হস্তশিল্পীদের কর্মে সাফল্য ও সুনাম। সন্তানের সঙ্গে মতবিরোধ হতে পারে। ধর্মকর্মে মনোযোগ বাড়বে। ... বিশদ
এই প্রচণ্ড গরমে উৎপাদন ও সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি হতে পারে বলে বেশ কয়েকটি সমীক্ষায় আগেই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও গত চার মাসে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার কিছুটা কমে ৪.৭৫ শতাংশে চলে এসেছিল ঠিকই, কিন্তু খুচরো বাজারে আনাজ সহ খাদ্যপণ্যের দাম ৮ শতাংশের উপরেই থেকে গিয়েছে। মে মাসে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির হার সামান্য কমেও দাঁড়িয়েছে ৮.৬৯ শতাংশে। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে খুচরো বাজারে আনাজের দাম বেড়েছে ২৭.৩৩ শতাংশ, ডালের দাম ১৭.১৪ শতাংশ, মাছ-মাংস-ডিমের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ শতাংশের বেশি, ফলের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ। একমাত্র ভোজ্যতেলের দাম কিছুটা কমেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে অশোধিত তেলের দাম ৮০ ডলারের কিছু বেশি রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন দেশের মধ্যে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে, তাতে যেকোনও সময়ে অশোধিত তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে। ফলে খুচরো বাজারে খাদ্যপণ্যের দামবৃদ্ধি নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। সম্প্রতি একটি সংস্থার সমীক্ষা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, টম্যাটো, আলু ও পেঁয়াজের দাম বাড়ায় মে মাসে গৃহস্থের নিরামিষ রান্নার খরচ বেড়েছে। ঘটনা হল, অত্যাবশ্যক পণ্য কেনার খরচ বেড়ে যাওয়ায় লোকের হাতে আর বাড়তি টাকা থাকছে না। অধিকাংশ পরিবারেই আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ৫.২০ শতাংশে দাঁড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। তাহলে সমস্যা আরও গভীর হবে সন্দেহ নেই। এর আগে ভোটের বাজারে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিরোধী শিবির বারবার সরব হলেও মোদি সরকার ছিল নির্বাক শ্রোতা। মূল্যবৃদ্ধি রোধের জন্য নেওয়া হয়নি কোনও ব্যবস্থা। বরং মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুটিকে আড়াল করতে ধর্মীয় ভাবাবেগকে উস্কে দিতে চেয়েছিল গেরুয়া শিবির। এবারও শোনা যাচ্ছে না মূল্যবৃদ্ধি রোধের তেমন কোনও আশ্বাস। অর্থাৎ আম জনতার সুরাহার আশা নেই।
এই সঙ্কটের মধ্যেই পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির নতুন ছবি সামনে এনে আরও উদ্বেগ বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারই। শুক্রবার কেন্দ্রের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিল মাসে পাইকারি বাজারে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ১.২৬ শতাংশ। মে মাসে সেটাই বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে (২.৬১ শতাংশ)। এই বৃদ্ধির হার গত পনেরো মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির গতিকে বাড়িয়ে তুলেছে খাদ্যপণ্যের দাম। তথ্য বলছে, পাইকারি বা হোলসেল মার্কেটে খাদ্যপণ্যের দামের হার পৌঁছেছে প্রায় ১০ শতাংশে (৯.৮২ শতাংশ)। এপ্রিল মাসে এই হার ছিল ৭.৭৪ শতাংশ। পাইকারি বাজারে শুধু আনাজের দামই বেড়েছে ৩২.৪২ শতাংশ। অন্যান্য পণ্যের মধ্যে আলু ৬৪.০৫ শতাংশ, পেঁয়াজ ৫৮.০৫ শতাংশ, ডাল ২১.৯৫ শতাংশ, খাদ্যশস্য ৯.০১ শতাংশ, ধান ১১.৭৯ শতাংশ, গম ৬ শতাংশ, ফল ৫.৮১ শতাংশ এবং দুধের দাম বেড়েছে ৩.৬১ শতাংশ। খবরে প্রকাশ, গত ষোলো বছরের মধ্যে গমের মজুত সবচেয়ে কম হয়েছে। এ বছর গম আমদানিও কম হতে পারে। তা হলে আগামী দিনে সঙ্কট আরও বাড়বে। খাদ্যপণ্যের সঙ্গে সঙ্গে রান্না করা খাবারের দামও বেড়েছে। দেখা গিয়েছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গত একবছরে একটি নিরামিষ খাবারের থালির খরচ ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেড়েছে। এখন গরিব, মধ্যবিত্তের এই নিদারুণ সঙ্কটে একমাত্র ‘ত্রাতা’ হতে পারে বৃষ্টি। মোদিতে কোনও ভরসা নেই।