায়। গাঁ-গঞ্জের ব্যাপার এরকমই। পরীর বয়স উনিশ-কুড়ি হবে।’
ও রাতে যখন একটানা পরীর গল্প করে, তখন আমি আমার ক্রাইসিস নিয়ে ভাবি। বাড়িটা কবে কীভাবে ভাঙা হবে, সেটাই একমাত্র চিন্তার কারণ হয়েছে আমার। আপাতত কিছুদিন আর কোনওকিছুই আমার মাথায় ঢুকবে না। 
এ বাড়ির ধনী মালিকের নাম ছিল বীরেন্দ্রনাথ মুখুজ্যে। তাঁর মেয়ে অনুরাধা। যত গল্প ওই অনুরাধাকে ঘিরেই। এই গল্প আগে শুনেছি আমার বাবার কাকা মানে ছোড়দাদুর মুখে। কমবয়সে এদিকে মামার বাড়িতে ঘুরতে আসতেন। মেয়েটা নাকি পরীর মতো সুন্দরী ছিল। আশপাশের অঞ্চলের ধনী পরিবার থেকে ওর বিয়ের সম্বন্ধ আসছিল। তখন ও কলেজে পড়ে। কিন্তু ততদিনে অনুরাধা একটি মেধাবী ছেলের প্রেমে পড়েছে। ছেলেটি ওরই এক বন্ধুর সম্পর্কীয় দাদা, কলকাতায় থাকে। সরকারি অফিসের ইঞ্জিনিয়ার। পারিবারিক অবস্থা সাধারণ।
তবে সেসব ধর্তব্যের মধ্যে নিল না বাড়ির লোকে। কেননা ছেলেটি সাধারণ ঘরের। এসব ক্ষেত্রে যা হয় দু’জনে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে। না, ছেলেটির উপর কোনও অত্যাচার করা হয়নি। শুধু ওই গ্রামে ঢোকা নিষিদ্ধ হয়। বলা হয়েছিল, ‘দেখা করার চেষ্টা করলে অনুরাধাকে মেরে ফেলা হবে।’ বলাবাহুল্য এরপরে ছেলেটি আর সে চেষ্টা করেনি। 
মেয়েটিকে রাখা হয় ওই চিলেকোঠার ঘরে, ঘরের শিকল বাইরে থেকে দেওয়া থাকত। অন্য বিয়েতে তাকে রাজি করানো যায়নি। একদিন মেয়েটি পালায়, খুব সহজ অথচ কঠিন পথে। কাজের লোক খাবার দিতে শিকল খুললে ও ছাদ থেকেই ঝাঁপ দিয়েছিল। এ সবই পুরনো গল্প। যখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে ঢুকি, ছোড়দাদু গল্পটা আমায় শুনিয়ে মজা করে বলেছিল, ‘দাদুভাই, প্রেমে যদি পড়, দেখেশুনে পড়।’ 
আমি খুব চিন্তায় আছি। আপাতত বাড়ি ভাঙা নিয়ে যে উপদ্রব চলছে, সেটিই আমাকে মোকাবিলা করতে হবে। নাহলে ওই জমিতে শপিংমল তৈরি করা যাবে না। আমার চাকরি থাকবে না।
আমার পরিকল্পনার আঁচ আমি বিমলকে দিইনি। জানালে ভেস্তে যাবার চান্স ষোলোআনা। মানিককে বলে আমি চিলেকোঠার ঘরের তালা খুলিয়েছি। দেওয়ালের জমে থাকা ঝুল ঝাড়তে গিয়ে একটা কলাইয়ের ডিস ঢাকা দেওয়া কুঁজো নজরে আসে। ঘরে ঝাঁট দিয়ে জল ছিটিয়ে পরিষ্কার করেছি, ওটা ফেলিনি। 
মানিক হয়তো কিছু জানে। বলেছিল, ‘ওই ঘরে আমি ঢুকব না। আপনার মতো আমার অত সাহস নেই। ওসব ইয়ে টিয়েকে আমি বাবা ঘাঁটাব না।’
খুব হাসি পেয়েছিল ওর কথায়। মৃত্যুর পর তো সব শেষ। ওই ঘর খুলে পরিষ্কার করতে করতে দেওয়ালে কালো কাঠকয়লায় লেখা দুটো নাম চোখে পড়েছে। অনুরাধা+তীশ। খুদি খুদি অক্ষরে লেখা। ‘তীশ’ বলে তো কোনও নাম হয় না, প্রথম অক্ষরটা মুছে গিয়েছে। দেওয়ালের এক কোণে অতৃপ্ত বাসনার জলছবির মতো ওই দুটো নাম বাংলায় কে লিখেছে বুঝতে অসুবিধা হয় না। মেয়েটি নাকি খুব সুন্দরী ছিল। যতদিন এসব লিখেছে, ততদিন ওর মনে আশা বেঁচেছিল হয়তো। ও মরেছে তারপরে। ওটা দেখে আমার সারা শরীর শিরশির করেছিল।
আমার ভালোবাসা-টাসায় তেমন বিশ্বাস নেই। ভালোবাসা মানুষকে ভালোরকম বোকা করে দেয় বলেই আমার মনে হয়। নাহলে বিমল ওর প্রেমিকার গল্প আমাকে ওভাবে শোনাত না। কিন্তু দেওয়ালের কোণে ওই কয়লার লেখনী আমাকে একটু কষ্ট দিয়েছে। কল্পনায় আমি দেখেছিলাম সেই নিরুপায় বন্দিনীকে।
