বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
পুরুলিয়ার পুলিস সুপার এস সেলভা মুরগান বলেন, প্রাথমিকভাবে ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের পরই এবিষয়ে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হবে। এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলেই নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হবে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অরূপবাবু শহরের নিস্তারিণী কলেজে দীর্ঘদিন ধরেই পার্টটাইম অধ্যাপক অর্থনীতি পড়াতেন। ভালো ব্যবহারের জন্য তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। রবীন্দ্রপল্লির একবারে ভিতরের দিকে দোতলা বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে তিনি থাকতেন। তাঁর এক ভাই বাইরে থাকেন।
শনিবার সকালে অরূপবাবুর বাড়িতে গিয়ে দেখা গিল, সোফায় বসে রয়েছেন তাঁর বাবা-মা। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার পরেই বাঁদিকের ঘর তালা বন্ধ রয়েছে। ওই ঘরেই শুক্রবার রাতে শ্বাসরোধ করে অরূপবাবুকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তার পাশের ঘরটি কার্যত পরিত্যক্ত। বিভিন্ন সামগ্রী ও আসববাবপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। দোতলার একবারের শেষের ঘরও বন্ধ। অরূপবাবুর বৃদ্ধা মা লীলা চট্টরাজ বলেন, ছেলে অন্যান্য দিনের মতোই বাড়ি ফিরে রাতের খাওয়া দাওয়া সেরে দোতলায় যায়। তার কিছুক্ষণ পরেই অরূপ বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করে। আমি ছুটে দোতলায় যাই। অরূপের রুমে আলো না জ্বলায় অন্ধকার ছিল। কেউ ওকে মারার চেষ্টা করছিল। তখন নীচ থেকে টর্চ নিয়ে ফের অরূপের ঘরে গিয়ে দেখি, একজন অরূপের গলায় মাফলার জড়িয়ে মারার চেষ্টা করছে। টর্চের আলোয় তার মুখ স্পষ্ট দেখতে পাই। কিন্তু, চিনতে পারিনি। আমি অরূপকে বাঁচাতে গেলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ওই দুষ্কৃতী ফেলে দেয়। কিছুক্ষণ ধস্তাধস্তি হওয়ার পর অরূপ চুপ হয়ে যায়। এরপর ছাদের দরজা খুলে লোকটা পালিয়ে যায়।
অরূপবাবুর বাবা মনতোষ চট্টরাজ বলেন, আমি শুয়ে পড়েছিলাম। ওর মা ছেলের চিৎকার শুনে দোতলায় গিয়েছিল। ছেলের কোনও শত্রু নেই। কখন, কীভাবে বাড়ির ভিতরে খুনি ঢুকে বসেছিল, কিছুই বুঝতে পারিনি। পরে পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের স্ত্রী পাপড়ি বিশ্বাস(চট্টরাজ) অরূপবাবুর থেকে প্রায় ২০ বছরের ছোট। এদিন সকালে অরূপবাবুর বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে দেখতে পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে অরূপবাবুর মা লীলাদেবী বলেন, বউমা এবং নাতনি শুক্রবার রাতে বাড়িতেই ছিল। হাসপাতালের দিকে গিয়েছে।
অধ্যাপক খুনের ঘটনায় বেশকিছু বিষয় এখনও পুলিসের কাছে পরিষ্কার নয়। অরূপবাবুর চিৎকার শুনে তাঁর বৃদ্ধা মা ছুটে গেলেও তাঁর স্ত্রী দোতলায় স্বামীকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন কি না, আততায়ী কীভাবে বাড়িতে ঢুকেছিল এবং কীভাবে পালাল। পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসা করেও এসব প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর পুলিস পাচ্ছে না। ফলে অধ্যাপকের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য গভীর হচ্ছে।