Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব  ২৯
জয়ন্ত দে

বর্ণিনীকে নিয়ে সহজ যখন পৌঁছল, তখন বাড়িতে পিশাচসাধু নেই। বঁড়শি একা। সে শোনাল, তার সন্দেহের কথা। বঁড়শির অনুমান, তার বাবা, যোগীনসাধু সহ একাধিক মৃত্যুর নেপথ্যে ক্যাপ্টেনের হাত রয়েছে। নিজের বক্তব্যের সপক্ষে একটি ডায়েরি দেখাল সে। ডায়েরির পাতার ছবি তুলে নিল বর্ণিনী। তারপর...

আকাশে এখনও তারা জ্বলছে। অন্ধকারে সবে আলোর আভা। তবে কিছুই স্পষ্ট নয়, কিন্তু এই সময়ে যেন অনুভব করে সব জেনে নিতে হয়। দোতলা থেকে সহজ দেখেছে বাগানে তার ঠাকুরদা। সে নীচে নেমে এসে দাঁড়াল ঠাকুরদার কাছে। এ বাড়ির চৌহদ্দির গাছপালারা এখন সবে জেগেছে। রাতে রাতে বুড়ো হয়ে যাওয়া পাতা ঝরে পড়ছে টুপ টাপ করে। পাখপাখালিরা বাসার ভেতর কিচিরমিচিরে ব্যস্ত। সারারাত সহজ বই পড়ে আর লেখালিখি করে কাটিয়ে এই ব্রাহ্ম মুহূর্তে নেমে এল নীচে। ওকে দেখেই শশাঙ্ক মিত্র সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন। 
সহজ বলল, ‘তোমার সঙ্গে আমার কিছু কথা আছে।’
‘বলো, বলো।’
‘তোমার আশ্রমের খোঁজ আমি পেয়েছি।’
‘কী!’ শশাঙ্ক মিত্র এক পা এগিয়ে এসে সহজের হাত চেপে ধরলেন। ‘সেখানকার খবর কে দিল তোমাকে?’
‘আমার এক বন্ধু বর্ণিনী, তাকে আমি বলেছিলাম। আশ্রমের ঠিকানাও দিয়েছিলাম। ও আমাকে না জানিয়েই একজনকে নিয়ে ধ্যানযোগ আশ্রমে চলে গিয়েছিল। সে-ই এসে সব খবর দিয়েছে।’
শশাঙ্ক মিত্র এখনও তাঁর নাতির হাতটি ছাড়েননি। বরং যেন আরও জোরে চেপে ধরেছেন। ‘কী বলল সে, আমাকে সম্পূর্ণটা বলো।’
সহজ বলল, ‘ওই আশ্রমে তোমার থাকার জন্য ঘর আছে। তোমার গুরুদেবই নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন, তুমি গেলে কোন ঘরে থাকবে। ওরা বনিকে দেখিয়ে দিয়েছে— ওদের সব আয়োজনই সম্পূর্ণ হয়ে দীর্ঘদিন পড়ে আছে। তোমার কাছে ওঁরা অনেকবার চিঠিও পাঠিয়েছেন, কিন্তু তোমার তরফ থেকে কোনও উত্তর পাননি। তবু তোমার জন্য ঘর আছে। তোমার প্রতীক্ষায়। তুমি যেকোনওদিন সেখানে চলে যেতে পার।’
‘আমি যাব, কবে নিয়ে যাবে আমাকে?’ শশাঙ্ক মিত্র যেন উতলা হয়ে উঠলেন।
‘তার আগে একটা কাজ আছে আমাদের। সেটা হল ট্রাঙ্ক থেকে তোমার সব লেখা সরিয়ে ফেলা। ওই লেখাগুলোর জন্য তুমি গোটা জীবনটা উৎসর্গ করলে। আমরা চাই না, ওই লেখাগুলো ঠাকুমার হাতে যাক।’
কেঁপে উঠলেন শশাঙ্ক মিত্র। ‘না, না, তোমার ঠাকুমা সব জ্বালিয়ে দেবেন। কিচ্ছুটি রাখবেন না। আমি জানি— উনি ভয়ঙ্কর সর্বনাশ করবেন। হয় ছিঁড়ে কুটোকুটি করবেন, নয় আগুন জ্বালাবেন।’
সহজ বিড়বিড় করল, হয়তো পুরো ট্রাঙ্কটাকেই গঙ্গাস্নান করিয়ে ছাড়বেন।
শশাঙ্ক মিত্র উত্তেজিত গলায় বললেন, ‘তুমি যেখানে ইচ্ছে আমার লেখাগুলো নিয়ে যাও।’
‘তোমার লেখা এই বাড়ির ভেতরই থাকবে, আর সেটা অক্ষত। আমি বাবার সঙ্গে কথা বলে নেব। আজ রাত থেকেই তুমি একটু একটু করে বাবার হাতে লেখাগুলো তুলে দেবে।’
‘আমার ঊনত্রিশটা খাতা আছে। আজ রাতে আমি ভেতর ঘরের দরজা খুলে রাখব। তোমরা এসে নিয়ে যাবে।’
