Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড
শংকরলাল সরকার

কলকাতা থেকে ঘণ্টাখানেকের উড়ানে যখন গুয়াহাটি পৌঁছলাম তখন সন্ধ্যা হয় হয়। আগে থাকতে রাতের আশ্রয় ঠিক করেছিলাম পল্টন বাজারে। গিন্নি বলল, হিন্দুরা বিশ্বাস করে তীর্থস্থানে ধুলোপায়ে দেবদর্শন করতে হয়। 
বললাম, আকাশ পথে এলে, পায়ে ধুলো লাগল কী করে? তাছাড়া এখন রওনা দিলেও পৌঁছতে পৌঁছতে মন্দির বন্ধ হয়ে যাবে। 
গুয়াহাটি থেকে কামাখ্যার নীলাচল পাহাড়ের দূরত্ব আট কিমি। ভগবান বিষ্ণুর চক্রে খণ্ডিত মহামায়া সতীর দেহের একান্ন খণ্ডের একটি অঙ্গ এখানে পড়েছিল। কালিকাপুরাণ অনুসারে বহু পূর্বে নীলাচল পর্বতের উচ্চতা ছিল শতেক যোজন। কিন্তু মহামায়া সতীর যোনি অঙ্গ পড়ার পর মহামায়ার যোনিমণ্ডলের ভার সহ্য করতে না পেরে পর্বত ক্রমশ পাতালে প্রবেশ করতে শুরু করে। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর পর্বতকে পাতাল প্রবেশ থেকে রক্ষা করেন। পর্বতের উচ্চতা কমে গিয়ে হয় মাত্র এক ক্রোশ। দেবীর যোনিরূপ শিলাখণ্ডেই দেবী কামাখ্যার পুজো হয়।
তেজপুরের বানমলবর্মদেবের শিলালিপি থেকে জানা যায় খ্রিস্টীয় অষ্টম-নবম শতাব্দীতে এখানে একটি বিরাট মন্দির ছিল। ১১৫০ খ্রিস্টাব্দে বাংলার পালরাজা ধর্মপাল নীলাচল পর্বতে কামাখ্যা দেবীর মন্দির পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। ষোড়শ শতকে কোচবিহারের রাজারা কামাখ্যা মন্দিরটি পুনরায় নির্মাণ করেন। ১৫৫৩ সালে গৌড়বাংলার সুলতান সুলেমানের সেনাপতি কালাপাহাড়ের হাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে কোচবিহারের রাজা নরনারায়ণদেব পুনরায় নতুন করে মন্দিরটি নির্মাণ করেন।
পরদিন সকালে গুয়াহাটি থেকে কামাখ্যা এলাম বাসে। এরপর ট্রেকারে চেপে উঠতে হবে পাহাড়ে। চড়াইপথে নীলাচল পাহাড়ে উঠতে উঠতে মন রোমাঞ্চিত হয়ে উঠে। রহস্যময় তন্ত্রসাধনার আদিপীঠ কামাখ্যা। রক্তবর্ণ পোশাক পরিহিত তান্ত্রিকেরাই এখানকার পূজারি। কামাখ্যা সম্পর্কে একটা শ্রদ্ধামিশ্রিত ভয়ের অনুভূতি আজন্মলালিত। ট্রেকার থেকে নেমে এগিয়ে চললাম মন্দিরের পথে। রাস্তার দু’দিকে পুজোর সামগ্রী আর নানারকমের শো-পিস সাজানো ছোট ছোট দোকান। সব মন্দিরের প্রবেশপথই বোধহয় একরকমের। লাল ধুতি আর উত্তরীয় পরা দু’চারজন পূজারিকে দেখলাম ঘোরাঘুরি করতে। তাঁদের দেখে ভরসা পেলাম। তান্ত্রিক কাপালিকদের মতো চেহারা বা হাবভাব নয়। চত্বরটাকে একটি মন্দির কমপ্লেক্স বলা চলে। কালিকাপুরাণের দশ মহাবিদ্যার সব দেবীই এখানে পূজিত হন। কামাখ্যার বর্তমান মন্দিরটি অহোম রাজাদের রাজত্বকালে নির্মিত। এক সরলরেখায় পরপর চারটি কক্ষ। গর্ভগৃহ, পঞ্চরত্ন, চলন্ত ও নাটমন্দির। মন্দিরের চূড়াগুলি মৌচাকের মতো। বর্গাকার পঞ্চরত্নের মধ্যে প্রশস্ত সিংহাসনে কামাখ্যা দেবীর অষ্টধাতুর ছোট মূর্তি। পঞ্চরত্নের লাগোয়া গর্ভগৃহ। আলো আঁধারিতে ঢাকা সরু সিঁড়ি দিয়ে কয়েক ধাপ নেমে পৌঁছলাম গুহামন্দিরের নীচে। পাথরের চ্যাপ্টা বেদির ফাটল দিয়ে গলগল করে জল বেরিয়ে দেবীকুণ্ডে জমা হচ্ছে। অন্ধকারাচ্ছন্ন গুহার ভিতরে পুরোহিত হাত ধরে জল স্পর্শ করালেন। পুরোহিতের সঙ্গে স্বর মিলিয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করি— ‘কামাখ্যা বরদে দেবী নীলপর্বতবাসিনী। /ত্বং দেবী জগতাং যোনির্মুদ্রে নমোহস্তুতে।।’ প্রতিবছর অম্বুবাচী মেলার সময় কামাখ্যা দেবীর ঋতুমতী হওয়ার ঘটনাকে উদযাপন করা হয়। সেই সময় দেবীকুণ্ডের জল লালবর্ণ ধারণ করে। পবিত্র জলে চুবিয়ে বস্ত্রখণ্ড হাতে দেন পূজারি। প্রণাম করে এক আনন্দময় অনুভূতি অনুভব করি।
কামাখ্যাদেবীকে পুজো দিয়ে সেদিনই গুয়াহাটি রেলস্টেশন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে চেপে পড়লাম। গুয়াহাটি থেকে শিলং ১০৫ কিমি। কালো পিচের রাস্তার দু’পাশে ঢেউ খেলানো জমির উপরে যেন সবুজ গালচে পাতা। সবুজ পাহাড়ের কাঁধে মাথায় মেঘের আনাগোনা। ভিজে বাতাসে স্নেহের পরশ। এক বিস্তৃত জলাভূমির পাশ দিয়ে বাস রাস্তা। বড়াপানি। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে বিশালাকৃতি দেহকে লুকিয়ে রেখেছে মনোমুগ্ধকর এক সবুজ হ্রদ। কাব্যিক নাম উমিয়াম। খাসি ভাষায় উমিয়ম শব্দে অর্থ চোখের জল। বিরাট হ্রদের মাঝখানে একটা পাহাড় তার নাম লাংপেংডং।
