Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

এক আকাশ
দীপারুণ ভট্টাচার্য

আকাশ আজ আত্মহত্যা করবে। কাজটা সে গতকালই করতে পারত। করেনি কারণ ঘটনাটা কলকাতায় ঘটলে বাবা-মা সহ্য করতে পারতেন না। একদিকে পুত্রশোক অন্যদিকে টিভি চ্যানেলের নির্লজ্জ প্রশ্নবাণ! আকাশের তো কারও উপর অভিযোগ নেই। সে নিঃশব্দে হারিয়ে যেতে চায়। কোটি কোটি মানুষের ভিড় থেকে একজন হারিয়ে গেলে কী এমন ক্ষতি হবে! এসব ভেবেই হাওড়া থেকে রাতের প্যাসেঞ্জার ট্রেন ধরেছিল সে। চিন্তায় মাথাটা তখন দপদপ করছিল। বুঝতে পারেনি চরম এই অবস্থার মধ্যেও ঘুমিয়ে পড়া সম্ভব। একটু আগেই তার ঘুম ভেঙেছে। একটা ছোট স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াতেই অফিসের ব্যাগটা নিয়ে সে নেমে পড়ল। এখানে প্ল্যাটফর্ম নেই। বসার জন্য বেঞ্চও চোখে পড়ছে না। জায়গাটা বিহার কিংবা ঝাড়খণ্ড হবে।
ঠান্ডা লুচির উপর মাছি ঘুরছে। স্টেশনের বাইরে একটাই দোকান। আকাশ বলল, ‘এক প্লেট পুরি দো।’ হাইজিন নিয়ে ফালতু ভেবে লাভ নেই। সিগারেট ধরাতে গিয়ে মনে পড়ল ফোনটা কাল বিকেল থেকেই বন্ধ। টাওয়ার লোকেশন বের করা এখন কঠিন কিছু নয়। সিগারেট আর দেশলাই ছুড়ে ফেলে দিল সে। প্রাণ ত্যাগ করার আগে অন্য সবকিছুই একে একে ত্যাগ করতে হবে। অফিসের ল্যাপটপ, আধার কার্ড, ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি রয়েছে পিঠের ব্যাগে। ট্রেনেই ওটা ফেলে এলে হতো। খাওয়া শেষ। এবার চলতে হবে। রাস্তা গিয়েছে দুই দিকে। ডান দিকে পিচ ঢালা আর বাঁ-দিকে মোরাম বিছানো। সে মোরামের পথ নিল। দূরে টিলা পাহাড়ের সারি। এই পথ যদি পাহাড়ের দিকে যায় তাহলে ব্যাগটা লুকিয়ে রাখা সহজ হবে। তারপর খাদের দিকে লাফিয়ে পড়লেই... সব শেষ। 
দু’দিকে চাষের জমি। কেউ কি অনুসরণ করছে! আকাশ বারবার পিছন ফিরে তাকায়। কোথাও কেউ নেই। এই জামা-প্যান্ট, চামড়ার জুতো, ব্যাগ সব মিলিয়ে নিজেকে এখানে বেমানান লাগছে। কিলোমিটার দুয়েক চলার পর পথ জঙ্গলে ঢুকল। আকাশ আজ মেঘলা। আরও আধা ঘণ্টা পরে সে বুঝল পথ তাকে উপরের দিকে নিয়ে চলেছে। অর্থাৎ এটাই টিলার দিক। এই ভাবনার মাঝেই একটা চিন্তা মাথায় এল। পথে কোনও মানুষ নেই কেন! এটা মাওবাদী এলাকা নয়তো! ভাবতেই বুকের ভিতরটা ছ্যাঁত করে উঠল।