‘শোনো তাড়াহুড়োর কিছু নেই। বাবাকে আমি বলে দিচ্ছি, বাবা প্রত্যেকদিন চারটে করে নতুন খাতা তোমাকে দেবে। তুমি সেগুলো ট্রাঙ্কে রেখে দেবে। আর লেখা খাতাগুলো বাবার হাতে তুলে দেবে। বাবা রাতের বেলায় বাড়ির ভেতর ঘোরে, কেউ বাবাকে সন্দেহ করবে না। আমিও যেদিন পারব ভোরে এসে তোমার থেকে দু’-চারটে খাতা নিয়ে যাব।’
‘আজ রাতেই কি সম্বুদ্ধ আমাকে নতুন খাতা দেবে?’
‘আমি বাবাকে বলে দেব। আজ থেকেই এই পাল্টাপাল্টি শুরু হোক।’
‘তুমি কেন এমনটা করছ, আমি বুঝতে পারছি না। আমি তো পুরো ট্রাঙ্কটাই তোমাকে দিয়ে যেতে চাই। তুমিই এর উত্তরাধিকারী।’
সহজ হাসে, ‘তোমার মতোই ঠাকুমাও বাবার খুব প্রিয়। বাবার মা। বাবা চায় না, তার মা যত অন্যায়ই করুক, তাকে আঘাত দিতে। তুমি চলে গেলে ঠাকুমার সব রাগ গিয়ে পড়বে ওই খাতাগুলোর ওপর। তিনি নির্ঘাত ট্রাঙ্কের ভেতর দু’তিন ঘড়া গঙ্গাজল ঢেলে দেবেন। ওঁর এই কাজে আমরা কোনও আপত্তি করব না। ওঁর রাগ উনি মেটাবেন আর—।’
শশাঙ্ক মিত্র মাথা নিচু করলেন, ‘ঠিক আছে, যা ভালো বোঝো তোমরা করো। তুমি দাঁড়াও তোমাকে ক’টা খাতা দিয়ে দিই।’
‘আজ নয়, অচলদা ঘুম থেকে এতক্ষণে উঠে পড়েছে। ট্রাঙ্কের তালা খোলার শব্দ হলে দেখবে। তার চেয়ে বরং, তুমি চার-পাঁচটা খাতা বের করে রেখে দিও, রাতে বাবা ঠিক তোমার কাছে আসবে।’
দিনের আলো বেশ ফুটে গিয়েছে। নিঝুম পৃথিবী জেগে উঠছে একটু একটু করে। শশাঙ্ক মিত্র চলে যেতে গিয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন। ‘গুরুদেব নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন মানে? উনি কি আর শরীরে নেই!’ কথাগুলো বলার সময় তাঁর গলার স্বর কেঁপে উঠল।
‘না, উনি আর নেই।’ খুব শান্ত গলায় সহজ বলল। ‘আড়াই বছর হল উনি দেহ রেখেছেন। বনি দেখে এসেছে। উনি তোমার জন্য কিছু নির্দেশ লিখিতভাবেও রেখে গিয়েছেন। সেই খাম আশ্রমে আছে সিল করা অবস্থায়।’
‘না, না, তুমি তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করো, আমি যাব।’
‘আশা করি পরের সপ্তাহের যে কোনও দিন।’
‘আমি তোমার ভরসায় থাকলাম।’ ধীর পায়ে শশাঙ্ক মিত্র চলে গেলেন। উঠোন ছেড়ে সহজ উঠে এল দোতলায়। এখন সে শোবে। তিনঘণ্টা ঘুমাবে। আটটা নাগাদ মিমি নির্ঘাত ওকে ডাকবে। রোজই তাই করে। আজ বর্ণিনীর সঙ্গে দেখা করতে হবে। ও ক্যাপ্টেনের নোটবই থেকে সাতজন সাধু বা অসাধুর নাম ঠিকানার ছবি তুলেছিল। সেদিন দুপুরে সেগুলো পরিষ্কার কপি করে ওর বাবার কাছে পাঠিয়েছে। মাঝে বেশ কয়েকদিন হয়ে গেল। বর্ণিনী লেগে আছে। আশা করছে দু-একদিনের ভেতরই সাতজনের খবর পেয়ে যাবে।
সহজ ঘরে এসে বিছানায় পড়তেই দু’চোখ ঝাঁপিয়ে নেমে এল ঘুম। কিন্তু সে ঘুম বেশিক্ষণ স্থায়ী হল না। একনাগাড়ে ভাইব্রেশন মুডে থাকা ফোনটা কেঁপে যাচ্ছে। এত সকালবেলা কে ফোনটা করছে? কার এত দরকার? তীব্র ঘুম জড়ানো চোখে ফোন ধরল সহজ। ফোনের ওপারে কার কাঁপা কাঁপা গলা। 
‘স্যার, আমি সৃজনী।’
‘সৃজনী, কী হয়েছে?’ ঘুম লোপাট হয়ে জেগে উঠল সহজ।