ইংরেজরা ছবির মতো করে সাজিয়ে ছিল শিলংকে। বর্তমান মেঘালয়ের রাজধানী। শিলং ১৮৩২ সাল থেকে অসমের রাজধানী ছিল। অসম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ১৯৭২ সালে, ভারতের ২১তম রাজ্য মেঘালয়ের জন্ম হয়। খাসি, জয়ন্তি আর গারো পাহাড় নিয়ে গড়ে উঠে মেঘালয় রাজ্য।  
সাড়ে তিনঘণ্টা বাস জার্নির পর শিলং শহরে পৌঁছে রোমাঞ্চিত হয়ে উঠি। পর্যটকদের কাছে শিলং হল প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড। কিন্তু বাঙালিদের কাছে শিলং পরিচিত রবি ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাসের অমিত-লাবণ্যর রোমান্টিক বিচরণভূমি হিসাবে। কবিগুরুর প্রিয় জায়গা শিলং। তিনি এখানে তিনবার এসেছিলেন। ১৯১৯ সালে ব্রুকসাইড বাংলোয় থাকাকালীন লিখেছিলেন ‘শেষের কবিতা’। ১৯২৩ সালে রিলবং-এর জিৎভূমি বাংলোয় থাকার সময়ে সৃষ্টি হয়েছিল ‘রক্তকরবী’, ‘শিলঙের চিঠি’। কবি শেষবার এসেছিলেন ১৯২৭ সালে। পুলিস বাজারের বুকিং করা হোটেলে চেক-ইন করে প্রথমেই ছুটলাম কবির স্মৃতিধন্য ব্রুকসাইড বাংলো দেখতে। বাংলোতে পৌঁছবার রাস্তাতেই আচমকা এক দুর্ঘটনায় অমিতের সঙ্গে লাবণ্যর সাক্ষাৎ হয়েছিল। ‘আঁকাবাঁকা সরু রাস্তা, ডানদিকে জঙ্গলে ঢাকা খাদ। এ রাস্তার শেষ লক্ষ্য অমিতের বাসা। সেখানে যাত্রী সম্ভাবনা নেই, তাই সে আওয়াজ না করে অসতর্কভাবে গাড়ি হাঁকিয়ে চলেছে।...এমন সময়ে হঠাৎ একটা বাঁকের মুখেই এসে দেখলে আর একটা গাড়ি উপরে উঠে আসছে। পাশ কাটাবার জায়গা নেই। ব্রেক কষতে কষতে গিয়ে পড়ল তার উপরে। পরস্পর আঘাত লাগল, কিন্তু অপঘাত ঘটল না।... একটা মেয়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়াল’ এই পথই অমিত আর লাবণ্যর মধ্যে বেঁধে দিয়ে ছিল এক বন্ধনহীন গ্রন্থি।
‘পৌঁছে গেছি’— ড্রাইভারের ডাকে ফিরে এলাম বাস্তবে। পাইন গাছে ঘেরা এক সুন্দর পরিবেশ। ২০১১ সালে কবিগুরুর আবক্ষ ব্রোঞ্জমূর্তি বসানো হয়েছে বাংলোর সামনে। সরকারি তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত বাংলোর একটা ঘরে কবিগুরুর ব্যবহৃত খাট। তবে বসার ঘরের সোফা আর অন্যান্য আসবাবগুলো নতুন। ভিতরের আর্ট গ্যালারিতে স্থানীয় শিল্পীদের বেশকিছু পেন্টিং। 
ফুল আর মেঘের শহর শিলংয়ের মায়াময় স্নিগ্ধ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পায়ে হেঁটে ঘুরতে হয়, কিন্তু আমরা সমতলের লোক, পাহাড়ি শহরে পায়ে হেঁটে ঘোরা কষ্টকর। তার উপর শোচনীয় সমস্যা হল সময়াভাব। তাই গাড়ি ভাড়া করতে হল। শিলংয়ের আসল সৌন্দর্য তার নির্মল প্রকৃতি আর সবুজ ল্যান্ডস্কেপ। সুন্দর মসৃণ রাস্তার দু’পাশে পাইন গাছের সারি। পাইন গাছের মাঝেমাঝে ছবির মতো সুন্দর স্কুলবাড়ি, চার্চ, খেলার মাঠ। উদ্ধত শাখার শিখরে রডোডেনড্রনগুচ্ছ প্রকৃতিকে করে তুলেছে আরও মোহময়। 
শিলং শহর থেকে ষোলো কিমি দূরে মেঘালয় রাজ্যের উচ্চতম শিলংপিক। বায়ুসেনার অধীনস্থ ৬৪৫০ ফুট উচ্চতার এই জায়গা থেকে পাখির চোখে দেখে নেওয়া যায় পুরো শহরকে। চত্বরটায় পর্যটকদের ভিড়। খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ফুলের সাজে সজ্জিত হয়ে অনেকেই ছবি তুলছেন। নামবার পথে দেখলাম শিলং গলফ কোর্ট। ৫২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত গলফ কোর্টটি দেশের অন্যতম পুরনো ও এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম। ঢেউ খেলানো পাহাড়ের বিস্তার, সবুজ ঘাসের কার্পেট আর পাইন বনের শোভার এক অপূর্ব কোলাজ। এরপর ড্রাইভার আমাদের নিয়ে গেল এলিফ্যান্ট ফলস দেখাতে। জিজ্ঞাসা করলাম, জলপ্রপাতের নাম এলিফ্যান্ট ফলস হল কেন? সে বলল, খাসি জনগোষ্ঠীর মানুষেরা প্রাথমিক ভাবে নাম দিয়েছিল, কা-ক্সাইদ-লাই-পাটেং-খোসিও, অর্থাৎ তিন ধাপ বিশিষ্ট জলপ্রপাত। প্রপাতের উপরের দিকের বিরাট একটা পাথরকে হাতির রূপ কল্পনা করে ব্রিটিশরা নাম রেখেছিল এলিফ্যান্ট ফলস। তবে ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে পাথরটি ভেঙে পড়ে।
