শেয়ার ও বিমা সূত্রে অর্থাগম হতে পারে। কাজের প্রসার ও নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। বিদ্যা হবে। ... বিশদ
সোমবার দুর্গাপুরে দলীয় প্রার্থী কীর্তি আজাদের সমর্থনে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘রানিগঞ্জ খনি অঞ্চল ধসপ্রবণ এলাকা। জামুড়িয়া বারাবনি অণ্ডালের ২৯ হাজার পরিবারের পুনর্বাসনের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। আমি আসানসোলের নেতৃত্বকে বলব, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওটা সম্পন্ন করতে।’ এরপরই বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘যা করার আমাদের করতে হবে। কারণ, কেন্দ্রের এনিয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপই নেই। কোনও কাজও করছে না।’
বিগত দু’দশক ধরেই ভোট-ইস্যু খনি অঞ্চলের পুনর্বাসন। রানিগঞ্জ থেকে অন্ডাল থেকে শুরু করে আসানসোলের বারাবনি সহ বিস্তীর্ণ এলাকা ধসকবলিত। গৃহ হারার আশঙ্কা মাথায় নিয়েই সবাইকে বসবাস করতে হয়। এ নিয়ে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা প্রতিটি ভোটে একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে ফায়দা তুলতে চান। আগের বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনেও তাই হয়েছে। এবার কিছুটা ব্যতিক্রমী পথে হাঁটলেন তৃণমূলনেত্রী। কেন্দ্রের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েও নিজের দায়িত্ব পালনের বার্তা দিলেন তিনি। স্বভাবতই মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তায় আশার আলো দেখছেন অনেকেই। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা বন্ধ করে দেওয়ার পরও একশো দিনের প্রকল্পে মানুষকে টাকা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। তাতেই ভরসা পাচ্ছেন ধস-আতঙ্কে থাকা খনি অঞ্চলের বাসিন্দারা।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো রানিগঞ্জ কয়লা খনি পুনর্বাসন প্রকল্পের অর্থ সাহায্য করার কথা ইসিএলের। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদকে। ২০১৯ সালের মধ্যে সেই প্রকল্প সম্পন্ন করার সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়। প্রকল্পের খরচ ধরা হয় ২ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে ২৯ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়ার কথা। কিন্তু বাম থেকে তৃণমূল সরকারের আমলেও দীর্ঘ টালবাহানা হয়েছে পুনর্বাসন প্রকল্প নিয়ে। রাজ্য বারবার অভিযোগ তুলেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ সাহায্য না করার কারণেই প্রকল্পের কাজ বারবার থমকে গিয়েছে। ইসিএলএর বিরুদ্ধে জমি না দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছে এডিডিএ। বেশ কয়েক বছর আগেই প্রকল্প দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য রাজ্য সরকার ফ্ল্যাট তৈরির দায়িত্ব দেয় আবাসন দপ্তরকে। চারটি জায়গায় প্রায় ১০ হাজারের বেশি নতুন ফ্ল্যাট হলেও পুনর্বাসন দেওয়া হয়নি।
এডিডিএ চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এই পুনর্বাসন সম্পন্ন না হওয়ার পিছনে দায়ী ইসিএল। আমরা আবেদন জানিয়েছি, যাঁরা বৈধ জমির মালিক, তাঁদের অর্থ দিয়ে পুনর্বাসন প্রকল্প সম্পন্ন করা হোক। ইসিএল ফ্ল্যাট নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ করলেও বৈধ জমি মালিকদের অর্থ সাহায্য করার ক্ষেত্রে এখনও সবুজ সঙ্কেত দেয়নি। এনিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন দ্রুত পুনর্বাসন প্রকল্প সম্পন্ন করতে হবে। বিষয়টি হাউসিং ডিপার্টমেন্টকেও জানাব। তারা যেন দ্রুত আমাদেরকে ফ্ল্যাটগুলি হস্তান্তর করে।’
বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার বলেন, ‘প্রথমদিকে বাম সরকার ও পরে তৃণমূল সরকার এই পুনর্বাসন প্রকল্প সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। নিয়ম মেনে কাজের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা পড়লেই ইসিএল টাকা দিয়েছে। সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যে বলে গিয়েছেন ২৯ হাজার বাড়ির বন্দোবস্ত তিনি করেছেন, তা দেখাতে পারবেন তো। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ভোটের আগে। তৃণমূল, বিজেপির টানাপোড়েনে জেরে পুনর্বাসন প্রকল্প সম্পন্ন হয়নি।’