‘স্যার রুমলির বাবা, মানে নচিকেতা অ্যাঙ্কেল খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আপনাকে একটা নম্বর এসএমএস করেছি। একটু ফোন করুন।’
‘কী হয়েছে নচের?’
‘জানি না স্যার, তবে খুব বড় কিছু একটা হয়েছে। এতক্ষণে হয়তো হাসপাতালে নিয়ে চলে গিয়েছে।’
‘ঠিক আছে তুমি রাখো।’ 
ফোন কেটে সহজ এসএমএস দেখল। সেই নম্বরে ফোন করতে ধরল একজন মহিলা। নিজের নামটা বলতে সেই মহিলা বলল, ‘আমার নাম আরতি, আমি নচিকেতার ওয়াইফ। আমরা ওকে বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলাম, কিন্তু সবাই বলল পিজিতে যেতে। তাই এখানে এসেছি।’
‘কী হয়েছে?’
‘মনে হচ্ছে খারাপ কিছু পেটে গিয়েছে।’ কথাটা বলে আরতি একটু থমকায়, চাপা গলায় বলে, ‘বিষ খেয়েছে। ওকে ভেতরে নিয়ে গিয়েছে, ওয়াশ করাচ্ছে, বলছে তো ভালো নয়।’ সেই কথাগুলো বলার সময় আরতির গলা বুজে এল। ‘খুব খারাপ অবস্থা— জ্ঞান নেই, গ্যাঁজলা উঠছে। ভোররাতেই খেয়েছে কিছু। আপনার কথা সবাই বলছিল, কিন্তু আপনাকে ফোনে পাচ্ছিল না।’
‘আমি আসছি।’
সহজের বুকের ভেতর এই সকালবেলা ভারী মেঘের মতো অন্ধকার চেপে বসছে। শয়তান পিশাচসাধুটা নচের মানসিক স্থিতিটাই নষ্ট করে দিল। সত্যিই ও পিশাচ! নচের মৃত্যুর জন্য ওই লোকটাই দায়ী। বিচিত্র ঘোষাল ঠিক কথাই বলেছিলেন, ও মানুষের মন নিয়ে খেলে, ও ভয়ঙ্কর, ওর সংস্পর্শে থেকো না। 
সহজ উঠে বাথরুম গেল। চোখ মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখল টেবিলে চায়ের কাপ। মিমি চায়ের কাপ নিয়ে চুমুক দিচ্ছে।
বলল, ‘কী রে এত সকাল সকাল উঠে পড়লি— সবে সাতটা দশ। তোর ঘুম ভাঙার টাইম তো আটটা। তাও ডেকে ডেকে—।’
সহজ ম্লান হাসল। বলল, ‘একটু বেরুব।’
‘কোথায় যাবি, ওই জ্যোতিষীর বাড়ি?’
‘না, অন্য একটা দরকার আছে।’
চায়ের কাপে লম্বা চুমুক দিয়ে মিমি বলল, ‘আমি তোর সক্কাল সক্কাল উঠে পড়া দেখে ভাবলাম ওঁর বাড়ি যাচ্ছিস। তুই বলেছিলিস না, ওঁর কাছে সকাল সকাল যাওয়া ভালো। ঘুম থেকে উঠে মুখ দেখে উনি যা বলেন তা অব্যর্থ। অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায়। তাই জন্যই তো আমরাও সকালবেলা গিয়েছিলাম।’
‘আমি তোকে এসব ইনফরমেশন দিইনি। তুই মনে হয় অন্য কারও কাছে শুনেছিস।’
‘তুই আমাকে সকালবেলা যেতে বলিসনি!’ 
‘হ্যাঁ, সেটা অন্য কারণে। উনি বড্ড নেশা করেন। বেলা হয়ে গেলে রিস্ক থেকে যায়, হয়তো নেশা করে আউট হয়ে থাকলেন। তখন যাওয়াটাই বৃথা।’
‘তুই নিশ্চয়ই এর মধ্যে ওঁর কাছে যাবি? ওঁকে বলিস— আমার বোন সেদিন খারাপ ব্যবহার করেছে, এরজন্যে সে লজ্জিত, ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে। ও আর একদিন আসবে আপনার কাছে।’
সহজ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল মিমির দিকে। মিমির মতো দাম্ভিক অহঙ্কারী মেয়ে সরি নয়, এক্কেবারে পাতি বাংলায় ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছে!