শিলং শহরের পাঁচ কিমি দূরে দুই যমজ জলপ্রপাত বিডন আর বিশপ। একই পাহাড় থেকে নেমে এসেছে দুটি ঝর্ণা, বামদিকে বিডন আর ডানদিকে বিশপ। সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা দুধসাদা দুই জলপ্রপাত মুগ্ধতার আবেশ সৃষ্টি করে। কোরিন্থীয় স্থাপত্যে তৈরি আকাশি নীল রঙের বিরাট ক্যাথলিক চার্চটি শিলং শহরের আইকন। চার্চ দেখে আমরা গেলাম ওয়াংখার বাটার ফ্লাই মিউজিয়াম দেখতে। সে এক আশ্চর্য সংগ্রহশালা। হরেক রকমের প্রজাপতি, মথ, গুবরে পোকা আর মাকড়সায় সম্বৃদ্ধ সংগ্রহশালা। 
এক জায়গায় গাড়ি থামিয়ে ড্রাইভার বলল, এটাওয়ার্ডস লেক। খানিকটা ঢালু আঁকাবাঁকা ছায়াপথ ধরে এগলাম। অনেকটা জায়গা জুড়ে একটা অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ আর বাগান। হ্রদের উপরে কাঠের তৈরি সুন্দর সেতু। বোটিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। স্যর উইলিয়ম ওয়ার্ডসের পরিকল্পনায় এই লেক তৈরি হয়েছিল। 
পরদিন চললাম চেরাপুঞ্জি। শিলংপিক থেকে উৎপন্ন উমিয়াম নদীর দুই তীরে চেরাপুঞ্জি ও মৌসিনরাম নদী। এর বাঁদিকে চেরাপুঞ্জি, স্থানীয়রা বলেন সোহরা। ১৮৩২ সাল থেকে অসমের রাজধানী ছিল, পরে রাজধানী শিলংয়ে স্থানান্তরিত হয়। শিলং থেকে চেরাপুঞ্জি পর্যন্ত লম্বা জার্নি। চারদিকে শুধু সবুজের সমারোহ। ভিজে মাটি, প্রাণবন্ত অরণ্য আর বাতাসে ভেসে বেড়ানো বৃষ্টির কণা। অদ্ভুত এক জাদু বাস্তবতায় সম্মোহিত পথ চলা। বৃষ্টিস্নাত এক অনাঘ্রাতা কন্যার রূপের মোহজালে মোহিত হয়ে যাই। চেরাপুঞ্জির মায়াবী পথে চলতে চলতে চোখে পড়ল একটা হোডিং—‘হেডিং টু ক্লাউডস, ফিট ফার্মলি অন গ্রাউন্ড।’ সত্যিই আমরা যেন মেঘের রাজ্যে ঢুকে পড়েছি। 
মকডওভ্যালি ভিউ পয়েন্ট। সিঁড়ি দিয়ে বেশ কিছুটা নামলে রেলিং দিয়ে ঘেরা একটা চওড়া প্রাঙ্গণ। সমানে যেন দিগন্ত প্রসারিত গ্রিন ক্যানিয়ন। দু’ধারের পাহাড় ঢালু হয়ে এক জায়গায় মিশেছে। নীল আকাশের পটভূমিকায় সে এক অসাধারণ দৃশ্য। 
চেরাপুঞ্জি পৌঁছে বাস আমাদের এক জায়গায় নামিয়ে দিল, ইকো পার্ক। সিঁড়ি দিয়ে কিছুটা নামতে সামনে এক বিরাট সমতল এলাকার ভিতর দিয়ে একটা পাহাড়ি ঝোরা এগিয়ে গিয়ে পাহাড় থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ছে অনেক নীচে। ক্ষণে ক্ষণে নীচ থেকে মেঘ ভেসে এসে সমস্ত এলাকা ঢেকে দিচ্ছে। মেঘের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে খেলতে আধঘণ্টা সময় কোথা দিয়ে কেটে গেল। ঘোর কাটল বাসের হর্নের আওয়াজে। রামকৃষ্ণ মিশন হয়ে আমাদের পরের গন্তব্য মওসমাই গুহা।   
চেরাপুঞ্জির সেরা আকর্ষণ এটি। টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকলাম। কিছুটা এগতেই পৌঁছে গেলাম এক দারুণ জায়গায়। সামনে সবুজ আর খয়েরি রঙের মেশামেশি বিস্তৃত উপত্যকা। পাহাড়ের একটা খাঁজের ভিতর দিয়ে গুহার মধ্যে প্রবেশ করলাম। ১৫০ মিটার লম্বা গুহার ভিতরে কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা আছে। স্ট্যালাকটাইট ও স্ট্যালাগমাইটের প্রাকৃতিক ভাস্কর্যের মধ্যে রয়েছে কল্পনার অবকাশ। আঁকাবাঁকা গা ছমছমে রহস্যময় সরু সুড়িপথ ধরে কখনও নিচু হয়ে কখনও বা প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে এগতে থাকলাম। হঠাৎ দেখলাম সামনে জল জমে আছে, তার উপর দুটো কাঠের তক্তা। তক্তাদুটো আমাদের দেহের ভার নিতে পারবে কী? যা থাকে কপালে এতদূরে এসে শেষ না দেখে ফিরব না। মনে জোর করে ধীরে ধীরে পার হয়ে গেলাম। এক জায়গায় পথ এতটাই সরু যে ভয় হয়েছিল গলতে পারব তো! যে পথ দিয়ে আমাদের মতো আনাড়ি পর্যটকরা যাচ্ছে তার ডাইনে বাঁয়ে দুটো পথ দেখলাম। সেই পথে কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা নেই। টর্চ ফেললে আলো হারিয়ে যায় রহস্যময় গুহাপথের অভ্যন্তরে। আমাদের পূর্বপুরুষেরা বাস করত এইরকম সব গুহার ভিতরে। গুহার দেওয়ালে বিভিন্ন প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীর জীবাশ্ম। প্রকৃতি আর মহাকালের কাছে নিজেদের কত ক্ষুদ্র, অকিঞ্চিতকর বলে মনে হয়। 
