পারিপার্শ্বিক কোনও ঘটনা চিন্তা বাড়াতে পারে। সাংস্কৃতিক কর্মে যোগদান ও মানসিক তৃপ্তিলাভ। শরীরের খেয়াল রাখুন। ... বিশদ
শ্রীমদ্ভাগবতের সপ্তম স্কন্ধে প্রহ্লাদ মহারাজ ভগবানের শ্রীপাদপদ্মে প্রার্থনা করেছেন, “হে নৃসিংহদেব! আমি যদি আপনার চরণ-কমলের দাসত্ব লাভ করতে পারি, তা হলে আমার পক্ষে আপনার লীলা শ্রবণ করা সম্ভব হবে। আপনিই হচ্ছেন পরম সুহৃৎ, পরম আরাধ্য ভগবান। আপনার দিব্য লীলাসমূহ শ্রবণ করা মাত্র সমস্ত পাপ দূর হয়ে যায়। তাই সেই সমস্ত পাপকর্মকে আমি আর ভয় করি না, কারণ আপনার লীলাসমূহ শ্রবণ করার ফলে আমি অনায়াসে জড় জগতের সমস্ত কলুষ থেকে মুক্ত হতে পারব।”
ভগবানের লীলা সম্বন্ধীয় বহু গান রয়েছে। যেমন, ব্রহ্মা ব্রহ্ম-সংহিতায় গেয়েছেন, নারদ মুনি নারদ-পঞ্চরাত্রে গেয়েছেন, এবং শুকদেব গোস্বামী শ্রীমদ্ভাগবতে গেয়েছেন। কোন মানুষ যদি এই সমস্ত সঙ্গীত শ্রবণ করেন, তা হলে তিনি অনায়াসে জড়-জগতের কলুষিৎ বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারেন। ভগবানের মহিমা কীর্তনকারী এই সমস্ত সঙ্গীত শ্রবণ করা অত্যন্ত সহজ। কোটি কোটি বছর ধরে এই সমস্ত সঙ্গীত গান করা হচ্ছে এবং আজও মানুষ সেগুলি গাইছে। সুতরাং এই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে কেন মানুষ জড় জগতের কলুষিত বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করবে না? শ্রীমদ্ভাগবতের প্রথম স্কন্ধে নারদ মুনি তাঁর শিষ্য ব্যাসদেবকে বলছেন, “হে ব্যাস! জেনে রাখ যে, তপ, ত্যাগ, বেদ অধ্যয়ন, যজ্ঞানুষ্ঠান, বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ, দান আদি পুণ্য কর্মগুলির একমাত্র পরম ফল হচ্ছে ভক্তসঙ্গে ভগবানের মহিমা কীর্তন করা।” এখানে বোঝানো হয়েছে যে, ভগবানের মহিমা কীর্তন হচ্ছে জীবের সর্বশ্রেষ্ঠ কার্য।
জপ
মৃদুমন্দ স্বরে মন্ত্র উচ্চারণ করাকে বলা হয় জপ, এবং উচ্চৈঃস্বরে মন্ত্র উচ্চারণ করাকে বলা হয় কীর্তন। যেমন, মহামন্ত্র (হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে। হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।) যখন কেবল নিজের শোনার জন্য আস্তে আস্তে উচ্চারণ করা হয়, তখন তাকে বলা হয় জপ। সেই মন্ত্রই যখন সকলের শোনার জন্য উচ্চৈঃস্বরে উচ্চারণ করা হয়, তখন তাকে বলা হয় কীর্তন। মহামন্ত্র জপ ও কীর্তন দুটিই করা যায়। জপের ফলে কেবল নিজেরই লাভ হয়, কিন্তু কীর্তনের ফলে শ্রবণকারী সহ সকলেরই কল্যাণ হয়। পদ্ম-পুরাণে বলা হয়েছে, “যে মানুষ ভগবানের দিব্য নাম জপ অথবা কীর্তন করেন, তাঁর কাছে স্বর্গসুখ ও মোক্ষ লাভের পন্থা তৎক্ষণাৎ উন্মুক্ত হয়।”