মিমি বলল, ‘কী দেখছিস আমার দিকে। সত্যিই আমি দুঃখিত। আমি সেদিন খুব রুড ব্যবহার করেছি। আসলে ওঁর কথাগুলো আমি মেনে নিতে পারছিলাম না। কিন্তু উনি আমার একটা গোপন কথা অদ্ভুতভাবে বলেছেন। যা কারও জানার কথা নয়। সেটা উনি কী করে জানলেন, আশ্চর্য! আর একটা কথা— উনি পদ্মনাভ সম্পর্কে যা যা বলেছেন সেটা সব সত্যি। উনি আমার জীবনের আয়না। উনি আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। আমি ওঁকে প্রণাম করতে যাব। তুই গেলে— আমার হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিস। তারপর আমি যাব— নইলে উনি প্রচণ্ড রিঅ্যাক্ট করতে পারেন।’ মিমি চায়ের কাপে আবার চুমুক দিয়ে উঠে পড়ল। চলে যেতে গিয়ে ঘুরে দাঁড়াল। ‘আর একটা কথা, ওঁর বউটা কিন্তু ওঁর থেকে বড্ড ছোট। কী যেন নাম... বঁড়শি। ও কিন্তু তোকে গিলছিল! সাবধানে থাকিস, আমার মতো পচা শামুকে পা কাটিস না। পদ্মনাভের সঙ্গে আমি সম্পর্ক চুকিয়ে দিয়েছি। ও খুব বাজে চক্করে পড়েছে। এবার ও মরবে—।’ মিমি চলে গেল।
সহজের হাতে চায়ের কাপ ধরাই আছে। দু’চুমুকের বেশি দিতে পারেনি। সহজ এই মিমিকে চেনে না। মিমি তো এমন নয়। এত শান্ত, স্থির হল কী করে?
আবার ফোন বাজছে। এবার পরমেশ্বর।
—তুই কোথায় রে?
—বাড়িতে। হাসপাতাল যাব বলে রেডি হচ্ছি।
—শোন, আমি কলকাতায় নেই। একটু আগে আমাকে শঙ্কর ফোন করেছিল। কন্ডিশন ভালো নয়। আমি ওকে বলেছিলাম, তেমন হলে প্রাইভেট কোনও হাসপাতালে শিফ্ট করাতে। টাকা-পয়সা নিয়ে ভাবতে হবে না। কিন্তু ও বলল, ট্রিটমেন্ট ঠিক হচ্ছে, কোনও ত্রুটি নেই। আমি ওর কথা বিশ্বাস করছি না। টাকা খরচের ভয়ে ও মিথ্যে বলতে পারে। তাই তুই নিজে গিয়ে রিপোর্ট দিবি আমাকে। আমার ফোন খোলা থাকবে। আমি পার্টির ওপর মহলে জানিয়েছি, ওরাও সুপারের সঙ্গে কথা বলবে বলেছে। যেভাবেই হোক নচেকে ফেরাতে হবেই। আমি ফিরে যাই, ক্যাপ্টেনকে গুছিয়ে পেটাব। ওর ভবিষ্যদ্বাণী করা বের করে দেব। দু’-দুটো ছেলেকে ও শেষ করে দিল। দুটো ছেলে তো নয়, দুটো পরিবার। ওকে আর বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। ওর দিন শেষ, ওকে মাল খাইয়ে নর্দমায় মুখ গুঁজে দেব। ৭২ ঘণ্টা কাটুক, নচে ফিরুক, তারপর দেখব কার অপঘাতে মৃত্যু আছে। ওই নচেকে দিয়েই আমি কাঁটা তুলে দেব। আমি ফালতু হুমকি দিচ্ছি না। পারলে তুই গিয়ে বলে আয়, বাড়িতে তালা মেরে চলে যেতে, নইলে খুন হয়ে যাবে। আমার মাথায় আগুন জ্বলছে।’
ফোন কেটে দিল। চায়ের কাপ রেখে সহজ এক পা এক পা করে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামছে, দেখল— মা ঠাকুরপুজোর ফুল তুলছে। সহজ এসে মায়ের পাশে দাঁড়াল। কস্তুরী বলল, ‘কী রে কিছু না খেয়ে যাচ্ছিস কোথায়?’
‘মা আমার এক বন্ধু খুব অসুস্থ। মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। আমি হাসপাতালে যাচ্ছি।’
কস্তুরী অস্ফুট একটা শব্দ করল। বলল, ‘চিন্তা করিস না, ভালো হয়ে যাবে।’
সহজ গাছ থেকে দুটো ফুল তুলে মায়ের সাজিতে দিল। বলল, ‘এই দুটো ফুল ঠাকুরকে দিও, নচের নামে।’
কস্তুরী হাসল, ‘বললাম তো, ভালো হয়ে যাবে।’
 (চলবে)
অঙ্কন: সুব্রত মাজী
12th  September, 2021
কোজাগরীর লক্ষ্মীসরা
শান্তনু বসু 