হেসে ফেলল আকাশ। যে মরতে চলেছে তার আবার ভয় কীসের! আধার কার্ডটা টেনে ছেঁড়ার চেষ্টা করল। হচ্ছে না। দেশলাইটা থাকলে পুড়িয়ে দেওয়া যেত। সব কিছুর জন্যই সে দায়ী। যে নিজেকে বোঝে না, অন্যকে সে ভালোবাসবে কীভাবে! চাকরিটার উপর সে বেশিই ভরসা করে ফেলেছিল। বুঝতে পারেনি ওই সামান্য চাকরি করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ডিরেক্টরের মেয়েকে পাওয়া যায় না। হতে পারে নবনীতার সঙ্গে তার পাঁচ বছরের সম্পর্ক। আকাশের বাড়ির লোক, আত্মীয়, বন্ধুরা জানত তাদের বিয়ে হবে। নবনীতার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে তার ভালোই লেগেছিল। দিনের-পর দিন একসঙ্গে তারা যৌথ জীবনের স্বপ্ন দেখেছে। তার মা গয়না গড়িয়েছেন নবনীতার জন্য। এরপর এক ফোনে সব মিটিয়ে ফেলা যায়! 
একটু দূরে জলের ধারা বয়ে যাচ্ছে। তবে কি কাছাকাছি ঝর্ণা আছে কোথাও! আচ্ছা, ব্যাগটা ওই কাঁদায় পুঁতে ফেললে কেমন হয়! সন্তর্পণে ঢাল বেয়ে নামতে লাগল সে। কাল বিকেলে নবনীতা যখন ফোন করেছিল, আকাশ তখন অফিসে। সে বলেছিল, ‘এত সহজে সব কিছু ভেঙে দেওয়া যায় না। আমি তোমার বাবার সঙ্গে কথা বলব।’ গম্ভীর গলায় নবনীতা বলেছিল, ‘সেটা আমি চাই না।’ তারপর আকাশের ফোন ব্লক করে দেয়। দারোয়ান তাকে বাড়িতে ঢুকতে পর্যন্ত দেয়নি। মেয়ে বাবাকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে, নাকি এটাই পারিবারিক মত, আকাশ জানে না। জানতে চায় না, নবনীতা অন্য কাউকে চায় কি না। ওসব ভাবলেই মনে হচ্ছে মাথায় ইলেক্ট্রিক শক দিচ্ছে কেউ। অথচ এই মেয়েকেই সবটুকু দিতে চেয়েছিল আকাশ! তার নিঃশ্বাসে অপ্রেমের আগুন সে কোনওদিন উপলব্ধি করেনি! এই দোষ নিজেকে ছাড়া আর কাকে দেবে সে!
জলে নামতে গিয়ে থমকে দাঁড়াল আকাশ। কী যেন নড়ছে! উঁকি দিতেই শিউরে উঠল। আর তৎক্ষণাৎ চিৎকার। তিনটে বারো-চোদ্দো বছরের ছেলে পাথরের আড়ালে বসে যে মাছ ধরছে, সেটা এতক্ষণ বোঝাই যায়নি। শহুরে লোককে দেখে তারাও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছে। একটি ছেলে দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, ‘মোতিঝোরা দেখেগে বাবু; পচাশ রুপিয়া দো, হ্যাম লে জায়েগা।’ হাঁফ ছাড়ল আকাশ। আর একটু হলেই সে ধরা পড়ে যাচ্ছিল। বলল, ‘মোতিঝোরা! আচ্ছা চলো।’ ছিপ গুটিয়ে বাকিরাও উঠে পড়ল। মাছ ধরার চেয়ে পথ দেখানো বেশি লাভজনক।
