পারিপার্শ্বিক কোনও ঘটনা চিন্তা বাড়াতে পারে। সাংস্কৃতিক কর্মে যোগদান ও মানসিক তৃপ্তিলাভ। শরীরের খেয়াল রাখুন। ... বিশদ
‘তমেব বিদিত্বা অতিমৃত্যুমেতি নান্যঃ পন্থা বিদ্যতে অয়নায়।’ তাঁকে অর্থাৎ এই পরমাত্মাকে জানলেই মৃত্যুকে অতিক্রম করা যায়—অর্থাৎ অমরত্বলাভ করা যায়। এ ছাড়া অমরত্ব লাভ করবার দ্বিতীয় আর কোন পথ নেই।’
এই আত্মা বা পরমাত্মা আবার—‘অণোরণীয়ান্ মহতো মহীয়ান্’ সূক্ষ্ম থেকেও সূক্ষ্মতর আবার বৃহতের চেয়েও বৃহত্তর। ইনি অন্তরাত্মারূপে প্রত্যেকের ভিতরে বাস করেন। কিন্তু এই আত্মাকে বাক্যে প্রকাশ করা যায় না। তিনি ‘অবাঙ্মনসোগোচরম্’, বাক্য মনের অতীত। একমাত্র ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষেরাই আত্মার স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারেন—কিন্তু তাঁরা আত্মার প্রকৃত স্বরূপ মুখে বর্ণনা করতে পারেননি। তাই ঠাকুর বলেছেন—আত্মা বা পরমাত্মা উচ্ছিষ্ট হয়নি। অর্থাৎ কেউ মুখে বলতে পারে নি। বৃহদারণ্যকের ঋষি বলছেন—ইনি ‘প্রাণের প্রাণ’। প্রাণের পিছনেও ব্রহ্মা আছেন। ব্রহ্মকে বাদ দিয়ে প্রাণ কাজ করতে পারে না। আবার তিনি ‘চক্ষুষশ্চক্ষু্’, ‘শ্রোত্রস্য শোত্রম্’—চোখের চোখ, কানের কান। সাধারণের পক্ষে আত্মার সম্বন্ধে সম্যক ধারণা বড়ই কঠিন।” এবার ভগবান ব্রহ্মের স্বরূপ আর একটু বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করছেন। “উপনিষদের ঋষিরা তো ব্রহ্মের স্বরূপ এক কথায় বললেন তিনি ‘অবাঙ্মনসোগোচরম্’ অর্থাৎ বাক্য-মনের অতীত। ঠাকুর বললেন, ‘তাঁর ইতি করা যায় না।’ এতে ব্রহ্ম সম্বন্ধে ঠিক ঠিক ধারণা হল কি? আমরা অনেক কিছুই চাক্ষুষ দেখিনা কিন্তু তার যে অস্তিত্ব নেই তা তো নয়। বায়ুকে আমরা চোখে দেখিনা—কিন্তু বায়ু আছে। এই পৃথিবীটা শূন্যে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে এবং ২৪ ঘন্টা ৬ মিনিটে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে একবার পাক খাচ্ছে যার জন্যে দিন-রাত হচ্ছে, এটা কি আমরা ঠিক ঠিক অনুমান করতে পারছি? বিজ্ঞানীরা অঙ্ক কষে বুঝিয়ে দিয়েছেন বলে পৃথিবীর আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতির সম্বন্ধে আমাদের ধারণা হয়েছে। জড়বিজ্ঞান আমাদের এটা বুঝিয়ে দিয়েছে। অন্তর্বিজ্ঞান বলে আর একটা বিজ্ঞান আছে যার সম্বন্ধে সাধারণ মানুষের ঠিক ঠিক ধারণা নেই। একমাত্র ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষই এই অন্তর্জগতের খবর জেনেছেন, ব্রহ্মকে জেনেছেন, এঁদের বলা হয় অন্তর্বিজ্ঞানী। এঁরাই অন্তরের খবর জেনেছেন। এঁদের কথা আমাদের বিশ্বাস করতেই হবে যদি আমরা আধ্যাত্মিক জগতের কথা জানতে চাই।