জাগো- জেগে থাক। নিদ্রা যেন চেতনাকে আচ্ছন্ন না করে। শুদ্ধ চিত্তে, শুদ্ধ চরিত্রে প্রতীক্ষা করো। তিনি আসবেন। তাঁর পাদস্পর্শে ধন্য হবে ধরণী। বৈকুণ্ঠ থেকে তিনি নেমে আসবেন গৃহস্থের অঙ্গনে। আসবেন বছরের নির্দিষ্ট একটি দিনে। অতএব নিবিষ্ট মনে স্মরণ কর তাঁকে। আলপনা দাও। নিষ্ঠা ভরে ধানের ছড়া এঁকে রাখ ভূমিতে, এঁকে রাখ তাঁর চরণচিহ্ন। বিশদ

17th  October, 2021
অপারেশন ৭১ : পর্ব ৩
প্ল্যান জ্যাকপট
সমৃদ্ধ দত্ত

মধ্যরাতে ফোন করেছেন কে সংকর্ষণ নায়ার। ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (RAW)-এর ডেপুটি ডিরেক্টর।  তিনি এই সংস্থায় পাকিস্তান ডেস্ক মনিটর করেন। প্রাইম মিনিস্টারকে এত রাতে ফোন করার অর্থ বড়সড় কিছু ঘটেছে। বিশদ

17th  October, 2021
পর্ব ২: অপারেশন ৭১
২৫ মার্চ, ১৯৭১
অপারেশন সার্চলাইট
সমৃদ্ধ দত্ত

একজন বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হবে? সেরকম হলে আমার ডেডবডির উপর দিয়ে হতে হবে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এরকমই বললেন, তাঁর আর্মি কমান্ডারদের। শেখ মুজিবের দল পাকিস্তানের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছে তো কী হয়েছে? তার মানে কি বাঙালির হাতে পাকিস্তানকে ছেড়ে দিতে হবে? বিশদ