....
সেদিন একটু অন্যরকম ঘটল। বিমলের বাবার শরীর অসুস্থ হওয়ায় ও ছুটি নিয়ে বাড়ি গেল। আর বাবা আমাকে ফোনে জানালেন এখানে আসছেন, আমার সঙ্গে দেখা করতে, কী নাকি বিশেষ দরকার আছে।
সন্ধেবেলা আবার বিমলের ফোন, ‘ফিরতে পারছি না। সাবধানে থাকবেন।’
বাবা সেদিন যে আসছেন না জানিয়েছেন বিকেলেই। ট্রেনের কীসব গোলমাল। পরেরদিন আসবেন। আমি অতবড় বাড়িতে একদম একা। বিকেলে ছাদে একবার পাক খেয়ে এলাম। তেমন কিছু নজরে এল না। মানিক রান্না করে গিয়েছিল, রাতে খেয়ে বিছানার মশারি খাঁটিয়ে শোওয়ার তোড়জোড় করলাম। বিমলের সঙ্গদোষে বিড়িতে টান দেওয়ার একটা বদভ্যাস হয়েছে। ধূমপান শেষ করে ঘরে ঢোকার আগেই বৃষ্টিটা এল। কোনও পূর্বাভাস ছাড়াই এরকম জমকালো বৃষ্টি, জমিয়ে ঘুম দেওয়া যাবে ভেবে মশারিতে ঢুকছি, তখনই আওয়াজটা শুনলাম। স্পষ্ট আওয়াজ, কিন্তু দূরের। 
দরজা ধাক্কালে যেমন হয় ঠিক সেরকম। তবে সেটা ঝোড়ো হাওয়ার জন্য হতে পারে। পুরনো বাড়ির কোনও বন্ধ দরজাতে ধাক্কা লাগছে হয়তো। আমি বিশেষ গ্রাহ্য করিনি। তবে অদ্ভুত ব্যাপার, ঘুম আসতে চায় না। আওয়াজটা একবার থামছে, আবার একভাবে হয়েই চলেছে।
আমি উঠে পড়ি। শব্দের উৎপত্তি নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই আর। আওয়াজ আসছে চিলেকোঠা থেকে। 
টর্চটা জ্বালানোই ছিল। সিঁড়ি বেয়ে সোজা ছাদে উঠলাম। বৃষ্টি একটু ধরেছে, কিন্তু ঝোড়ো হাওয়ার বেগ বেড়েছে। চাঁদের আলো তেমন না হলেও আছে। আমি টর্চ নিভিয়ে ওই চিলেকোঠার ঘরের দরজার দিকে এগিয়ে যাই। ছাদে ওঠার পর আমি স্পষ্ট বুঝেছি আওয়াজটা ওই ঘরেই হচ্ছে। 
আমি মাথা ঠান্ডা রেখেই এগিয়েছিলাম। আমাকে বাড়িটা ভাঙতে হলে একটা এসপার-ওসপার করতেই হবে। দেখাই যাক না, কী হয়। দরজাটা আমি খুলে দিলাম।
....
এখন সকালবেলা। বিমল ফিরেছে। বাড়ি ভাঙা শুরু হয়েছে। ও আর আমি বাড়ির বাগানে দাঁড়িয়ে আছি। গতকাল রাতে দরজার শিকল খুলতেই একটা জোর হাওয়া আসে ভেতর থেকে। আমি কোনওরকমে টাল সামলে দেওয়ালের একপাশ ধরে দাঁড়াই। নজরে আসে আলসের আর এক ধারে কেউ দাঁড়িয়ে আছেন। তার আবছা অবয়ব এগিয়ে আসতেই মুখ স্পষ্ট হয়। একী, এ যেন আমারই প্রতিচ্ছবি! পুরনো ফ্যাশনের পোশাকে ছোড়দাদুর এরকম একটা ছবি আমি দেখেছিলাম। তবে সে দেখা পলকের, পিছনের হলুদ কাপড়ে মোড়া মেয়েটি এসে হাত ধরে তার। মুখ দেখতে পাইনি। শুধু ডানার মতো ওপরে তোলা মেয়েলি হাত, ভেসে যাওয়া শরীরের খানিক। আলসে পেরিয়ে অনায়াসে দু’টি প্রজাপতির মতো উড়ে যায় তারা। 
আজ অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। সকালে সদর দরজার ধাক্কাধাক্কিতে আমার ঘুম ভাঙে। মানিক ঢোকে, হাত-পা ধুয়ে চা বসায়। বাবার ফোন আসে। তিনি জানান গতকাল রাতে ছোড়দাদু হঠাৎ হার্টফেল করে মারা গিয়েছেন। ক’দিন আগেই তাঁর ডায়েরিতে এ বাড়ির সব বৃত্তান্ত পড়ে, বাবা আমাকে সাবধান করতেই আসছিলেন। আমি বাবাকে শান্তভাবেই বলি, ‘তার আর দরকার হবে না।’ 
ইঞ্জিনিয়ার মানুষটির অবিবাহিত থাকার রহস্য এতদিনে বুঝতে পেরেছি। মিস্ত্রিরা বাড়ি ভাঙছে। আমি জানি এবার আর কোনও ঝামেলা হবে না। 
20th  October, 2024
বনের মানুষ