গুহার স্ট্যালাকটাইটের স্তরে বিজ্ঞানীরা নবীনতম প্রস্তরযুগের সন্ধান পেয়েছেন। ১১৭০০ বছরের বিশ্বের বিবর্তনের ইতিহাসকে বলা হয় ‘হলোকেন ইপক’। তারই নবীনতম অধ্যায় হল মেঘালয় এজ, যার বয়স মাত্র ৪২০০ বছর। ২০০ বছর ব্যাপী এক ভয়ানক খরা সদৃশ পরিস্থিতির ফলে মিশর, মেসোপটেমিয়া, সিন্ধু ও ইয়ংসে নদীর অববাহিকার কৃষিভিত্তিক সভ্যতা ধ্বংস হয়েছিল। মেঘালয়ের সোহরার গুহার স্ট্যালাকটাইটের স্তরে নতুন যুগের যে নমুনা মিলেছিল, পরবর্তীকালে তার প্রমাণ সাতটি মহাদেশেই পাওয়া যায়। 
গুহার প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে দেখি উপর থেকে সূর্যের আলো আসছে। সামান্য পনেরো মিনিট সময় গুহার ভিতরে ছিলাম। তবু বাইরের মুক্ত প্রকৃতির আলো বাতাস মনে এক অনির্বচনীয় আনন্দে এনে দিল। দেখলাম সেভেন সিস্টার্স ফলস! পাহাড়ের ধারে রেলিং দিয়ে ঘেরা একটা জায়গা থেকে ওপাশের পাহাড়ের গায়ে পরপর সাতটা ঝর্ণা দেখা যায়। ঘন সবুজ গালচে ভেদ করে নেমে আসছে দুধ সাদা জলের ধারা। সাতটা কোথায়? গুনলে তার থেকে বেশিই হবে মনে হয়। মেঘের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে বেশ কয়েকটা ছবি তুললাম। 
বাংলাদেশের সমতলভূমি থেকে খাড়া উঠে গেছে পাহাড়ের পাঁচিল। তারই উপরে চেরাপুঞ্জি। নীচ থেকে দল বেঁধে উঠে আসছে মেঘের দল। দৃশ্যমানতা কমে যাচ্ছে শূন্যের কাছাকাছি আবার পরক্ষণেই সেইসব মেঘ সরে গিয়ে রোদ ঝলমল করে উঠছে। অনেকটা নীচে নকশিকাঁথার মাঠের মতো দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের সমতল ক্ষেত্র। 
পরের দ্রষ্টব্য নুহ্-লিকাই ফলস। এই জলপ্রপাতের সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটা মর্মন্তুদ কিংবদন্তির গল্প। বাসের গাইডের কাছে শুনেছিলাম সেই কাহিনি। কাছের গ্রামে থাকতেন লিকাই নামে এক খাসি রমণী। অল্প বয়সে শিশুকন্যা নিয়ে তিনি স্বামীহারা হলে দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন। অর্থ উপার্জনের জন্য সারাদিন তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হতো। সারাদিন মেয়েকে তিনি দেখাশোনা করতে পারতেন না, তাই দিনের শেষে বাড়ি ফিরে সেই ঘাটতি পূরণ করতে চাইতেন। লিকাইয়ের দ্বিতীয় স্বামীর ছিল তা ঘোর অপছন্দ। একদিন লিকাইয়ের অনুপস্থিতির সুযোগ সেই দ্বিতীয় স্বামী মেয়েটিকে খুন করে তার মাংস রান্না করে রেখে দেয়। কাজ থেকে ফিরে ক্ষুধার্ত পরিশ্রান্ত লিকাই কিছু না জেনে সেই মাংস খান। খাবার পর মাংসের বাটিতে দেখলেন একটা ছোট্ট আঙুল। প্রচণ্ড আতঙ্কে কেঁপে উঠে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তার অনুপস্থিতির সুযোগে তার দ্বিতীয় স্বামী কী ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটিয়েছেন। শোকে দুঃখে উন্মত্ত হয়ে লিকাই উঁচু জলপ্রপাতের উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সেই থেকে জলপ্রপাতের নাম নুহ্- লিকাই ফলস। অর্থাৎ যেখান থেকে লিকাই পড়ে গেছেন। শ্যাওলা ঢাকা গাঢ় সবুজ পাহাড় থেকে প্রচণ্ড বেগে ঝরে পড়া জলপ্রপাতের অসাধারণ সৌন্দর্যের দিকে তাকিয়েও বেদনায় দগ্ধ হতে হয়। ভাবি কাহিনিটি না জানলেই বোধহয় ভালো হতো।