10th  October, 2021
দুর্গা
তপন বন্দ্যেপাধ্যায়

অনেকক্ষণ ধরে একটি গল্পের প্লট খুঁজছেন ভাস্করবাবু, মগজের ভাঁজ খুলে-খুলে দেখছেন কোন ঘটনাটা তাঁকে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে এই মুহূর্তে, কোন দুটি চোখ ছুঁয়ে-ছুঁয়ে যাচ্ছে তাঁর মনের অন্দরমহল, কিন্তু কিছুতেই পাচ্ছেন না মনোমতো প্লট। যা-ও দু-একটি ঘটনা মনে পড়ছে কোনওটাই মনঃপূত হচ্ছে না। বিশদ

10th  October, 2021
পর্ব  ১: অপারেশন ৭১
সিচ্যুয়েশন রুম
সমৃদ্ধ দত্ত
 

কেন রিচার্ড নিক্সন এতটা ইন্দিরা গান্ধীর বিরোধী? কারণ একাধিক। নিক্সন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে যখন‌ই এশিয়া, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে গিয়েছেন তিনি দেখতে পেয়েছেন, প্রত্যেক রাষ্ট্রপ্রধানের চোখে এক সমীহ। এক বিশেষ শ্রদ্ধামিশ্রিত ভীতি। কারণ, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলে কথা। ইনি সর্বশক্তিমান। সুতরাং নিক্সন আনুগত্য পেতেই অভ্যস্ত। তাঁর স্বভাবও সেরকম। একমাত্র ব্যতিক্রম এই মহিলা।
বিশদ

03rd  October, 2021
ছোট গল্প
উত্তরসাধক
মানস সরকার

ছেলে বড় হলে প্রতুলকে নিজের কাছে বহুবার বসাতে চেয়েছে। ছেলে বোল বুঝতে চাইত না। সুর, শব্দ থেকে দূরে পালাত। পড়াশোনাটাও ঠিক করে শেষ করল না। বিরক্তি প্রকাশ করত বাসন্তী। জোর করেনি গৌরদাস। এ জোর করার নয়। জড়িয়ে নেওয়ার জিনিস। বিশদ

03rd  October, 2021
পিশাচ সাধু
 

ক্যাপ্টেনকে এলাকা ছাড়ার কড়া নির্দেশ দিয়েছে পরম। এদিকে, বিষ খেয়ে হজম করে দেখিয়ে দেবে বার বার বলছে পিশাচসাধু। বঁড়শিকে পালিয়ে আসতে বলল সহজ। কিন্তু সে রাজি হল না। তারপর... প্রবল দুশ্চিন্তা নিয়ে বাড়ি ফিরছিল সহজ। কিন্তু এলাকার কাছাকাছি আসতেই তার অদ্ভুত একটা অনুভূতি হল। বিশদ

26th  September, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব  ৩০
পিশাচ সাধু

জয়ন্ত দে

কাকভোরে ঠাকুরদা শশাঙ্ক মিত্রের সঙ্গে বাগানে দেখা করল সহজ। জানাল, বর্ণিনী গুরুদেবের আশ্রমে গিয়ে সব খোঁজ খবর নিয়ে এসেছে। তবে, একটাই খারাপ খবর, গুরুদেব আর ইহজগতে নেই। শশাঙ্ককে আশ্রমে পৌঁছে দেবে কথা দিল সহজ। এর কিছুক্ষণ পরই সৃজনী ফোনে জানাল, নচে বিষ খেয়েছে।  তারপর... বিশদ

19th  September, 2021
ছোট গল্প
সম্বল
সঞ্জীব ঘোষ

রাঘব একা মানুষ। নিজে রেঁধে বেড়ে খায়। তার এক কামরা পাকা ঘরের সামনে পিছনে অনেকখানি জায়গায় চাষবাস করে নিজের চলে। বাজারে বিক্রি করলে চাল কেনার টাকা উঠে যায়। একটু ছন্নছাড়া হলেও বাঁধা গতের জীবন তার। আশ্চর্যজনকভাবে দীনতা তাকে স্পর্শ করেনি। বিশদ