—মাস্টার, আজ ডিম বাদ দে, হামাদিগের ছেলে-মেয়েগুলান কেউ খাবেকনি রে!
—কেন?
—হামার সঙতে আসে ওই শর্বরী টুডুটা আছে না? উয়ার ছেলেটোর গায়ে ‘মায়ের দয়া’ বের হইচে। উয়ার লিগে হামাদের পাড়ার সবার মাছ-মাংস-ডিম খাওয়াটো বারণ আছে।
বিশদ

17th  November, 2024
কিছু কিছু সত্য
অংশুমান কর

বড়মা যখন খবরটা দিল তখন সুকমল শেভ করছিল। সকালটা তার খুবই তাড়াহুড়োয় কাটে। তখন এক মিনিটও মহার্ঘ। এক মিনিটের জন্যও এক-দু’দিন ও ট্রেন মিস করেছে। বাসে করে স্কুলে পৌঁছে দেখেছে প্রেয়ার শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রার্থনা শুরু হওয়ার পরে স্কুলে পৌঁছতে ওর খুব লজ্জা লাগে।
বিশদ

10th  November, 2024
দোলনা
সুমন মহান্তি

সরকারি হাসপাতালের এমারজেন্সি ওয়ার্ডের সামনে অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়াতেই মহীন ক্ষীণগলায় বললেন, ‘অপারেশনটা যেন তাড়াতাড়ি করে। ডাক্তারকে তাড়া দিবি।’ বিশদ

