কৃষিজ পণ্যের ব্যবসায় উন্নতি ও লাভ বৃদ্ধির যোগ। সাহিত্যচর্চা/ বন্ধু সঙ্গে আনন্দ। আর্থিক উন্নতি হবে। ... বিশদ
দেশকাল নির্বিশেষে যুগে যুগে কালে কালে ধর্মভীরু মানুষ বিশ্বাস করে এসেছেন, ঈশ্বরকে যে নামেই ডাকা হোক, মানুষকে ভালো রাখাই তাঁর লক্ষ্য। তবে কি দশ বছর ধরে যাবতীয় ব্যর্থতার ‘নায়ক’ মোদি নিজেকে ঈশ্বরের ‘দূত’ বলে প্রকারান্তরে ঈশ্বরেরই অপমান করছেন না? তথ্য ও পরিসংখ্যান সাক্ষী আছে যে, মোদি জমানায় ধনী দরিদ্রের ব্যবধান বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধি আকাশ ছুঁয়েছে। বেকারত্ব রেকর্ড করেছে। অপুষ্টি-ক্ষুধার সূচকে বিশ্ব ক্রমতালিকায় নীচের দিকে নেমেছে ভারত। ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী। তাঁর শাসনে গরিব-নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তের প্রকৃত আয় কমে গিয়েছে। অর্থাৎ তাঁর জমানায় মানুষ ভালো নেই। এসব কি তবে ঈশ্বরের ‘নির্দেশে’ করে চলেছেন মোদি? দেশের বেশিরভাগ মানুষকে ‘অসুখী’ রাখা নিশ্চয়ই ঈশ্বরের লীলা হতে পারে না। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সঠিকভাবেই বলেছেন, কোভিডের সময় যখন লাশের পাহাড় জমছে, তখন ‘ঈশ্বর প্রেরিত দূত’ দেশের মানুষকে বলছেন, থালা বাজাও, মোবাইল ফোনে টর্চ জ্বালিয়ে দাও। শিক্ষিত বেকাররা কাজ চাইলে এই ‘দূত’ বলতেই পারেন, নালায় গ্যাস রয়েছে সেই নালায় পাইপ ফেললে গ্যাস বেরবে, তাতে আগুন জ্বালিয়ে পকোড়া বানাও। যাঁকে ‘ঈশ্বর’ পাঠিয়েছেন তিনি শুধু কয়েকজন কোটিপতির জন্য কাজ করে গিয়েছেন। ঈশ্বরের প্রতি সাধারণ মানুষের অগাধ বিশ্বাস, আস্থা, প্রগাঢ় ভক্তি সর্বজনবিদিত। খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মোদি মানুষের সেই বিশ্বাসকে ভোটের পুঁজি করতে ঈশ্বরের নাম নিচ্ছেন! কিন্তু ঈশ্বরের এই অপমানে পরমাত্মা তাঁকে ক্ষমা করবেন তো?
এই একবিংশ শতকে দুটো দশক চলে যাওয়ার পরও দেশে ঈশ্বরের নামধারী ‘বাবাদের’ রমরমা এতটুকু কমেনি। অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার, অশিক্ষা, দারিদ্র্যের নাগপাশে বন্দি কোটি কোটি মানুষ আজও একশ্রেণির ঠগ ‘বাবাদের’ লালসার শিকার হচ্ছেন প্রতিদিন। প্রতিদিন প্রতারিত হয়েও তাঁরা ফের ঠগদের খপ্পরে পড়ছেন। এই ‘বাবারা’ আসলে ভেকধারী, ঈশ্বরের নামে ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন। সমাজ এদের বুজরুকি বাবা বলে মনে করে। ভগবানের নামে এরা প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে অধর্ম করে চলেছেন। আশঙ্কা হয়, দেশের এই রাষ্ট্রনায়ককে না শেষমেশ ‘বুজরুকি বাবা’র তকমা পেতে হয়।