মেঘালয় ভ্রমণের তৃতীয় দিন বাংলাদেশ সীমান্তে ডাওকি আর মাওলিনং গ্রাম যাওয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া করলাম। শিলং শহর থেকে ৮৩ কিমি দূরে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ডাওকি গ্রাম। পাশ দিয়ে বয়ে চলা উমংগট নদী বেঁধে রেখেছে দুই প্রতিবেশী দেশকে। নদীর উপরে ১৯৩২ সালে নির্মিত বেইলি ব্রিজ পার চলে যাওয়া যায় জিরো পয়েন্টে। এটি মেঘালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থল বন্দর। ওপাশে বাংলাদেশের তামাবিল। চলতে চলতে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঢুকে পড়ি এক অপার্থিব অপার সৌন্দর্যের পরাবাস্তব জগতে। যেখানে শুধু মেঘেরই আনাগোনা। আবছা আঁধারে মমতার মতো মেঘ ঘিরে রেখেছে আমাদের। গাড়ি যেখানে নামিয়ে দিল সেখান থেকে অনেকটা নীচে উমংগট নদীর চর। ওপাশে ঝুলন্ত সেতু। অত্যাশ্চর্য পান্নাসবুজ রঙের তিরতিরে বয়ে যাওয়া স্বচ্ছ জলের বুকে ভেসে বেড়ানো রংবেরঙের পানসি নৌকাগুলোর অমোঘ আকর্ষণ উপেক্ষা করতে পারলাম না। 
ডাওকি থেকে ফিরতি পথে রিওয়াই গ্রামে দেখলাম লিভিং রুট ব্রিজ। গাড়ি থেকে নেমে বনের ভিতর দিয়ে এবড়ো খেবড়ো পাথুরে ভাঙাচোরা ধাপ পেরিয়ে অনেকটা নামতে হল। পাহাড়ের উপর থেকে পায়ে পায়ে নেমে এলাম একেবারে নদীর কাছাকাছি। জীবন্ত গাছের মূল দিয়ে তৈরি সেতু! চোখে না দেখলে এ জিনিস বিশ্বাস করা শক্ত। ছোট ছোট খরোস্রোতা নদী পারাপার করার জন্য খাসি জাতির লোকেরা সুপারি গাছের কাণ্ড লম্বালম্বিভাবে অর্ধেক চিরে ফেলে ভিতরটা ফাঁপা করে নেয়। যেখানে সেতুর প্রয়োজন সেখানে এই কাণ্ডগুলোকে এমনভাবে রাখা হয় যাতে রবার গাছের শিকড়ের মধ্যে দিয়ে ক্রমশ বাড়তে বাড়তে একসময় নদীর অপরপাড়ে পৌঁছে গিয়ে মাটির ভিতরে প্রবেশ করে। কখনও কখনও দু’পারের দুটি রবার গাছের শিকড়কে অপর পারে নিয়ে যাওয়া হয়। কালক্রমে শিকড় শক্তপোক্ত হয়ে গেলে ঝুরির মাঝের ফাঁকফোকর পাথর দিয়ে বোজানো হয়। তবে এইভাবে সেতু তৈরি হতে বেশ কয়েকবছর সময় লাগে। প্রকৃতি আর মানুষের সহাবস্থানের এক অদ্ভুত নিদর্শন। সবুজ হলদে পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা স্বচ্ছ জলধারা পার হলাম জীবন্ত সেই সেতুর উপর দিয়ে। 
ডাওকি থেকে ফেরবার রাস্তায় পড়ে মাওলিনং গ্রাম। এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম হিসাবে স্বীকৃত এই গ্রাম। মানুষজন এক অভিনব গ্রাম্য সমাজের আওতায় গ্রামটিকে পরিচালনা করে, পরিচ্ছন্নতাই যার মূল মন্ত্র। বেশকিছু ঘরবাড়ি, হোমস্টে, রিসর্ট, আর দোকানপাট ব্যস, এই নিয়েই গ্রাম। স্রোতের মতো পর্যটকরা গ্রামে আসেন। পর্যটন শিল্পই গ্রামবাসীদের আয়ের প্রধান উৎস। গ্রামের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা হারিয়ে মাওলিনং হয়ে উঠেছে এক পর্যটনকেন্দ্র। গ্রামের প্রতিটা আঁকাবাঁকা রাস্তার ধারে বাহারি ফুলগাছ। বাড়িতে বাড়িতে নানরকমের হস্তশিল্পের পশরা নিয়ে বসেছেন স্থানীয়রা। মাওলিনং নাকি গ্রাম নয়, তা ভাববার অবকাশ কোথায়? 
আলো ঝলমলে সুন্দর পরিবেশে দিনটা শুরু হলেও কিছুক্ষণ পরই আচমকা শুরু হল বৃষ্টি। মনটা খারাপ হয়ে গেল। আসলে শিলংয়ের প্রকৃতি বড়ই খামখেয়ালি, সে নিজের মর্জি মতো চলে। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে চলে এলাম শিলং স্টেট মিউজিয়াম। মেঘালয়ের আদিবাসী জীবনযাত্রার এক সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা। আদিবাসী জীবনযাত্রার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী উৎসব অনুষ্ঠানের মডেল সাজানো রয়েছে কাচের শোকেসে। রংচংয়ে পোশাক পরিহিত খাসি নৃত্যানুষ্ঠান শাডসুক মেনসিয়েম। বসন্ত সমাগমে ভালো ফসল এবং সুখে শান্তিতে বসবাসের জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এই নৃত্য-উৎসব পালন করে খাসিয়ারা। আর একটা মডেলের সামনে দাড়িয়ে গেলাম। কাঠ, রঙিন কাগজ, রাংতা দিয়ে সাজানো লম্বা কাঠের গুঁড়ি নিয়ে একদল লোক শোভাযাত্রা করছে। জয়ন্তিয়াদের বেহিডয়েনখলাম উৎসব। বর্ষার প্রারম্ভে শস্যরক্ষা ও শস্য আকাঙ্ক্ষায় জয়ন্তিয়ার এই উৎসব পালন করেন। বেহিডয়েনখলাম মানে গাছ দিয়ে মারীশক্তি বা মারীপ্রেতকে হটানো। আদিবাসীদের বাদ্যযন্ত্র, পোশাক, অস্ত্রশস্ত্রের প্রদর্শনী দেখতে দেখতে এগিয়ে যাই। শিলংয়ে থাকায় মেয়াদ একসময় শেষ হয়। ঘরে ফেরার পথে স্মৃতি হিসাবে নিয়ে চলি প্রাচ্যের স্কটল্যান্ডের মোহময় সৌন্দর্যের একরাশ মুগ্ধতা!
ছবি : লেখক