12th  September, 2021
ছোট গল্প
টরেগাসি
বিনতা রায়চৌধুরী
​​

লিলি ঘরে ঢোকামাত্র শুভায়ু বলে উঠল আমার টরেগাসি? হেসে ফেলল লিলি, ‘আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকো না একটুও, তোমার মন পড়ে থাকে ওই তোমার টরেগাসি-র ওপর। তাই তো?’  ‘কথাটা পুরো সত্য নয়। আবার পুরো মিথ্যেও নয়।’ বলেই হেসে উঠল শুভায়ু।  বিশদ

05th  September, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব ২৮
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

ক্যাপ্টেনের সঙ্গে তুমুল ঝগড়া বঁড়শির। এমন পরিস্থিতিতে পিশাচসাধু যেন নিজেরই মুখোমুখি— সামনে এসেছে দাঁড়িয়েছে তার অতীত। প্রতিশোধ নিতে সে শুরু করেছে এক নরমেধ যজ্ঞ। জনৈক শ্মশানচারী সাধুকে বলি দিলে সম্পূর্ণ হবে তার এই যজ্ঞ। কিন্তু তার খোঁজ এখনও পায়নি ক্যাপ্টেন। তারপর... বিশদ

05th  September, 2021
ছোট গল্প
মানকচু, ফুল ও
ডাবের গল্প
চিরঞ্জয় চক্রবর্তী

আমি যখন বাজারে যাই, কেউ ঘুম থেকে ওঠে না। অত সকালে বাজারে যেতে দেখে পাশের বাড়ির লিলি বলেছিল, ‘তুমি কি বাসি মাল কিনতে যাও?’ উত্তরে শুধু হেসেছিলাম, কিছু বলিনি। সকালবেলা বাসি মালও পাওয়া যায়, লোকে কত কিছু ভাবে। অনেকেই বাজারের ব্যাগ হাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রাতর্ভ্রমণ করে। আমার সেসব বালাই নেই।
বিশদ

29th  August, 2021
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব ২৭
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

বোনকে নিয়ে সহজ পিশাচ সাধুর কাছে গিয়েছিল শুনে রেগে আগুন বিচিত্রদা। কথায় কথায় সহজ জানাল, বঁড়শির আদতে বিয়ে হয়েছে একটা মড়ার খুলির সঙ্গে। এবার বর্ণিনী যেতে চায় ক্যাপ্টেনের বাড়িতে। এদিকে, সহজকে ডেকে নচে শোনাল তার জীবনের কিছু বৃত্তান্ত। তারপর... বিশদ

29th  August, 2021
গাছ জগবন্ধু
অভিজিৎ তরফদার

—ওই যে ঘরের মধ্যে টাকা মেশিন। বোতাম টিপলেই টাকা। —এটিএম? বেড়ে বলেছ তো! আচ্ছা জগবন্ধু, একটা কথা জিজ্ঞেস করব, কিছু মনে করবে না তো? —না না, মনে করবার কী আছে? গরিব মানুষের অত মনে করলে চলে না।  বিশদ

22nd  August, 2021
একনজরে
শনিবার শুরু হচ্ছে রাজ্য ব্রিজ চ্যা঩ম্পিয়নশিপ। প্রথমে খেলা হবে পেয়ার্স বিভাগে। টিম ইভেন্ট ১২-১৪ নভেম্বর। প্রতিযোগিতার স্পনসর শ্রী সিমেন্ট। প্রতিটি বিভাগেই পুরস্কৃত হবেন প্রথম দশজন। ...

মালদহের রতুয়া-১ ব্লকের লখড়ি গোলাঘাটে বুধবার রাতে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেল বাঁশের সাঁকো। দু’দিনের টানা বৃষ্টির জেরে মহানন্দা নদীর জল ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। ...

শক্তিগড়ে দুর্ঘটনায় চারজনের মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের পূর্ব বর্ধমান জেলায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক যুবকের। ...

