সপরিবারে নিকট ভ্রমণের পরিকল্পনা। সহকর্মীরা কর্মক্ষেত্রে শত্রুতা করতে পারে। নতুন কোনও কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মক্ষেত্রে বদলির ... বিশদ
দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে রয়েছে আপনার সাধের বাসা। বারান্দায় ঝুমকো মাধবীলতার সারি কেড়ে নিয়েছে সব আলো। এবার বন্ধ ঘরে আলো জ্বালানোর পালা। কেউ বা বেড়াতে যান বাড়ি বন্ধ রেখে। কারও বছরের বেশিরভাগ সময় কর্মসূত্রে কেটে যায় বাড়ির বাইরে। দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে বাড়ির নানা ছোটখাট সমস্যা দেখা দেয়। তা চোখে পরে গৃহকোণে ফেরার পর। কিন্তু বাড়ি ফিরে শরীর ও মন আরাম চায়। ক্লান্তি কাটানোর আশ্রয়ের আর এক নামই তো বাড়ি। তবে সেখানে ফিরেও কিছু জিনিস নজরে রাখতেই হবে। সতর্কতাও জরুরি। বন্ধ বাড়ি আপনাকে ধাক্কা দেবে নিজস্ব নিয়মে! স্যাঁতসেঁতে ভাব ছড়িয়ে থাকবে ঘর, বারান্দায়। তাকে এবার তরতাজা করে নেওয়ার পালা।
• বাড়ি বন্ধ করে বেশ কয়েকদিনের জন্য বেরিয়ে যাওয়ার আগে সব ঘরের বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সুইচ বন্ধ করে যাওয়াটাই নিয়ম। মেন সুইচ সাধারণত বন্ধই করেন গৃহকর্তা। তাও অনেক সময় অসতর্কতায় সুইচ চালু থাকার ঘটনা ঘটে। এতে বিদ্যুতের অপচয় তো হয় বটেই। ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাও। ফলে বাড়ি ফিরে মেন সুইচ অন করার আগে সতর্ক হোন। ভিজে হাতে কখনও সুইচে হাত দেবেন না।
• ফ্রিজ খালি করে বাইরে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। স্যস, মাখন, জ্যামের মতো জিনিসও রাখবেন না। ব্যবহার না হলে খাবারে ছত্রাক বাসা বাঁধে। ফ্রিজে এসব থেকে গেলেও তা ব্যবহার না করাই ভালো।
• রান্নাঘরে গ্যাস জ্বালানোর আগে সতর্ক থাকুন। আভেনের সুইচ বন্ধ ছিল বেশ কিছুদিন। ফের তা চালু করার আগে কোনওভাবে গ্যাস লিক হয়েছে কি না, দেখে নিন।
• ঘরে আলো, বাতাস না ঢুকলে ভ্যাপসা গন্ধ হওয়া বিচিত্র নয়। ঘরোয়া টোটকার সাহায্যে সেই গন্ধ দূর করতে পারেন। একটি পাত্রে পরিমাণ মতো জল ফুটিয়ে নিন। ফুটন্ত জলে যোগ করুন শুকিয়ে রাখা লেমন গ্রাস। তারপর আরও ১০ মিনিট ফুটিয়ে আঁচ বন্ধ করে ঢাকা দিয়ে দিন। ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এবার একটি কাচের শিশিতে এই মিশ্রণ ঢালুন। তাতে যোগ করুন কয়েক ফোঁটা লেমন গ্রাস অয়েল এবং পেপারমিন্ট অয়েল। এবার এই মিশ্রণ সারা ঘরে স্প্রে করুন। বন্ধ ঘরের ভ্যাপসা গন্ধ দূর করে নিমেষে আপনার ঘরে একটি তরতাজাভাব ফুটে উঠবে।
• বাড়ি বন্ধ অবস্থায় রান্নাঘর, বাথরুমের মতো জায়গায় পোকামাকড় হতে পারে। স্যাঁতসেঁতে হয়ে থাকে ঘরের নানা অংশ। বাড়ি ফিরে দ্রুত পরিচ্ছন্ন করে ফেলতে হবে। সেজন্য কাচের শিশিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল নিন। এতে মেশান কয়েক ফোঁটা লেমন এসেনশিয়াল অয়েল এবং রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল। এরপর সুগন্ধের জন্য কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েলও মিশিয়ে নিন। প্রতিটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে এই মিশ্রণ সারা বাড়িতে স্প্রে করলে এসব থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
• ঘরের ভ্যাপসা গন্ধ দূর করতে বেকিং সোডা খুবই কার্যকরী। অনেক গৃহস্থই রান্নায় বেকিং সোডা কাজে লাগান। ফলে তা বাড়িতেই থাকে। ছোট একটি পাত্রে অনেকটা পরিমাণে বেকিং সোডা নিয়ে তার মধ্যে কয়েক ফোঁটা পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে ঘরের কোণে রেখে দিন। এতেই খারাপ গন্ধ দূর হবে। ঘরের কোণে, পর্দায় কিংবা বিদ্যুতচালিত ডিফিউজারে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার, ইউক্যালিপটাস জাতীয় এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে রাখলে ঘরের গুমোট ভাব কাটবে সহজেই।
• সিঁড়ির তলার অংশ, স্টোররুম ইত্যাদির মতো বাড়ির অপেক্ষাকৃত কম ব্যবহৃত অংশ বেশি অপরিষ্কার হয়ে থাকে। ঝুল ঝেড়ে এক কোণে বস্টন ফার্ন রাখতে পারেন। রান্নাঘর বা স্নানঘরের শোভা বৃদ্ধি করার সঙ্গে গুমোট গন্ধ শুষে নেবে এই ফার্ন।
• ঘরের বাতাস দূষণমুক্ত রাখতে কার্যকরী স্পাইডার প্ল্যান্ট। ঘরে বেশিরভাগ সময় এসি চলার কারণে ঘরের মধ্যে শুষ্ক আবহাওয়া তৈরি হয়। স্পাইডার প্ল্যান্ট থাকলে সহজে শুষ্ক আবহাওয়া তৈরি হবে না। খুব সহজে বেড়ে ওঠে এই প্ল্যান্ট।
• আপনার অনুপস্থিতির দিনগুলোয় ঘর, বারান্দা বা ছাদের গাছগুলির যত্ন হয়নি। বাড়ি ফিরেই সেদিকে মন দিতে হবে। অনেকেই প্লাস্টিকের বোতলের নীচে ছিদ্র করে জল ভরে উপরে ঝুলিয়ে রাখেন। যাতে বন্ধ বাড়িতেও গাছের টবে ঝুলন্ত বোতল থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল পড়ার ব্যবস্থা থাকে। সেই ব্যবস্থা করে গেলে গাছ তরতাজা থাকবে। আর তা নাহলে সার, জল দিয়ে গাছের যত্ন নিতে হবে। আবার ঝড়, বৃষ্টিতে বাইরে রাখা টব ভেঙে গাছের ক্ষতি হতে পারে। বাড়ি ফিরে সেই মাটি পরিষ্কার করে নিতে হবে।
• বাড়ি ফিরে জানালার পর্দা, বিছানার চাদর সব বদলে ফেলুন। এতে একটা তরতাজা ভাব ফুটে উঠবে। টেবিলে ফুল রাখতে পারেন। সুগন্ধি মোম জ্বেলে রাখুন। এতেই বদলে যাবে বাড়ির পরিবেশ।