অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা, বাহন ক্রয়ের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সন্তানের বিদ্যা শিক্ষায় সংশয় ... বিশদ
এমনই বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর পেতে ক্রিকেট দুনিয়া তাকিয়ে রয়েছে বৃহস্পতিবারের আইসিসি বোর্ড মিটিংয়ের দিকে। টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে মতামত ব্যক্ত করবেন বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিনিধিরা। ভারতের হয়ে বক্তব্য তুলে ধরবেন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি। আইসিসি’র এবারের বোর্ড মিটিং বিভিন্ন দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনিতেই করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ক্রিকেট বন্ধ। তার জেরে ওলট পালট হয়ে যাওয়া ক্রীড়াসূচি নতুন করে সাজাতে হবে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে। পাশাপাশি সংস্থার নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন ঘিরেও পরিকল্পনা গৃহীত হতে পারে এই সভায়।
তবে ক্রিকেট অনুরাগীদের আগ্রহ অনেক বেশি আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভবিষ্যৎ নিয়ে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর বসার কথা। কিন্তু করোনার মোকাবিলার পদক্ষেপ স্বরূপ অস্ট্রেলিয়া সরকার সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সীমান্ত সিল করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে। এই অনিশ্চয়তার মধ্যে এ বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে রাজি নয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। তাছাড়া করোনা পরিস্থিতির কারণে পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সুযোগও পাবেন না ক্রিকেটাররা। তাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত রাখার জোরালো দাবি উঠেছে। এই ব্যাপারে বৃহস্পতিবার আইসিসি’র বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
সূত্রের খবর, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অক্টোবর-নভেম্বরের পরিবর্তে আগামী বছর একই সময়ে করতে চাইছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু সমস্যা হল, আগামী বছর অক্টোবরে-নভেম্বরে ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নির্ধারিত রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া যদি আগামী বছর বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চায়, তাহলে ভারতকে এই প্রতিযোগিতা করতে হবে ২০২২ সালে। কিন্তু বিসিসিআই এতে রাজি নয়। সংস্থার কর্তাদের যুক্তি, ২০২৩ সালে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ভারতে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ হবে। ফলে দুটি বিশ্বকাপের মধ্যে তিন-চার মাসের বেশি ফারাক থাকবে না। ফলে মার খাবে দ্বিতীয় টুর্নামেন্টটির আকর্ষণ। সেইসঙ্গে আবার আইপিএলও রয়েছে। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনটি বড় টুর্নামেন্ট আয়োজন করা সম্ভব নয়।
বিসিসিআই বেঁকে বসায় সমস্যায় পড়েছে আইসিসি। তাই সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে বাঁকা আঙুল ব্যবহার করতে প্রস্তুত বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা। তার পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছে বুধবারই। আইসিসি’র পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আমরা কোনও চিন্তাভাবনা করছি না।’ অর্থাৎ এই টুর্নামেন্ট স্থগিত না হলে আইপিএল হওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে বিসিসিআই বাধ্য হবে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্লট অস্ট্রেলিয়াকে ছেড়ে দিতে। এমনিতে আইসিসি জানিয়ে রেখেছে, ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠেয় পরের দুটি বিশ্বকাপে ভারত সরকার যদি কর ছাড় না দেয় তাহলে টুর্নামেন্ট অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে। অর্থাৎ বিভিন্ন দিক থেকে ভারতীয় বোর্ডের উপর চাপ তৈরির চেষ্টা করছে তারা। আর তা বুঝেছেন সৌরভও। গত দু’দিন ধরে তিনি সাজিয়ে নিয়েছেন স্ট্র্যাটেজি। আইসিসি’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মহারাজ পাশে পাবেন অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দুই শক্তিশালী দেশকে। অধিনায়ক হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেটকে শিখর স্পর্শের পথ দেখিয়েছিলেন সৌরভ। এবার ক্রিকেট প্রশাসকের ভূমিকায় আইসিসি’র বোর্ড মিটিংয়ে ভারতের দাবিকে তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।