মিনিট চল্লিশ পর দারুণ সুন্দর এক জায়গায় এসে পৌঁছল তারা। অনুচ্চ পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসছে ঝর্ণা। ঢালু জমির ভিতর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে জল। অন্য সময় হলে মোবাইলে ছবি তুলত আকাশ। এখন সবই অর্থহীন। প্রথম ছেলেটা বলল, ‘ধুপ রেহনেসে পানি মে মোতি দিখতা হ্যায়।’ আকাশ ঠিক করল ওদের টাকা দিয়ে বিদায় করবে। সুন্দর এই জায়গাতেই শেষ হোক জীবন। দ্বিতীয় ছেলেটা প্রশ্ন করল, ‘উপর চলোগে বাবু? উহাসে ওউর সুন্দর দিখতা হ্যায়।’ জুতোটা পাহাড়ের উপযুক্ত নয়। অবশ্য হড়কে গেলে তাকে আর কষ্ট করে মরতে হবে না। আকাশ রাজি হয়ে গেল। মরার আগে প্রকৃতির আরও কিছুটা রূপ, রস আস্বাদ করা যাক। বলল, ‘চলো।’
অনর্গল জল আসছে পাথরের গা বেয়ে। জায়গাটা যেমন সুন্দর তেমনই বিপজ্জনক। পা হড়কালে বেঁচে ফেরার ভয় নেই। তিনজনকে এক-একশো টাকা দিয়ে আকাশ বলল, ‘অব তুম লোগ যাও।’ এখানে মরলে কেউ আত্মহত্যার সন্দেহ করবে না। মরতে কে আসবে এখানে! মৃত্যুর উপর দুর্ঘটনার তকমা পড়াই ভালো। খবরটা মা-বাবার কাছে না পৌঁছলে আরও ভালো হয়। তাদের কাছে আকাশ না হয় নিখোঁজ হয়েই বেঁচে থাকুক। ছেলেরা চলে যেতেই সে ঝোপের দিকে এগিয়ে গেল। ব্যাগটা কোনও ফাটলের মধ্যে ফেলতে পারলে আর কেউ ওটা খুঁজে পাবে না। হঠাৎ প্রথম ছেলেটা ফিরে এসে তার হাত ধরে টানল, ‘নীচে চল বাবু, বহুত তেজ পানি আ-রাহা।’ বারবার বাধা পড়ছে তার কাজে। বিরক্ত মুখে আকাশের দিকে তাকাল সে। ইতিমধ্যেই বাকি দু’জন ঢালু পথে পাহাড়ের অন্যদিকে নেমে যাচ্ছে। তার হাত ধরে আবার টান দিল ছেলেটা, ‘জলদি চল বাবু।’
মুষলধারায় বৃষ্টি নামল। ওরা ছুটতে ছুটতে একটা বাড়ির দাওয়ায় উঠে দাঁড়িয়েছে। জঙ্গলের মধ্যে গ্রাম। টিনের চাল দেওয়া মাটির দোতলা বাড়ি। চালের উপর তুমুল শব্দে বৃষ্টি পড়ছে। ঝুলন্ত এক টুকরো টিনে আলকাতরা দিয়ে হিন্দিতে লেখা, ‘মাহাতো গেস্ট হাউস’। আকাশের দৃষ্টি লক্ষ্য করে একজন প্রশ্ন করল, ‘তুম রহগে বাবু?’ উত্তরের অপেক্ষা না করে অন্য দু’জন চিৎকার করে উঠল, ‘রোশনি, দরওয়াজা খোল।’ একটু পরে দরজা খুলে দাঁড়াল সতেরো-আঠারোর এক আদিবাসী তরুণী। 
বিপত্নীক, নিরঞ্জন মাহাতোর বয়স হয়েছে। সম্পর্কে তিনি রোশনির ঠাকুরদা। বাবা চাকরি নিয়ে বম্বে গিয়েছিল। আর ফেরেনি। মাও চলে গেছে অন্যের সংসারে। বাড়িতে তাই দাদু আর নাতনি। রোজগারের আশায় দোতলার ঘরে অতিথি রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। তবে প্রচার এবং দরকারি সুবিধা যেমন বিদ্যুৎ, রাস্তা, ভালো টয়লেট ইত্যাদি না থাকায় তেমন কেউ আসে না। নিরঞ্জন একসময় কলকাতায় কাজ করতেন। বাংলাটা মন্দ বলেন না। আকাশ ঠিক করল, এখানেই থাকবে। জায়গাটা মোতিঝোরার কাছে। কাজেই তার সুবিধা হবে। বুড়ো জানতে চাইলেন, ‘একা আসছেন? ঘুরতে?’ হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল আকাশ। এমন সময় রোশনি এসে বলল, ‘ডাল, চাওল, আলু-সব্জি, চলেগা?’
