আজ অর্থাগম ক্ষেত্রটি মধুর। কাজ করেও সাফল্যের অভাব। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় উন্নতি। ... বিশদ
পরনে সবুজ শাড়ি। লাল পাড়ে সুতোর কাজ। শাড়িতে আটকানো কংগ্রেসের প্রতীক। মুখে পরিশ্রমের ছাপ স্পষ্ট। তাতে হালকা ফাউন্ডেশনের ছোঁয়া লেগেছে। পরপর তিনজনকে আলাদা আলাদা কাজের নির্দেশ দিয়ে দলের কোর কমিটির এক সদস্যের থেকে জেনে নিলেন সারাদিনের পরিকল্পনা। কাডাপায় নিজের লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে কংগ্রেস প্রার্থীদের হয়ে প্রচারের মারাত্মক চাপ তাঁর মাথায়। হাতে সময় বেশি নেই। টি-২০ ম্যাচের ঢঙে শুরু হল কথোপকথন।
প্র: এখন তো প্রায় সবার গন্তব্য একটাই, বিজেপি। এই সময়ে আপনি কংগ্রেসে কেন? বাবার জন্য?
উ: অবশ্যই। আমার বাবা, প্রয়াত ড: ওয়াই এস আর আজীবন বিজেপি বিরোধী ছিলেন। কেন জানেন? কারণ, বিজেপি একটা সাম্প্রদায়িক দল। ওদের রাজনীতি হল ধর্মে ধর্মে ভেদাভেদ। ফলে পদ্ম শিবিরে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা আমার অন্তত ছিল না। আর একটা কারণ অবশ্যই রাহুল গান্ধী। প্রথম দফার ভারত জোড়ো যাত্রায় অন্ধ্রপ্রদেশে এসে সাফ জানিয়ে ছিলেন, এ রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদা দিতে প্রস্তুত কংগ্রেস। সেটাই আমার দলে যোগ দেওয়ার প্রধান কারণ।
প্র: এবারের নির্বাচনে বিজেপির অন্যতম প্রধান অস্ত্র হিন্দুত্ব। দক্ষিণ ভারতে এই স্ট্র্যাটেজি কাজ করবে?
উ: বিজেপি তো চায় ধর্মের ভিত্তিতে ভোট হোক। আশা করব, ওদের এই কৌশল শুধু দক্ষিণ কেন, সারা ভারতেই যেন সফল না হয়। আসলে এই ধরনের রাজনীতি যত বাড়বে, ততই মণিপুরের মতো ঘটনা আরও বেশি ঘটবে। আমাদের দেশ তো বহুত্ববাদের দেশ, ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এদেশে সব ধর্মের, সব ভাষাভাষীর মানুষ যাতে ভালো থাকেন, তার জন্য বিজেপির মতো একটি সাম্প্রদায়িক দলের ক্ষমতায় থাকা উচিত নয়।
প্র: কিন্তু মোদি তো ৪০০ পারের ডাক দিচ্ছেন। সেটা কী সম্ভব?
উ: একদমই নয়। বিজেপি এবার সারা দেশে ২৭০ পেরবে না।
প্র: আপনি কংগ্রেসে। ভাই জগনের দল ওয়াইএসআরসিপি অন্ধ্রে ক্ষমতায়। বিরোধিতাটা কোন জায়গায়?
উ: বাবা জনকল্যাণ আর উন্নয়ন দুটোকেই সমান গুরুত্ব দিতেন। অথচ জগন শুধু জনকল্যাণে গুরুত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু উন্নয়নও তো প্রয়োজন। তবেই ভবিষ্যত প্রজন্ম লাভবান হবে। বাবা সেচ প্রকল্পে অত্যন্ত জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আমলের কিছু কাজ এখনও চলছে। আমার মনে হয়, জগন্মোহনের উচিত বাবার অসমাপ্ত কাজগুলি শেষ করা। ও ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের জন্য ৩ হাজার কোটি ও ফসলের লোকসানে ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু এক বছর কেটে গেলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি।
প্র: ভাইকে নাকি উপহার হিসেবে একটা আয়না পাঠিয়েছেন?
উ: হ্যাঁ (হেসে)। আসলে ওঁর দাবি, চন্দ্রবাবু নাকি আমাকে কন্ট্রোল করছেন। সেই কারণেই নাকি আমি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি। কাডাপায় ভোটেও লড়ছি। কাকার রহস্যমৃত্যুর বিচার চাওয়া বোন সুনীতাকেও নাকি কন্ট্রোল করছেন চন্দ্রবাবু। এমনকী মোদি, রেবন্ত রেড্ডিকেও..! এ সব শুনে আমার মনে হয়েছে যে, চন্দ্রবাবুকে নিয়ে বোধহয় খুব অবসাদে ভুগছেন জগন। সেই কারণেই আয়না পাঠানো। আমি চাই জগন আয়নায় দেখে জানাক, সেখানে ও নিজেকে দেখছে নাকি চন্দ্রবাবুকে?