শেয়ার ও বিমা সূত্রে অর্থাগম হতে পারে। কাজের প্রসার ও নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। বিদ্যা হবে। ... বিশদ
গত ১৯ এপ্রিল অষ্টাদশ লোকসভা গঠনের জন্য প্রথম দফার ভোট হয়েছে। তার ঠিক এক মাস আগে ১৯ মার্চ তামিলনাড়ুতে ভোট প্রচারে মোদিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ইন্ডি জোট অন্য কোনও ধর্ম নিয়ে একটি শব্দও বলে না। কিন্তু হিন্দুধর্ম নিয়ে বলতে এক সেকেন্ড সময় নেয় না। বক্তব্যের উদ্দেশ্য স্পষ্ট। গত ৬ এপ্রিল উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে এক জনসভায় মোদির বক্তব্য ছিল, কংগ্রেসের ইস্তাহারের সঙ্গে স্বাধীনতার আগের মুসলিম লিগের ভাবনা সামঞ্জস্যপূর্ণ। ৭ এপ্রিল বিহারের এক সভায় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, অযোধ্যায় যাতে রামমন্দির তৈরি হতে না পারে সেজন্য কংগ্রেস, আরজেডি সবরকম চেষ্টা করেছে। তাঁর প্রশ্ন, ভগবান রামের সঙ্গে এত শত্রুতা কেন? আরও আছে। গত ১১ এপ্রিল রাজস্থানে তিনি বলেছিলেন, কংগ্রেস আমলে মন্দির ভেঙে ফেলা হতো। ১৯ এপ্রিল উত্তরপ্রদেশে দাঁড়িয়ে তাঁর বক্তব্য ছিল, বিরোধীরা সনাতন ধর্মকে ঘৃণা করে। ২১ এপ্রিল রাজস্থানে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, কংগ্রেস সরকার হলে মা-বোনেদের সোনা-রুপো সমীক্ষা করা হবে। এই সোনা-রুপো যাদের বেশি বাচ্চা তাদের দেবে। মুসলমানদের দিয়ে দেবে।... মঙ্গলসূত্র ছিনিয়ে নেওয়া হবে। ইত্যাদি। এসব মন্তব্য কীসের ইঙ্গিত? উঠছে রুচির প্রশ্নও। শোভন-অশোভনের প্রশ্ন। বিরোধীদের অভিযোগ, সীমার বাইরে গিয়ে এমন সব মন্তব্য প্রধানমন্ত্রী করছেন যা অতীতে দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রীই করেননি।
আসলে ভোট টানতে এটাই মোদির ইউএসপি। মোদি ‘গ্যারান্টি’, মোদি ‘ব্র্যান্ড’ মানে সংখ্যালঘু বিদ্বেষ ছড়িয়ে, তাদের সম্পর্কে আতঙ্ক তৈরি করে সংখ্যাগুরু হিন্দুভোট একত্রিত করার কৌশল। মোদির এই প্রচার-কৌশলের ট্র্যাডিশন চলছেই। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে মুসলমানদের ত্রাণ শিবিরকে তিনি ‘সন্তান উৎপাদনের কারখানা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে মুসলিমদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৭-তে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের প্রচারে বলেছিলেন, গ্রামে কবরস্থান তৈরি হলে শ্মশানও তৈরি করতে হবে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পর সিএএ বিরোধী আন্দোলনের সময় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, যারা বিরোধিতা করছে তাদের পোশাক দেখেই চেনা যাচ্ছে। শুধু মেরুকরণের উদ্দেশ্যই নয়, তথ্য নিয়েও অসত্য ভাষণ দিয়ে চলেছেন মোদি! ভারতে জনসংখ্যার ১৫ শতাংশের মতো হচ্ছে মুসলিম। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অর্থাৎ পপুলেশন গ্রোথ হিন্দু-মুসলমানে খুব বেশি ফারাক নেই। মুসলিম পপুলেশন গ্রোথ হিন্দুদের তুলনায় সামান্য বেশি। অথচ মুসলিমরাই বংশ বৃদ্ধি করছে বলে ভিন্ন প্রচার চলছে। এসব প্রচারের একটাই অর্থ, ৫৬ ইঞ্চির ছাতির মনে ভয় ঢুকেছে। গদি হারানোর আতঙ্ক। তাই চলছে ঘৃণাভাষণ। কিন্তু এভাবে সংখ্যালঘু বিদ্বেষ ছড়িয়ে এবারও কি সংখ্যাগুরুদের ভোট পাওয়া যাবে? বড় প্রশ্ন এখন এটাই।