দোতলার ঘরে মেঝেতেই শোয়ার ব্যবস্থা। আকাশের সঙ্গে আর জামাকাপড় নেই। সে মাদুরের উপর শুয়ে পড়ল ভিজে কাপড়েই। জানলাটা বেশ নিচুতে। শুয়ে শুয়ে দিব্বি দূরের পাহাড় আর চাষের জমি দেখা যায়। প্রবল বৃষ্টিটা এখনও চলছে। পাহাড়ের দিকে তাকাতেই মৃত্যু চিন্তাটা ফিরে এল। বৃষ্টি কমলে সে মোতিঝোরায় যাবে। পাথরের উপর থেকে হঠাৎ পিছলে যাওয়া এমন কিছু অস্বাভাবিক নয়। এসব কথাই বিড়বিড় করছিল সে। বুঝতে পারেনি কখন রোশনি এসে ঢুকেছে তার ঘরে। চোখাচোখি 
হতেই নিজেকে গুটিয়ে নিল আকাশ। রোশনি ইতস্তত করে বলল, ‘খানা লাগা দিয়া।’
খেতে বসে বুড়ো আবার খুললেন দুঃখের ঝাঁপি। ‘মেয়েটাকে নিয়েই যত চিন্তা। আমি না থাকলে ওর কী হবে বাবু?’ এসব শুনে মুখ বাঁকিয়ে উঠে গেল রোশনি। আকাশের সন্দেহ হল, মেয়েটা বাংলা বোঝে! কথা থামাতে সে বলল, ‘বিয়ে দিয়ে দিন।’ উপর-নীচ মাথা নাড়তে নাড়তে বুড়ো বলল, ‘অনেক টাকা দরকার বাবু।’ এরপর একদম চুপ করে গেল আকাশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বুড়ো প্রশ্ন করল, ‘রাতে মহুয়ার সঙ্গে মুর্গা রুটি খাবেন?’
পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে আকাশ। খাকি পোশাকের লোকটা অতর্কিতে ধাক্কা দিতেই সে পড়ে গেল। একটা আলগা পাথরকে জড়িয়ে ধরার প্রাণপণ চেষ্টাও ব্যর্থ হল। ধাক্কা খেতে খেতে শরীরটা কুণ্ডলী পাকিয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে নীচের দিকে। ভয়ঙ্কর এই দৃশ্যটা দেখে হাততালি দিচ্ছে নবনীতা। বীভৎস স্বপ্নটা ভাঙতেই মাদুরের উপর উঠে বসল আকাশ। দুপুরে খাওয়ার পর সে তবে ঘুমিয়ে পড়েছিল! সংবিৎ ফিরে পেতেই লক্ষ করল হ্যারিকেন হাতে দরজায় দাঁড়িয়ে রয়েছে রোশনি। সে কি অনেক্ষণ এসেছে! তার মুখের ভাব দেখে অপ্রস্তুত রোশনি প্রশ্ন করল, ‘চায়ে পিওগে?’
বৃষ্টি থামার কোনও নাম নেই। রাতে খাওয়ার পর আবার শুরু হল মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা। টিনের চালে একটানা বৃষ্টির শব্দ বিরক্তিকর লাগছে। কখন যে চোখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে আকাশ বুঝতে পারেনি। ঘুম ভাঙল মধ্যরাতে। কেউ তার কানের কাছে ঘেসঘেসে গলায় কিছু কি বলছিল! বৃষ্টি থেমে গিয়েছে। বাইরে তাকিয়ে চমকে উঠল সে। জ্যোৎস্নায় পাহাড় জঙ্গল সব পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। আজ পূর্ণিমা নাকি! ছিটকানি খুলে দিতেই ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ করে সদর দরজাটা খুলে গেল। বাইরে অসংখ্য ঝিঁঝিঁ পোকার আওয়াজ। 