হুগলির বলাগড়ে গঙ্গার চরেই গড়ে উঠবে নয়া নদী বন্দর। তৈরি হবে দু’টি বার্থ টার্মিনাল। তার একটি নির্দিষ্ট থাকবে কয়লার জন্য। অন্যটিতে ওঠানামা করবে কন্টেনার। এই ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মে ও ব্যবসায় বাধা থাকলেও অগ্রগতি হবে। আর্থিক যোগ শুভ। ব্যয় বাড়বে। সম্পত্তি নিয়ে শরিকি ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৯৫৪: কবি জীবনানন্দ দাশের মৃত্যু
১৯৮৮: অভিনেত্রী পরিণীতি চোপড়ার জন্ম
২০০৮: চিত্রশিল্পী পরিতোষ সেনের মৃত্যু
২০০৮: চন্দ্রায়ন-১-এর সূচনা



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৪.০৭ টাকা ৭৫.৭৯ টাকা
পাউন্ড ১০১.৮১ টাকা ১০৫.৩৫ টাকা
ইউরো ৮৫.৮১ টাকা ৮৮.৯৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮,৩০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫,৮৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬,৫৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৫,১০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৫,২০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৫ কার্তিক, ১৪২৮, শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১। দ্বিতীয়া ৪৭/৬ রাত্রি ১২/৩০।  ভরণী নক্ষত্র ৩৩/১০ রাত্রি ৬/৫৬। সূর্যোদয় ৫/৩৯/৪৪, সূর্যাস্ত ৫/২/৪২। অমৃতযোগ দিবা ৬/২৫ মধ্যে পুনঃ ৭/১০ গতে ৯/২৭ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৪ গতে ২/৪৬ মধ্যে পুনঃ ৩/৩২ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৫/৫৪ গতে ৯/১৬ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৭ গতে ৩/৮ মধ্যে পুনঃ ৩/৫৯ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ৮/৩০ গতে ১১/২১ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/১৩ গতে ৯/৪৭ মধ্যে। 
৪ কার্তিক, ১৪২৮, শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১। দ্বিতীয়া রাত্রি ১০/৩৯। ভরণী নক্ষত্র রাত্রি  ৬/২৭। সূর্যোদয় ৫/৪১, সূর্যাস্ত ৫/৪।  অমৃতযোগ দিবা ৬/৩৫ মধ্যে ও ৭/১৯ গতে ৯/৩১ মধ্যে ও ১১/৪৩ গতে ২/৩৮ মধ্যে ও ৩/২৩ গতে ৫/৪ মধ্যে এবং রাত্রি ৫/৪০ গতে ৯/১১ মধ্যে ও ১১/৪৭ গতে ৩/১৫ মধ্যে ও ৪/৭ গতে ৫/৪১ মধ্যে। বারবেলা ৮/৩১ গতে ১১/২২ মধ্যে। কালরাত্রি ৮/১৩ গতে ৯/৪৭ মধ্যে। 
১৫ রবিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
ভারত-ইংল্যান্ড পরিত্যক্ত টেস্টটি নতুন বছরেই
ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের পরিত্যক্ত পঞ্চম টেস্টটি নতুন বছরে অনুষ্ঠিত হবে। আজ, ...বিশদ

06:26:11 PM

রাজ্যে আরও ২টি নতুন পুরসভা
রাজ্যে বাড়ল আরও দুটি পুরসভা। ময়নাগুড়ি ও  ফালাকাটা। এই দুই ...বিশদ

06:19:53 PM

গড়িয়াহাটের জোড়া খুন কাণ্ডে গ্রেপ্তার আরও ২
গড়িয়াহাটের জোড়া খুনের ঘটনায় আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হল। ...বিশদ

05:35:14 PM

ট্রেকিংয়ে গিয়ে নিঁখোজ: রাজ্যের ৫ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ বেশ কয়েকজন
কুমায়ন রেঞ্জে ট্রেকিং করতে গিয়ে গাইড সহ নিখোঁজ রাজ্যের পর্যটকদের ...বিশদ

05:29:21 PM

চেতলা বস্তিতে আগুন, জখম ২ শিশুসহ ৪
ফের অগ্নিকাণ্ড শহর কলকাতায়। এবার চেতলার বস্তিতে।  একটি ঝুপড়ি বাড়িতেই ...বিশদ

02:31:00 PM

ত্রিপুরায় সাংসদ সুস্মিতা দেবের গাড়ি ভাঙচুর
ত্রিপুরায় তৃণমূলের উপর আবারও হামলার অভিযোগ। শুক্রবার ত্রিপুরায় নতুন কর্মসূচি ...বিশদ

02:29:03 PM