19th  September, 2024
রাত্রিটা ভালো নয়

এটাই শেষ ট্রেন ছিল। স্টেশন থেকে বাইরে বেরিয়ে পথিক দেখল, চারদিকটা খুব ফাঁকা লাগছে। শীতকাল বলেই কী? নইলে এত তাড়াতাড়ি তো রাস্তাঘাট এমন শুনশান হয় না। তার পক্ষে অবশ্য এটা ভালোই। ভিড় থাকলে রিকশ পাওয়া দুষ্কর। আবার বেশি ফাঁকা হলেও রিকশওয়ালাগুলো সব পিটটান দেয়।
বিশদ

15th  September, 2024
ফেরা
ছন্দা বিশ্বাস 

সোপান সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বলল, ‘তাহলে কী ঠিক করলি?’ পরমের হাতে সিগারেটটা অসহায়ভাবে পুড়ছিল। ওরা ফ্রাঙ্কফুর্ট স্টেশনে ঢোকার মুখে বাঁ-পাশে একটা স্মোকিং জোনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। কয়েকজন জার্মান যুবতী দ্রুত সিগারেট নিঃশেষ করে ভিতরে ঢুকে গেল।  বিশদ

08th  September, 2024
গগনবাবু ও প্যাংলা তাপস
রম্যাণী গোস্বামী

গগনবাবু একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মোটামুটি উপরতলার কর্মী। যাদবপুরে নিজেদের ফ্ল্যাট। মাস গেলে ইএমআই বাদ দিলে মাঝারি ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স, কয়েকটা মিউচুয়াল ফান্ড, হৃষ্টপুষ্ট গিন্নি, ফ্যাশানেবল কলেজ পড়ুয়া কন্যা এবং একটি মাহিন্দ্রা কেইউভি— এই হল মোটামুটি তাঁর সম্পত্তির খতিয়ান। বিশদ

01st  September, 2024
গুপ্ত রাজধানী: হনুমান মহারাজজি
সমৃদ্ধ দত্ত

 

সেই গল্পটা তো আমাদের সকলেরই জানা। মহাশক্তিশালী ভীম হস্তিনাপুর যাওয়ার পথে একটি জঙ্গল পেরচ্ছিলেন। তাঁর শরীরে তো একশো হাতির শক্তি। সেকথা সর্বজনবিদিত। দ্বিতীয় পাণ্ডব নিজেও সেকথা জানেন। সোজা কথায় তাঁর নিজের বাহুবল নিয়ে যে গর্ব ছিল একথাও অবগত আমরা।  বিশদ