এমন জ্যোৎস্না আগে কখনও দেখেছে কি না, মনে পড়ছে না। পৃথিবীকে বিদায় জানানোর আগে সবকিছুই বড় সুন্দর মোহময় লাগছে যেন। দ্রুত মোতিঝোরার দিকে এগিয়ে চলল আকাশ। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সব যন্ত্রণা থেকে সে মুক্তি পেয়ে যাবে। এসব ভেবে আর সান্ত্বনা নয় দুঃখ হচ্ছে তার। বারবার মা-বাবার কথা মনে পড়ছে। মনের মধ্যে ভেসে উঠছে যৌথ মুহূর্তের ছেঁড়া ছবির কোলাজ। একটা কষ্ট গলার কাছে দলা পাকিয়ে আছে। চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে তার। পারছে না! সেই ঘেসঘেসে কণ্ঠ বলে উঠল, দৌড়...দৌড় দে।
হাঁপাতে হাঁপাতে পাহাড়ের উপরে এসে সে দাঁড়াল। সারা পৃথিবী ঘুমাচ্ছে। একটু পরে সেও ঘুমিয়ে পড়বে। মৃত্যু বড়ই বিচিত্র। বড্ড একা লাগছে নিজেকে। আজকের কথা কাউকে কোনও দিন সে বলতে পারবে না। চোখ বন্ধ করে ফেলল আকাশ। তার মাথা ঘুরছে। শিরাগুলো দপদপ করছে। লম্বা শ্বাস নিয়ে শেষ পা বাড়িয়ে দিতে যাওয়ার মুহূর্তে প্রবল হাতির গর্জন শুনে সে থমকে দাঁড়াল। তারপর নীচের দিকে তাকিয়ে স্থির হয়ে গেল চোখ। মোতিঝোরার জলে নেমেছে বুনো হাতির পাল। জ্যোৎস্নায় পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে ওদের। অকল্পনীয় এই মুহূর্তে সেই ঘেসঘেসে কণ্ঠটা চিৎকার করে উঠল, ঝাঁপ দে।
পাথরের মতো খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সে। পা যেন সরছে না। বারবার চোখ যাচ্ছে হাতিদের দিকে। ওরা জল নিয়ে খেলছে। মানুষের জীবন ওদের মতো সহজ নয়। সেই ঘেসঘেসে কণ্ঠটা এবার চিৎকার করে উঠল। বুকের রক্ত হিম হয়ে আসছে। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল। আর দেরি করার সময় নেই। ডান পা তুলল আকাশ। শরীরটা এগিয়ে দিল সামনের দিকে। 
এক বিকট আর্ত-চিৎকার আর তারপরই কেউ পিছন থেকে খামচে ধরল জামাটা। অতর্কিত টানে মাটিতে পড়ে গেল আকাশ। চোখ তুলে দেখল তার সামনে রোশনি দাঁড়িয়ে রয়েছে। মেয়েটার পিছনে থালার মতো জ্বলজ্বল করছে পূর্ণিমার চাঁদ। রোশনি তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। উঠে দাঁড়াল আকাশ। কী যেন বলছে মেয়েটা। আকাশ ঠিক বুঝতে পারছে না। এতক্ষণ আটকে থাকা কান্নাটা এবার সশব্দে বেরিয়ে এল। ওর হাত দুটো নিজের হাতের ভিতর খুব শক্ত ধরে আছে রোশনি। 
29th  September, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দাদি-পোতি মকবরা
সমৃদ্ধ দত্ত

