পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজনে আইনি চাপ বাড়তে পারে। কাজকর্মে যোগাযোগের অভাবে বিঘ্ন। ... বিশদ
এর পিছনে অনেকগুলি কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম দিল্লি শিবিরে সৌরভ গাঙ্গুলির উপস্থিতি। যতই কিং খান নাইটদের মালিক হোন না কেন, যতই তিনি ইডেনের জন্য কোটি কোটি ভাড়া গুনুন না কেন, এই মাঠের আসল ‘মহারাজ’ যে সৌরভই। সেটা ভালোই জানেন শাহরুখ। ২০১২ সালের ৫ মে ‘বঙ্গভঙ্গ’ দেখেছিল ক্রিকেটের নন্দনকানন। সেবার দাদার পুনে বনাম বাদশার কেকেআর হয়ে উঠেছিল লড়াইয়ের অভিমুখ। বারো বছর পর সেই মহানাটকীয় অধ্যায় নিয়ে দাদা-বাদশার দ্বৈরথের মিনি ভার্সন হাজির ইডেনে, কলকাতা-দিল্লির ম্যাচে।
সেদিন গ্যালারি গর্জেছিল ঘরের ছেলের হয়ে। প্রশ্ন উঠেছিল ইডেন তুমি কার? একই প্রশ্ন ফিরল রবিবার বিকেলের একটি বিতর্কিত ঘটনায়। আচমকা হর্ষিত রানা, ভরত অরুণদের নেট থেকে বের করে দেন কিউরেটর। আসলে দিল্লির অপশনাল প্র্যাকটিসের শিডিউল ছিল সন্ধ্যা ছ’টায়। তার ঘণ্টা খানেক আগেই ইডেনে ঘাম ঝরাতে শুরু করেছিলেন নাইটরা। পেসার হর্ষিতকে নিয়ে মূল পিচের বাঁ দিকের নেটে স্পট বোলিং প্র্যাকটিস করাচ্ছিলেন ভরত অরুণ। তা দেখে রে-রে করে তেড়ে যান কিউরেটর সুজন মুখার্জি। অনুরোধেও কাজ হয়নি। হর্ষিতরা নেট ছাড়তে বাধ্য হন। বলা ভালো, দিল্লি-কলকাতা দ্বৈরথে ছাই চাপা আগুনে ঘি ঢালা হয়ে যায় তখনই। তারপর আচমকাই শাহরুখের ইডেনে আবির্ভাব পুরো পরিস্থিতি বদলে দেয়। সিনেমায় এমন টক্কর দেখা যায় নায়ক ও খলনায়কের মধ্যে। কিন্তু সোমবার মহারণের আগে দুই মহানায়ককে ঘিরে রীতিমতো যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠেছে ইডেন।
ক্রিকেটীয় যুক্তিতে এই লড়াইয়ের অভিঘাত মাপা হয়তো কঠিন। পুরোটাই যে মনস্তাত্বিক। সৌরভ থাকবেন ডাগ-আউটে, দিল্লির ডিরেক্টর অব ক্রিকেট হিসেবে। আর শাহরুখ বসবেন বি ব্লকের ভিআইপি বক্সে। বাইশ গজের ধুন্ধুমার লড়াইয়ে তাঁদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা নেই। তবুও তাঁরা ভীষণভাবেই আছেন লড়াইয়ের বৃত্তে। বলা ভালো, তাঁদের ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে কলকাতা-দিল্লির দ্বৈরথের অভিমুখ।
আটটি খেলে দশ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে কেকেআর। দিল্লি ক্যাপিটালসও পিছন থেকে উঠে আসছে দ্রুত গতিতে। দশটি ম্যাচে তাঁদের ঝুলিতেও ১০ পয়েন্ট। তাই এই ম্যাচটি পয়েন্ট তালিকার নিরিখে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ম্যাচের আগে দুই শিবিরে এমন ছাই চাপা আগুন যে ধিক ধিক করে জ্বলছে, সেটা কিন্তু বিকেল চারটের সময়ও বোঝা যায়নি। তবে মুহূর্তে বদলে যায় আবহ। ক্লাব হাউসের সামনে পুলিসের ব্যস্ততা চোখে পড়ল। দিল্লির টিম বাস এসে দাঁড়াতেই দাদা, দাদা ধ্বনি উঠল চারিদিকে। সৌরভের ছবি দিয়ে তৈরি মুখোশ পরে গর্জন করল দাদা আর্মি। কলকাতাবাসী হয়েও তাঁরা কেকেআর বিরোধী। সৌরভের জন্যই গলা ফাটাবেন দিল্লির হয়ে।
নাইটদের প্র্যাকটিস শেষ হতেই শাহরুখ ইডেন ছাড়লেন। তখন দিল্লির নেটে কোচের ভূমিকায় মহারাজ। আশা করা হচ্ছিল, তাঁদের মুখোমুখি সাক্ষাতের। কিন্তু একে অপরকে দেখেও যেন দেখতে চাইলেন না। বন্ধুত্ব নয়, বজায় থাকল যুদ্ধের বার্তাই।