কর্মে ও ব্যবসায় বাধা থাকলেও অগ্রগতি হবে। আর্থিক যোগ শুভ। ব্যয় বাড়বে। সম্পত্তি নিয়ে শরিকি ... বিশদ
বছরের পর বছর পলি জমে তৈরি হয়েছে এই চর। প্রায় ৯০০ একর জায়গা। এরমধ্যে ৩০৮.৭৫ একর জমি বন্দর কর্তৃপক্ষের। বাকি জমির মালিকানা রাজ্য সরকার এবং সিইএসসি কর্তৃপক্ষের। এক সময় সিইএসসি এখানে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার কথা ভেবেছিল। এই চরেই নিজেদের জমিতে একটি ছোট মাপের বন্দর তৈরি করতে চাইছে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পোর্ট (এসএমপি) কর্তৃপক্ষ। এই প্রকল্পটি রূপায়ণ করতে বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে কলকাতা পোর্ট এক্রিশন লিমিটেড নামে একটি সংস্থা গঠন করা হয়েছে। জলপথে পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও প্রসারিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা।
নদীর নাব্যতা বাড়াতে হলে ড্রেজিংই একমাত্র পথ। সেই পলি ফেলার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ এই চরে ৩০০ একর জমি নিয়েছিল। বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরাক্কা ব্যারাজ তৈরির পর গঙ্গায় পলির পরিমাণ বেড়ে যায়। সেই পলি জমা করা হয় এই চরে। পলি জমে চরের উচ্চতা তিন মিটার বেড়ে গিয়েছে।
বলাগড়ে বার্থ টার্মিনাল হলে কী সুবিধা হবে? আধিকারিকদের বক্তব্য, কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে পণ্য পরিবহণ বাড়ছে। জাহাজে করে যে সব পণ্য বন্দরে এসে পৌঁছয়, তার একটি বড় অংশ সড়কপথে বা রেলপথে যায় বিভিন্ন জায়গায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিহার, উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্য এবং নেপাল। এদিকে, কলকাতা বন্দর থেকে সড়কপথে পণ্য নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। বন্দর এলাকায় ট্রাক চলাচলের সময়সীমা নির্দিষ্ট। তাছাড়া কন্টেনারবাহী ট্রাক রাস্তায় নামলেই যানজট অনিবার্য। এই সব কারণেই বন্দরে খালাস হওয়া পণ্য পরিবহণে বেশি সময় লেগে যায়। এই সময়টাকেই কমাতে চাইছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। আর তা পারলে অন্য বন্দরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে পারবে কলকাতা ও হলদিয়া। এ সব ভেবেই সড়কপথের বিকল্প হিসেবে জলপথকে পণ্য পরিবহণের কাজে ব্যবহার করতে চাইছেন বন্দরের আধিকারিকরা। এই পথে বার্জের মাধ্যমে বলাগড়ে পৌঁছবে পণ্য। বলাগড় বার্থ টার্মিনাল থেকে পণ্য যাবে সড়কপথে। এই চরে যেখানে বার্থ টার্মিনাল করার পরিকল্পনা, সেখান থেকে ৬ নম্বর রাজ্য সড়কের দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার। তবে রাজ্য সড়কের সঙ্গে সংযোগ করতে হলে নতুন রাস্তা ও সেতু নির্মাণ করতে হবে। তাছাড়া বলাগড় থেকে জলপথেও উত্তর ভারত বা নেপালে পাঠানোও যাবে পণ্য। এসএমপি’র চেয়ারম্যান বিনিত কুমার জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে তিনশো কোটি টাকা খরচ হতে পারে।
বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পটি রূপায়ণ করতে চাইছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কয়েক মাস আগে বলাগড়ের প্রকল্পের জন্য গঠিত সংস্থাটি এব্যাপারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আগ্রহপত্র বা এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট চেয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তবে এখনও পর্যন্ত এব্যাপারে খুব একটা অগ্রগতি না হলেও প্রকল্প রূপায়ণে তাঁরা যে আগ্রহী, তা স্পষ্ট করেছেন বন্দরের এক শীর্ষ আধিকারিক।