03rd  November, 2024
গুপ্ত রাজধানী: সেন্ট জেমস চার্চ
সমৃদ্ধ দত্ত

 

এই সময়টা খুব গরম পড়ে। আকাশে একফোঁটা মেঘ নেই। প্রিন্টার্সের এই ঘরটা সারাক্ষণ উত্তপ্ত থাকে। এই কাজটাও করতে ভালো লাগে না জেমসের।  দরদর করে সে ঘামছে। কলকাতা নামক শহরটায় এত গরম কেন? এখান থেকে পালাতে পারলে ভালো হতো।  বিশদ

03rd  November, 2024
আজও রহস্য: বাজিরাওয়ের কেল্লা
সমুদ্র বসু

 

পুনের একটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য স্থান হল শনিওয়ার ওয়াড়া দুর্গ। যার সঙ্গে জড়িয়ে ইতিহাস, ঐতিহ্য আর মারাঠাদের নাম। সর্বোপরি এই কেল্লার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন বাজিরাও পেশোয়া। একসময় মারাঠাদের ঐতিহ্য ও অহংকার এখন একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। বিশদ

03rd  November, 2024
সমব্যথী
উৎপল মান

লতা চেপে বসল ক্যারিয়ারে। জায়গাটার নাম ধ্রুবডাঙা। সামনে একটা খোলা মাঠ। স্টেজ করে তিনরঙা কাপড় দিয়ে মোড়া। বিশাল ডিজে মিউজিক সিস্টেমে গান বাজছে উচ্চ নিনাদে। আজ স্বাধীনতা দিবস। খগেনের মনে কেমন একটা চিনচিনে ব্যথা জেগে উঠল। বিশদ

27th  October, 2024
গুপ্ত রাজধানী: ইয়াদগার এ জওক
সমৃদ্ধ দত্ত

একজন লিখলেন, ‘আপ তো ঘাবড়াকে ইয়ে ক্যাহেতে হ্যায় কে মর যায়েঙ্গে/মরকে ভি চ্যায়েন না পায়া তো কিধর যায়েঙ্গে?’ অর্থাৎ আপনি তো ভয় পেয়ে ভাবলেন এর থেকে মৃত্যুই ভালো। কিন্তু মৃত্যুর পরও যদি শান্তি না আসে, তখন কোথায় যাবেন?  বিশদ

27th  October, 2024
অতীতের আয়না: কলকাতার ফানুস উৎসব
অমিতাভ পুরকায়স্থ

দূরে আকাশ শামিয়ানা। তবে তারাদের প্রদীপ জ্বালার বদলে উড়ে যায় ঘড়ি, পুতুল, হাতি কিংবা উড়োজাহাজের আদলে গড়া ফানুস। খুব স্যুরিয়াল লাগছে? আজ এই ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে লাগতেই পারে। কিন্তু একটা সময় ছিল, যখন কালীপুজোর বিকেলে কলকাতার আকাশের সিগনেচার ছিল এমন দৃশ্য। বিশদ

27th  October, 2024
গুপ্ত রাজধানী: পাহাড়গঞ্জ
সমৃদ্ধ দত্ত

হরিদ্বার ভ্রমণ? তাহলে দিল্লি হয়ে যাওয়াই ভালো। সরাসরি তো যাওয়াই যায়। কিন্তু দিল্লি হয়ে গেলে একটা দিন দিল্লিও দেখা হয়ে যাবে আর তারপর ভোরের শতাব্দী অথবা বাস কিংবা গাড়িতে হরিদ্বার-হৃষীকেশ গেলেই হল! আগ্রা, বৃন্দাবন, মথুরা, ভরতপুর যাব ভাবছি। বিশদ

20th  October, 2024
ভূতুড়ে স্টেশন বেগুনকোদর
সমুদ্র বসু

পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের গা ঘেঁষে ছোট্ট একটা স্টেশন। এই স্টেশনের চারপাশের অপূর্ব প্রাকৃতিক পরিবেশ মন ভরিয়ে দেওয়ার মতো। কিন্তু এক অজানা আতঙ্কে এই স্টেশন খালি পড়ে রয়েছে প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘ভূতুড়ে স্টেশন’। বিশদ