01st  September, 2024
ছেলের সঙ্গে দেখা
সন্দীপন বিশ্বাস

বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল সুভদ্রার। ঝাপানডাঙা স্টেশনে সে বসে আছে। এখানে এসেছিল এক গুরুবোনের বাড়ি। ফিরে যাচ্ছে উত্তরপাড়ায়, নিজের ঘরে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। এখনও কয়েকটা কাক ডাকছে। কেমন ক্লান্ত স্বর ওদের। স্টেশনের শেডের ওপর বসে কাকগুলো। বিশদ

25th  August, 2024
ঘাটশিলার বীরেশ
রাজেশ কুমার

ব্যাগ বোঁচকা আর এক কিলো পুঁটিমাছ নিয়ে সকাল সকাল পড়লাম এক অশান্তিতে। হয়েছেটা কী, দু’দিনের জন্য ঘুরতে এসেছিলাম ঘাটশিলা। ঠিক ঘুরতে না বলে শনির দশা কাটাতেই বলা ভালো। অনেক দিন বেড়াতে যাব, বেড়াতে যাব ভাবলেও যাওয়া হচ্ছিল না কোথাও। কিছু না কিছু বিপত্তি এসে হাজির হচ্ছিল ঠিক। বিশদ

18th  August, 2024
অভিশপ্ত কুলধারা

অলৌকিক তকমা স্থান-নামের সঙ্গে আলাদা মাত্রা যোগ করে। অলৌকিক ব্যাপার নিয়ে বিশ্বাসী অবিশ্বাসী দু’পক্ষেরই নিজস্ব দাবিদাওয়া আর মতামত অন্তহীন।
  বিশদ

11th  August, 2024
দিল্লি দরবার
সমৃদ্ধ দত্ত

এমন কিছু নতুনত্ব নয়। এরকম দরবার এবং উৎসব আগেও হয়েছে। একবার সেই ১৮৭৭ সালে। ভারতের শাসনভার নিজের হাতে তুলে নেওয়ার বেশ কয়েক বছর পর মহারানি ভিক্টোরিয়ার ‘বিশেষ অভিষেক’ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল।
বিশদ

11th  August, 2024
হেড অফিসের বড়বাবু

বার দশেক হোঁচট খেয়ে প্রায় পড়ে যেতে যেতে নিজেকে সামলে নিয়ে পার্থ এসে দাঁড়াল অফিসের গেটে। পার্থ বড়ুয়া। জুনিয়র অফিসার।
বিশদ

11th  August, 2024
ছোট গল্প: মাগুরমারি সাঁকো
সৌমিত্র চৌধুরী

বাঁকের মুখে স্টিয়ারিং ডান দিকে ঘুরাতেই চোখে পড়ল। একটা সাঁকো। মনে হচ্ছে বেশ পুরনো। দূর থেকে ব্রেকে আলতো করে পা ছোঁয়াল বিপুল। চাকা গড়িয়ে গড়িয়ে কিছুদূর এগল। পুলের কাছে আসতেই ব্রেকে আরও একটু চাপ দিয়ে থামিয়ে দিল। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল বিপুলের। বিশদ

04th  August, 2024
গুপ্ত রাজধানী: লালকেল্লা
সমৃদ্ধ দত্ত

জায়গাটা অনেকটাই কম। যেভাবে সাম্রাজ্য ছড়াচ্ছে আর হিন্দুস্তানের বাইরে থেকে আরও দলে দলে সমস্ত স্তরের মানুষ ভাগ্যান্বেষণে ক্রমাগত এসেই চলেছে, এরপর তো রাজধানীটাই ঩ঘিঞ্জি হয়ে যাবে। আরও বেশি খোলামেলা জায়গা দরকার। কোথায় নিয়ে যাওয়া যায় রাজধানী? বিশদ

04th  August, 2024
অতীতের আয়না: সাহেবদের হুঁকো বিলাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

মহিলা দিন কয়েক হয়েছে বিলেত থেকে এসেছেন এদেশে। এদেশীয় এক বিদুষী মেমসাহেবের সঙ্গে মহিলার বন্ধুত্ব হয়েছে। তার মতো খাঁটি ইংলিশ নন, তবে যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা হওয়ায় বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করার জন্য তার বাড়িতে এসে দেখেন শ্রীমতী হেয়ার-ড্রেসারের তত্ত্বাবধানে কবরী সজ্জায় ব্যস্ত। বিশদ

04th  August, 2024
ছোট গল্প: জামাইয়ের মোবাইল 
বিপুল মজুমদার

হ্যালো অর্পি, শোন মা, সামনের জামাইষষ্ঠীতে ওঙ্কারকে একটা স্মার্টফোন দিতে চায় তোর বাবা। তা তোদের যদি কোনও চয়েস থাকে, ইয়ে মানে কোনও কালার বা কোম্পানি, তাড়াতাড়ি সেটা জানিয়ে দিস তো ভালো হয়।’ বিশদ

28th  July, 2024
আমির খসরু ও বসন্ত উৎসব
সমৃদ্ধ দত্ত

সুফি সাধক হজরত নিজামউদ্দিনের কাছে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসে শান্তির খোঁজে। স্বস্তির সন্ধানে। নিবেদিত প্রাণ নিয়ে তাঁরা সকল দুঃখ-দুর্দশা, ক্ষোভ ক্রোধের আহুতি দিতে চায় এখানে। এই নিজামউদ্দিনের কাছে। তিনি তো সাধারণ সাধক নন। বিশদ

28th  July, 2024
একনজরে
সুহেল ভাটের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান খেলে জেমি ম্যাকলারেনের শট জালে জড়াতেই কোচ হোসে মোলিনার চোখেমুখে তৃপ্তির হাসি। মরশুমের শুরু থেকেই তারকা অজি স্ট্রাইকারের চোট ...