এটা বেশ মজার তাই না দাদি? আমাদের কেউ চিনবে না! বিশদ

29th  September, 2024
সিমলার ভৌতিক টানেল
সমুদ্র বসু

অন্ধকার একটা টানেল। স্যাঁতস্যাঁতে শ্যাওলা ধরা দেওয়াল। টানেলের ভেতরে ঢোকার কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় জল পড়ার আওয়াজ। সঙ্গে কিছু ‘অন্য’ আওয়াজও কানে আসে। না, এটা কোনও ভৌতিক সিনেমার প্লট নয়। খোদ ভারতের বুকেই রয়েছে এমন একটি ‘ভূতুড়ে’ টানেল। বিশদ

29th  September, 2024
নিভাননী দেবী
ঝিমলি নন্দী

হারাধন দাসের বাড়িটা পিছাবনি গ্রামের দক্ষিণদিকের শেষ প্রান্তে জোড়া পুকুরের ধারে। বাড়িটা পাকা বটে তবে না ছিরি না ছাঁদ। যখন যেমন ঘর দরকার হয়েছে,  তেমন করেই বাড়ানো। ভেতর দিকের উঠোনে একটা ঘরে আবার সিমেন্টের খুঁটির ওপর টালির চাল। বিশদ

22nd  September, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দিওয়ান-ই-খাস
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ এগিয়ে আসছে। দিওয়ান-ই-আম, দিওয়ান-ই-খাস, রংমহল, খাস মহল, মোতি মহল জেগে উঠছে ক্রমেই। রং করা হচ্ছে দেওয়াল। পাঁচিল।  সামনেই বয়ে যাওয়া যমুনার প্রতিটি নৌকাকেও রং করেছে তাদের মালিকরা। বিশদ

22nd  September, 2024
অতীতের আয়না: সামাজিকতায় ভিজিটিং কার্ড
অমিতাভ পুরকায়স্থ 

কার্ডটা কীরকম হয়েছে দেখ তো।’ ফেলুদা ওর মানিব্যাগের ভিতর থেকে সড়াৎ করে একটা ভিজিটিং কার্ড বের করে আমাকে দেখতে দিল। দেখি তাতে ছাপার অক্ষরে লেখা রয়েছে Prodosh C. Mitter, Private Investigator। বিশদ

22nd  September, 2024
রাত্রিটা ভালো নয়

এটাই শেষ ট্রেন ছিল। স্টেশন থেকে বাইরে বেরিয়ে পথিক দেখল, চারদিকটা খুব ফাঁকা লাগছে। শীতকাল বলেই কী? নইলে এত তাড়াতাড়ি তো রাস্তাঘাট এমন শুনশান হয় না। তার পক্ষে অবশ্য এটা ভালোই। ভিড় থাকলে রিকশ পাওয়া দুষ্কর। আবার বেশি ফাঁকা হলেও রিকশওয়ালাগুলো সব পিটটান দেয়।
বিশদ

15th  September, 2024
ফেরা
ছন্দা বিশ্বাস 

সোপান সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বলল, ‘তাহলে কী ঠিক করলি?’ পরমের হাতে সিগারেটটা অসহায়ভাবে পুড়ছিল। ওরা ফ্রাঙ্কফুর্ট স্টেশনে ঢোকার মুখে বাঁ-পাশে একটা স্মোকিং জোনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। কয়েকজন জার্মান যুবতী দ্রুত সিগারেট নিঃশেষ করে ভিতরে ঢুকে গেল।  বিশদ

08th  September, 2024
গগনবাবু ও প্যাংলা তাপস
রম্যাণী গোস্বামী

গগনবাবু একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মোটামুটি উপরতলার কর্মী। যাদবপুরে নিজেদের ফ্ল্যাট। মাস গেলে ইএমআই বাদ দিলে মাঝারি ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স, কয়েকটা মিউচুয়াল ফান্ড, হৃষ্টপুষ্ট গিন্নি, ফ্যাশানেবল কলেজ পড়ুয়া কন্যা এবং একটি মাহিন্দ্রা কেইউভি— এই হল মোটামুটি তাঁর সম্পত্তির খতিয়ান। বিশদ