20th  October, 2024
মেঘ ও বৃষ্টি
সোমজা দাস

সকালে ঘুম ভেঙেই মোবাইল ফোনটা হাতে টেনে নেওয়া অরণ্যর দীর্ঘদিনের অভ্যেস। সেভাবেই বিছানায় বসে থাকে কিছুক্ষণ। সোশ্যাল মিডিয়ার টাইমলাইন ঘাটে। মেসেজবক্স চেক করে। রূপসা রাগ করে। বলে, এটা নাকি একটা মানসিক সমস্যা।      বিশদ

06th  October, 2024
গুপ্ত রাজধানী: কালকা মন্দির
সমৃদ্ধ দত্ত

চারদিকে এত লালের বন্যা কেন? লাল শালু। লাল উড়নি। জরি দেওয়া লাল কাপড়। লাল পাগড়ি। লাল দোপাট্টা। লাল ফুল। লাল সিঁদুর। এই নিরন্তর লাল বন্দনার পিছনে কি তাহলে রক্তের প্রতীকী ভূমিকা আছে? একটি তথ্যসূত্র সেরকমই বলছে। বিশদ

06th  October, 2024
অতীতের আয়না: নতুন পোশাক ও জাদুকর কারিগর
অমিতাভ পুরকায়স্থ 

ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। নতুন জামাকাপড় কেনাও হয়ে গিয়েছে সকলের। কলকাতা গড়ে ওঠার দিনগুলিতে সুতানুটির তালুকদারি পেয়ে মহারাজ নবকৃষ্ণ নানা পেশার মানুষ এনে সেখানে বসালেন। কুমোরদের থাকার এবং কাজ করার আলাদা জায়গা হল। বিশদ

06th  October, 2024
এক আকাশ
দীপারুণ ভট্টাচার্য

আকাশ আজ আত্মহত্যা করবে। কাজটা সে গতকালই করতে পারত। করেনি কারণ ঘটনাটা কলকাতায় ঘটলে বাবা-মা সহ্য করতে পারতেন না। একদিকে পুত্রশোক অন্যদিকে টিভি চ্যানেলের নির্লজ্জ প্রশ্নবাণ! আকাশের তো কারও উপর অভিযোগ নেই। বিশদ

29th  September, 2024
একনজরে
রাজ্য স্কুল জিমন্যাস্টিকের অনূর্ধ্ব ১৪ বালিকা বিভাগে পাঁচটি পদক পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চাকদহের দিয়া হালদার। সল্টলেক সাঁইয়ের মাঠে গত রবিবার শেষ হয়েছে ৬৮তম রাজ্য স্কুল জিমন্যাস্টিক প্রতিযোগিতা। সেখানেই দুটি সোনা, দুটি রুপো ও একটি ব্রোঞ্জের পদক পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দিয়া ...

রাজধানীতে শিশুকে অপহরণ। কিন্তু পরে শিশুটি ভিনধর্মের বুঝতে পেরে তাকে রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে গেলেন এক মহিলা। ঘটনার তদন্তে নেমে পূর্ব দিল্লির কৃষ্ণনগর থেকে অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ...

কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় বুনোর আক্রমণে মৃত্যু হল দু’জনের। জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন। বুধবার মাথাভাঙা-২ ব্লকের প্রেমেরডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতে বাইসনের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে এক প্রৌঢ়ের। ...

