বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে বিদায় নেওয়ার হতাশা কাটিয়ে গত কয়েক মাসে ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই আধিপত্য দেখিয়েছে ভারতীয় দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জিতে নিয়েছে একের পর এক সিরিজ। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই সিরিজেই প্রকৃত কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে কোহলিদের। আর সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত ‘মেন ইন ব্লু’। প্রথম সারির ব্যাটসম্যানরা ভালো ছন্দে রয়েছেন। যার মধ্যে রোহিত শর্মার কথা আলাদা ভাবে উল্লেখ করতেই হবে। এই মুহূর্তে কেরিয়ারের সেরা ফর্মে রয়েছেন তারকা ওপেনারটি। তার উপর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর রেকর্ড যেন একটু বেশিই ভালো। অজিদের বিরুদ্ধে মোট ৩৭টি ম্যাচ খেলে ২ হাজার ৩৭ রান করেছেন রোহিত। গড় ৬১.৭২। যার মধ্যে রয়েছে সাতটি সেঞ্চুরি এবং আটটি হাফ-সেঞ্চুরি। কম যান না ক্যাপ্টেন কোহলিও। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আটটি ওয়ান ডে সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর। আর একটি করলেই তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলবেন। যা আপাতত রয়েছে শচীন তেন্ডুলকরের (৯টি) দখলে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩৭টি ম্যাচ খেলে কোহলি করেছেন ১ হাজার ৭২৭ রান। গড় ৫৩.৯৬। ফলে বিরাট এবং রোহিতকে দ্রুত ফেরাতে না পারলে সফরকারী দলের বোলারদের কপালে দুঃখ রয়েছে।
এই সিরিজে রেকর্ডের হাতছানির সামনে দাঁড়িয়ে ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। একদিনের ফরম্যাটে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ২২ বার ওপেন করেছেন রোহিত-শিখর। তার মধ্যে ছ’বার একশো রানের জুটি গড়েছেন তাঁরা। এই সিরিজে যদি আর একটা সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ গড়তে পারেন, তাহলে কোনও একটা দেশের বিরুদ্ধে জুটিতে শতরানের মাপকাঠিতে সফলতম ওপেনিং জুটি হয়ে যাবেন রোহিত-ধাওয়ান। ভেঙে দেবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের গর্ডন গ্রিনিজ ও ডেসমন্ড হেইন্সের রেকর্ড। ভারতের বিরুদ্ধে মোট ২২ বার ওপেন করে ছ’বার একশো রানের জুটি গড়েছিলেন তাঁরা। এবার তাঁদের সামনে রয়েছে ক্যারিবিয়ান দুই কিংবদন্তিকে ছাপিয়ে যাওয়ার সুযোগ। আর সেটা মাথায় রেখেই হয়তো মঙ্গলবারও রোহিতের সঙ্গে ধাওয়ানকেই ওপেন করতে পাঠাবে টিম ম্যানেজমেন্ট। আর ওপেনার হিসেবে সম্প্রতি দারুণ ফর্ম দেখানো লোকেশ রাহুলকে তিন নম্বর পজিশন ছেড়ে দিয়ে নিজে চারে ব্যাট করার ইঙ্গিত দিয়েছেন কোহলি।
ভারতীয় বোলিং আক্রমণের হাল ধরতে প্রস্তুত যশপ্রীত বুমরাহ। পিঠের চোট সারিয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজেই দলে ফিরেছিলেন তারকা পেসারটি। এবার ওয়ান ডে’তেও আগুন ঝরানোর আভাস দিয়েছেন বুমরাহ। মহম্মহ সামির সঙ্গে তাঁর পেস জুটি যে কোনও প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করে দিতে পারে। তবে ভারতের দুই নির্ভরযোগ্য স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহালের ফর্ম নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তা রয়েছে। মিডল ওভারে তাঁদের সাদামাটা বোলিংয়ের ফায়দা নিতে মুখিয়ে থাকবেন অজি ব্যাটসম্যানরা।
এমনিতে এই মুহূর্তে যথেষ্ট ভালো ছন্দে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ দু’টি টেস্ট সিরিজে দুরন্ত দাপট দেখিয়েছে তারা। এবার ভারতের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রত্যয়ী অজি ব্রিগেড। তাদের গত ভারত সফরের সময় নির্বাসনে ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভ স্মিথ। ময়দানে ফিরে আসার পর থেকে ১৫টি ম্যাচে গড়ে ৫২.১৫ রান করে ৬৭৮ রান নিজের ঝুলিতে পুরেছেন স্মিথ। আর ১৬টি ম্যাচে ৬৯২ রান করেছেন ওয়ার্নার। গড় ৪৬.১৩। তার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন-আপে বাড়তি মাত্রা যোগ করার প্রতীক্ষায় রয়েছেন মার্নাস লাবুশানে। টেস্ট ক্রিকেটে ভেল্কি দেখানোর পর এবার একদিনের ম্যাচে অভিষেক হতে চলেছে এই নতুন মহাতারকার। সম্ভবত চার নম্বরে ব্যাট করবেন তিনি। ওপেন করবেন অধিনায়ক অ্যারন ফিনচ ও ওয়ার্নার। তিন নম্বরে স্টিভ স্মিথ।
অস্ট্রেলিয়ার বোলিং গভীরতাও দারুণ প্রশংসনীয়। তিন পেসার মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স ও জস হ্যাজেলউডের সঙ্গে তাল মেলাতে তৈরি অভিজ্ঞ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। তবে কামিন্সই হয়ে উঠতে পারেন সিরিজের এক্স-ফ্যাক্টর। গত ভারত সফরের সময় রীতিমতো সংহার মূর্তি ধরেছিলেন তিনি। পাঁচ ম্যাচে তুলে নিয়েছিলেন ১৪টি উইকেট। এখন তো আরও বেশি ধারালো হয়ে উঠেছেন আইপিএলের ইতিহাসে আর্থিক রেকর্ড গড়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সে নাম লেখানো কামিন্স। কোহলি-ব্রিগেডের কাছে নিশ্চিতভাবেই চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবেন তারকা পেস বোলারটি।