১৯৪৪ সালের দুর্ভিক্ষের ঠিক পরেই মহিলাদের ত্রাণ শিবির হিসেবে শুরু হয়েছিল নারী সেবা সংঘ। শুরুর সময় এই সংস্থার শীর্ষে ছিলেন ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের মতো প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিরা। লেডি অবলা বসু, সরোজিনী নাইডুর মতো মহিলারা এই সংঘ গড়ে তুলতে সাহায্য করেন। এই সংঘের তরফে মহিলাদের হাতের কাজ শেখানো, রোজগেরে করে তোলা, সমাজে প্রতিষ্ঠা করার মতো নানা কাজ হতো। সমাজসেবামূলক কাজে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থাও করত সংস্থা। ক্রমশ সমাজ যত এগিয়েছে মহিলাদের অবস্থানও বদলেছে। পাল্টেছে নারী সেবা সংঘের প্রশিক্ষণের ধরন। দেশভাগের পর রিফিউজি মহিলাদের আশ্রয় হয়ে ওঠে এই সংঘ। সেই সময় থেকেই এখানকার হাতের কাজের প্রশিক্ষণের কদর বাড়তে থাকে। এখন বাটিক, ব্লক প্রিন্টের কাজ, নানা ধরনের সেলাই ইত্যাদি শেখানো হয় মেয়েদের। কাজ শিখে তারা স্বনির্ভর হয়ে ওঠে। অনেকে পোশাক তৈরির পাঠও নেয়। কেউ শেখে রান্নাবান্না। আচার বা বড়ি শিল্পে পারদর্শী হয়ে ওঠে। ব্যবসার নানাবিধ পাঠও দেওয়া হয় এখানে। ক্যান্টিন চালানোর শিক্ষা, ডিটিপি অপারেটিংয়ের কাজ ইত্যাদি শিখে এই সংঘের মেয়েরা স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারে।
প্রতি বছর বসন্তের আহ্বানে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় সংঘের তরফে। আশি বছর পেরিয়েও সেই প্রদর্শনীর আকর্ষণ বিন্দুমাত্র কমেনি। এখানে পোশাক, নানা ধরনের শাড়ি, বাচ্চাদের জামাকাপড়, কাঁথা, হাতে তৈরি গয়না, কার্ড, ব্যাগ, বিভিন্ন ধরনের আচার, শরবত, জেলি, চাটনি ইত্যাদি পাবেন। সংঘের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রঞ্জনা মুখোপাধ্যায় বলেন, এই প্রদর্শনীটিও মহিলাদের স্বনির্ভর করার একটি উপায়। শুধু নারী সেবার সদস্যরাই নয়, এই প্রদর্শনীতে অন্য মহিলারাও স্টল ভাড়া নিয়ে নিজেদের জিনিস বিক্রি করতে পারেন। এবছর প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে ৭-৯ ফেব্রুয়ারি, দুপুর ১২টা থেকে সন্ধে ৭টা। প্রদর্শনীর ঠিকানা: ১/১/২এ গড়িয়াহাট রোড, যোধপুর পার্ক।