প্লাবিত এলাকায় কোনও মানুষের যাতে অসুবিধা না হয়, তা দেখার জন্য সিউড়ির বিধায়ককে ফোন করে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ...

বিশ্বকর্মা পুজোর দিন নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় মাতলেন গ্রামবাসীরা। মঙ্গলবার বামনগোলা থানা সংলগ্ন টাঙন নদীতে বাইচ প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে মানুষের ঢল নামে। বামনগোলা ও গাজোল ব্লকের মাঝামাঝি টাঙন নদীতে এই প্রতিযোগিতায় দুটি ব্লকের প্রচুর মানুষ জমায়েত হন। ...

নিউইয়র্কের বিএপিএস স্বামীনারায়ণ মন্দিরে হামলার নিন্দা করলেন মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা। এই ঘটনাকে ‘ধর্মান্ধতা এবং নিন্দা’র বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মের প্রসার ও উপার্জন বৃদ্ধির যোগ। গৃহ পরিবেশে চাপা উত্তেজনা। পেশার প্রসার। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

আন্তর্জাতিক সফটওয়্যার স্বাধীনতা দিবস
বিশ্ব নৌ দিবস
১৫০২- কোস্টারিকা আবিষ্কার করেন ক্রিস্টোফার কলম্বাস
১৮৯৯- সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদ রাজনারায়ণ বসুর মৃত্যু
১৯০৫- সুয়েডীয়-মার্কিন অভিনেত্রী গ্রেটা গার্বোর জন্ম
১৯২৩- ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়
১৯২৪- হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির জন্য মহাত্মা গান্ধী অনশন শুরু করেন
১৯৫০- অভিনেত্রী শাবানা আজমির জন্ম
১৯৭৬- ব্রাজিলের ফুটবলার রোনাল্ডোর জন্ম
২০০৬- ফুটবলার সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.০৭ টাকা ৮৪.৮১ টাকা
পাউন্ড ১০৮.৬৫ টাকা ১১২.২০ টাকা
ইউরো ৯১.৫৭ টাকা ৯৪.৭৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
17th  September, 2024
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৩,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,১০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭০,৪০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৮,৫০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৮,৬০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
17th  September, 2024

দিন পঞ্জিকা

২ আশ্বিন, ১৪৩১, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। পূর্ণিমা ৬/৩৩ দিবা ৮/৫ পরে কুম্ভ প্রতিপদ ৫৭/১০ রাত্রি ৪/২০। পূর্ব ভাদ্রপদ নক্ষত্র ১৩/৫০ দিবা ১১/০। সূর্যোদয় ৫/২৭/৪২, সূর্যাস্ত ৫/৩৩/৫৬। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/১৫ মধ্যে পুনঃ ৭/৪ গতে ৭/৫৩ পুনঃ ১০/১৮ গতে ১২/৪৪ মধ্যে। রাত্রি ৬/২২ গতে ৭/১০ মধ্যে পুনঃ ৮/৪৫ গতে ৩/৫ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ প্রাতঃ ৬/১৫ গতে ৭/৪ মধ্যে পুনঃ ১/৩২ গতে ৩/৫৮ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৯ গতে ১০/০ মধ্যে পুনঃ ১১/৩১ গতে ১/১ মধ্যে। কালরাত্রি ২/২৯ গতে ৩/৫৮ মধ্যে। 
১ আশ্বিন, ১৪৩১, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। পূর্ণিমা দিবা ৮/৪৮। পূর্বভাদ্রপদ নক্ষত্র দিবা ১২/৫৫। সূর্যোদয় ৫/২৭, সূর্যাস্ত ৫/৩৬। অমৃতযোগ দিবা ৬/২১ মধ্যে ও ৭/৮ গতে ৭/৫৪ মধ্যে ও ১০/১৪ গতে ১২/৩৩ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/১ গতে ৬/৫১ মধ্যে ও ৮/৩০ গতে ৩/৬ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৬/২১ গতে ৭/৮ মধ্যে ও ১/১৯ গতে ৩/৩৯ মধ্যে। কালবেলা ৮/২৯ গতে ১০/১ মধ্যে ও ১১/৩২ গতে ১/৩ মধ্যে। কালরাত্রি ২/২৯ গতে ৩/৫৮ মধ্যে।
১৪ রবিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
উত্তরপ্রদেশের মথুরায় লাইনচ্যুত একটি মালগাড়ি

11:18:00 PM

এখনও এক লক্ষ কুড়ি হাজার কিউসেক জল ছাড়ছে ডিভিসি

10:46:00 PM

বিহারের কৃষ্ণনগরে একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ দুষ্কৃতীদের, হতাহতের খবর নেই

10:36:00 PM

নবান্ন সভাঘরে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক শেষ

09:47:00 PM

এসিএল-২ : মোহন বাগান বনাম রাভশানের ম্যাচ গোলশূন্য ড্র

09:26:00 PM

ইজরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল হিজবুল্লা জঙ্গিগোষ্ঠী

09:25:00 PM