২০১১ সালে শেষবার জনগণনা হয়েছিল ভারতে। ২০২১ সালে জনগণনার কথা থাকলেও তাতে জল ঢেলে দেয় করোনা পরিস্থিতি। তার পরে আরও বছর তিনেক পেরিয়ে গেলেও জনগণনা শুরু করতে কার্যত ব্যর্থ মোদী সরকার। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

ব্যবসায়িক কাজকর্ম ভালো হবে। ব্যবসার প্রসারযোগও বিদ্যমান। উচ্চশিক্ষায় সন্তানের বিদেশ গমনের সুযোগ আসতে পারে। গৃহশান্তি ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব টেলিভিশন দিবস
১৬৯৪: ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ারের জন্ম
১৭৮৩:  মন্টগোলফার ভ্রাতৃদ্বয় প্রথম বেলুনে করে আকাশে ওড়ে
১৮৭৭: ফোনোগ্রাফ আবিষ্কারের কথা জানালেন থমাস এডিসন
১৯০৪:  শিশু সাহিত্যিক ও ছড়াকার হরেন ঘটকের জন্ম
১৯০৮: বিপ্লবী সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে ফাঁসি দেওয়া হয়
১৯২১: বিশিষ্ট বাঙালি মৎসবিজ্ঞানী ড.হীরালাল চৌধুরীর জন্ম
১৯২৬: অভিনেতা প্রেমনাথের জন্ম
১৯৩৪: অভিনেত্রী ও সঙ্গীত শিল্পী রুমা গুহঠাকুরতার জন্ম
১৯৩৮: বিশিষ্ট অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী হেলেনের জন্ম
১৯৪৭ স্বাধীন ভারতে আজকের দিনে জাতীয় পতাকা সম্বলিত ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়
১৯৭০: নোবেলজয়ী পদার্থবিদ চন্দ্রশেখর বেঙ্কটরামনের মৃত্যু
১৯৭৪: শিশু সাহিত্যিক পুণ্যলতা চক্রবর্তীর মৃত্যু
১৯৯৫: সঙ্গীতশিল্পী সবিতাব্রত দত্তর মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার    
পাউন্ড    
ইউরো    
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৫,৮০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৬,২০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭২,৪০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৯০,৪৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৯০,৫৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৫ অগ্রহায়ণ,১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪। ষষ্ঠী ৪৭/৪৮, সন্ধ্যা ৫/৪। পুষ্যা নক্ষত্র ২৪/৮ দিবা ৩/৩৬। সূর্যোদয় ৫/৫৭/১২, সূর্যাস্ত ৪/৪৭/৫২। অমৃতযোগ দিবা ৭/২৪ মধ্যে পুনঃ ১/১১ গতে ২/৩৮ মধ্যে। রাত্রি ৫/৪০ গতে ৯/১১ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৯ গতে ৩/২০ মধ্যে পুনঃ ৪/১৪ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ২/৫ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/২২ গতে ১/০ মধ্যে।
৫ অগ্রহায়ণ,১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪। ষষ্ঠী রাত্রি ৮/৪৫। পুষ্যা নক্ষত্র রাত্রি ৭/৫৪। সূর্যোদয় ৫/৫৯, সূর্যাস্ত ৪/৪৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩৯ মধ্যে ও ১/১৮ গতে ২/৪২ মধ্যে এবং রাত্রি ৫/৪৫ গতে ৯/১৮ মধ্যে ও ১১/৫৮ গতে ৩/৩৩ মধ্যে ও ৪/২৭ গতে ৬/০ মধ্যে। কালবেলা ২/৬ গতে ৪/৪৮ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/২৩ গতে ১/২ মধ্যে।  
১৮ জমাদিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
গণতন্ত্র এবং মানবিকতাই হল প্রধান, গায়ানার সংসদে বিশেষ অধিবেশনে বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

10:53:00 PM

এ আর রহমানের ডিভোর্স আপাতত হচ্ছে না
আপাতত হচ্ছে না এ আর রহমান-সায়রা বানুর ডিভোর্স। জানালেন তাঁদের ...বিশদ

10:16:00 PM

সকলকে ‘দ্য সবরমতী রিপোর্ট’ সিনেমাটি দেখার অনুরোধ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মার

10:06:00 PM

গায়ানার জর্জটাউনে মনুমেন্ট পরিদর্শনে গেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

09:57:00 PM

গায়ানার জর্জটাউনে মহাত্মা গান্ধীর মূর্তিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

09:30:00 PM

আগরতলায় হেরিটেজ ফেস্টের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা

09:10:00 PM