01st  September, 2024
গুপ্ত রাজধানী: হনুমান মহারাজজি
সমৃদ্ধ দত্ত

 

সেই গল্পটা তো আমাদের সকলেরই জানা। মহাশক্তিশালী ভীম হস্তিনাপুর যাওয়ার পথে একটি জঙ্গল পেরচ্ছিলেন। তাঁর শরীরে তো একশো হাতির শক্তি। সেকথা সর্বজনবিদিত। দ্বিতীয় পাণ্ডব নিজেও সেকথা জানেন। সোজা কথায় তাঁর নিজের বাহুবল নিয়ে যে গর্ব ছিল একথাও অবগত আমরা।  বিশদ

01st  September, 2024
ছেলের সঙ্গে দেখা
সন্দীপন বিশ্বাস

বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল সুভদ্রার। ঝাপানডাঙা স্টেশনে সে বসে আছে। এখানে এসেছিল এক গুরুবোনের বাড়ি। ফিরে যাচ্ছে উত্তরপাড়ায়, নিজের ঘরে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। এখনও কয়েকটা কাক ডাকছে। কেমন ক্লান্ত স্বর ওদের। স্টেশনের শেডের ওপর বসে কাকগুলো। বিশদ

25th  August, 2024
ঘাটশিলার বীরেশ
রাজেশ কুমার

ব্যাগ বোঁচকা আর এক কিলো পুঁটিমাছ নিয়ে সকাল সকাল পড়লাম এক অশান্তিতে। হয়েছেটা কী, দু’দিনের জন্য ঘুরতে এসেছিলাম ঘাটশিলা। ঠিক ঘুরতে না বলে শনির দশা কাটাতেই বলা ভালো। অনেক দিন বেড়াতে যাব, বেড়াতে যাব ভাবলেও যাওয়া হচ্ছিল না কোথাও। কিছু না কিছু বিপত্তি এসে হাজির হচ্ছিল ঠিক। বিশদ

18th  August, 2024
অভিশপ্ত কুলধারা

অলৌকিক তকমা স্থান-নামের সঙ্গে আলাদা মাত্রা যোগ করে। অলৌকিক ব্যাপার নিয়ে বিশ্বাসী অবিশ্বাসী দু’পক্ষেরই নিজস্ব দাবিদাওয়া আর মতামত অন্তহীন।
  বিশদ

11th  August, 2024
দিল্লি দরবার
সমৃদ্ধ দত্ত

এমন কিছু নতুনত্ব নয়। এরকম দরবার এবং উৎসব আগেও হয়েছে। একবার সেই ১৮৭৭ সালে। ভারতের শাসনভার নিজের হাতে তুলে নেওয়ার বেশ কয়েক বছর পর মহারানি ভিক্টোরিয়ার ‘বিশেষ অভিষেক’ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল।
বিশদ

11th  August, 2024
হেড অফিসের বড়বাবু

বার দশেক হোঁচট খেয়ে প্রায় পড়ে যেতে যেতে নিজেকে সামলে নিয়ে পার্থ এসে দাঁড়াল অফিসের গেটে। পার্থ বড়ুয়া। জুনিয়র অফিসার।
বিশদ

11th  August, 2024
একনজরে
পুজোর মুখে কার ইউটিউব চ্যানেলে কত ভিউয়ার্স বাড়বে চলছে তার প্রতিযোগিতা। কে দামি বাইকে কত গতি তুলে স্টান্টবাজি করতে পারবে চলছে তার মহড়া। কাটোয়া, দাঁইহাট ...

দেশে কর্মসংস্থানের অবস্থা খুবই খারাপ। ইজরায়েলে ভারতীয় বেকারদের পাঠানোই তার অন্যতম প্রমাণ। শুক্রবার এমনই অভিযোগে সরব হলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। আজ শনিবার হরিয়ানায় ভোট। ...

কোচ বদলের পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ায় দল। ভারতীয় ফুটবলে এমন উদাহরণ প্রচুর। বিনো জর্জের হাত ধরে ইস্পাতনগরীতেও কী একই দৃশ্য দেখা যাবে? আশায় বুক বাঁধছে ...

দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন রেজিস্ট্রার যোগ দিতেই একের পর এক সমস্যা শুরু। অধ্যাপকদের বেতন বন্ধ থেকে শুরু করে রেজাল্ট আটকে থাকা, এমনকী নতুন ক্লাস শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব শিক্ষক দিবস
১৭৮৯ - ফরাসি বিপ্লবের সূচনা
১৮৬৪ - ঘূণিঝড়ে কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে ১৭ হাজার লোকের মৃত্যু
১৮৯৫ - অনুশীলন সমিতির সদস্য ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী হেমন্তকুমার বসুর জন্ম
১৯৪৭ - কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি স্থাপিত
১৯৮৯ - কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ফতিমা বিবি ভারত সুপিমকোর্টের প্রথম মহিলা বিচারপতি মনোনীত হন
১৮০৫ -  ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর লর্ড কর্নওয়ালিসের মৃত্যু
২০১১ - অ্যাপল ইনকর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জোবসের মৃত্যু
২০২০- সঙ্গীত শিল্পী ও অভিনেতা শক্তি ঠাকুরের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.১৩ টাকা ৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড ১০৮.৫০ টাকা ১১২.০৬ টাকা
ইউরো ৯১.০৪ টাকা ৯৪.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৬,২০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৬,৬০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭২,৮০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৯২,৪০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৯২,৫০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৯ আশ্বিন, ১৪৩১, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪। তৃতীয়া অহোরাত্র। স্বাতী নক্ষত্র ৪০/৩ রাত্রি ৯/৩৩। সূর্যোদয় ৫/৩৩/১, সূর্যাস্ত ৫/১৭/১১। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/২০ মধ্যে পুনঃ ৭/৭ গতে ৯/২৮ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৯ গতে ২/৫৭ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৪ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ১২/৩৯ গতে ২/১৭ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ২/১৭ গতে ৩/৬ মধ্যে। বারবেলা ৭/১ মধ্যে পুনঃ ১২/৫৩ গতে ২/২১ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৮ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৬/৪৯ মধ্যে পুনঃ ৪/১ গতে উদয়াবধি। 
১৮ আশ্বিন, ১৪৩১, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪। তৃতীয়া শেষরাত্রি ৪/৫৪। স্বাতী নক্ষত্র ৮/১৬। সূর্যোদয় ৫/৩৩, সূর্যাস্ত ৫/১৯। অমৃতযোগ দিবা ৬/২৪ মধ্যে ও ৭/৯ গতে ৯/২৭ মধ্যে ও ১১/৪৫ গতে ২/৪৮ মধ্যে ও ৩/৩৪ গতে ৫/১৯ মধ্যে এবং রাত্রি ১২/৩৭ গতে ২/১৭ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ২/১৭ গতে ৩/৭ মধ্যে। কালবেলা ৭/১ মধ্যে ও ১২/৫৪ গতে ২/২৩ মধ্যে ও ৩/৫১ গতে ৫/১৯ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/৫১ মধ্যে ও ৪/১ গতে ৫/৩৩ মধ্যে। 
১ রবিয়স সানি।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
নিট দুর্নীতি মামলা: পাটনা আদালতে চার্জশিট জমা দিল সিবিআই

10:31:00 PM

মহিলা টি-২০  বিশ্বকাপ: বাংলাদেশকে ২১ রানে হারাল ইংল্যান্ড

10:30:00 PM

ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু করলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা

09:48:00 PM

জম্মুর ঘোরটায় বিস্ফোরক উদ্ধার, তদন্তে পুলিস

09:34:00 PM

আইএসএল: মহামেডানকে ৩-০ গোলে হারাল মোহন বাগান

09:29:00 PM

মাছ ধরতে গিয়ে বাজ পড়ে মৃত্যু রানাঘাটের ৮৪ বছরের বৃদ্ধের

09:19:00 PM