নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মাধ্যমিকের ফলে উজ্জ্বল উত্তরবঙ্গ। কোচবিহার যেমন প্রথম স্থান দখল করল, ঠিক তেমনই মেধা তালিকায় জায়গা করে নিল উত্তরবঙ্গেরই আরও ১৩ জন। ৬৯৩ নম্বর পেয়ে শীর্ষে রয়েছে কোচবিহারের রামভোলা হাইস্কুলের চন্দ্রচূড় সেন। দ্বিতীয় স্থানাধিকারী পুরুলিয়া জেলা স্কুলের ছাত্র সাম্যপ্রিয় গুরু। আবার তৃতীয় স্থানে একইসঙ্গে রয়েছে উদয়ন প্রসাদ, পুষ্পিতা বাঁশুরি এবং নৈঋত রঞ্জন পাল। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট হাইস্কুলের ছাত্র উদয়ন। পুষ্পিতা এবং নৈঋত যথাক্রমে বীরভূমের ইলামবাজার নিউ ইন্টিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুল এবং নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের পড়ুয়া। প্রথম দশে রয়েছে সব মিলিয়ে ৫৭ জন।
এবছর মাধ্যমিকে প্রায় ৮ লক্ষ ৭৭ হাজার নিয়মিত ছাত্রছাত্রী নথিভুক্ত হলেও পরীক্ষায় বসে ৮ লক্ষ ৭১ হাজার ৮৩৯ জন। এদের মধ্যে ছাত্র রয়েছে ৩ লক্ষ ৯৪ হাজার ৭০৫ জন। আর ছাত্রীর সংখ্যা ৪ লক্ষ ৭৭ হাজার ১৩৪। সার্বিক পাশের হার গতবারের তুলনায় ০.১৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৮৬.৩১ শতাংশ। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি হলেও পাশের হারে এগিয়ে আছে ছাত্ররা। ৮৯.২১ শতাংশ যেখানে ছাত্রদের পাশের হার, সেখানে ৮৩.৯০ শতাংশ ছাত্রী এ বছর মাধ্যমিকে সফল হয়েছে। মেধা তালিকাতেও ছাত্ররা এগিয়ে। ৫৭ জনের মধ্যে ছাত্র রয়েছে ৪৫ জন। জেলাভিত্তিক হিসেবে আবার প্রথমে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। প্রথমে দশে এই জেলা থেকে রয়েছে আটজন। দক্ষিণ দিনাজপুর, পূর্ব বর্ধমান এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে রয়েছে সাত জন করে। বাঁকুড়া, মালদহ এবং পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ৪ জন পরীক্ষার্থী প্রথম দশে। কলকাতা থেকে প্রতিনিধিত্ব অবশ্য মাত্র একজনের। 
পাশের হারে শীর্ষে রয়েছে কালিম্পং জেলা (৯৬.২৬ শতাংশ)। দ্বিতীয় স্থানে পূর্ব মেদিনীপুর (৯৫.৪৯ শতাংশ)। আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা (৯১.৬২ শতাংশ)। পাশের হারের দিক দিয়ে কলকাতাকে ছুঁইছুঁই পশ্চিম মেদিনীপুর (৯১.৪১ শতাংশ) এছাড়া, উত্তর ২৪ পরগনার পাশের হারও ৯০ শতাংশের উপরে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, এদিনই www.wbbsedata.com-এ রিভিউ-স্ক্রুটিনির জন্য অনলাইন আবেদন শুরু করা হয়েছে। তা করা যাবে ১৮ মে পর্যন্ত। ফল নিয়ে অসন্তুষ্ট ছাত্রছাত্রীরা পর্ষদের নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে (রিভিউয়ের ক্ষেত্রে বিষয়পিছু ১০০ টাকা এবং স্ক্রুটিনির জন্য বিষয় পিছু ৮০ টাকা) স্কুলের মাধ্যমে আবেদন জানাতে পারবে।
এ বছর মাধ্যমিকের সময় এগিয়ে এনে শুরু হয় সকাল ৯টা ৪৫মিনিট থেকে (উত্তর লেখার অনুমতি ছিল সকাল ১০টা থেকে)। পর্ষদের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ায় সমস্ত ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক এবং সহযোগী সমস্ত মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছে তারা। এ বছর সাতটি আবশ্যিক বিষয়, ১২টি প্রধম ভাষা, তিনটি দ্বিতীয় ভাষা এবং ৪৭টি ঐচ্ছিক বিষয়ে পরীক্ষা হয়। বিশেষভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থীদের পাশের হার ৮৬.৯০ শতাংশ। সংখ্যালঘু ছাত্রীরা (১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৯৫) ছাত্রদের (৯৮ হাজার ৬৯৮) দেড়গুণেরও বেশি সংখ্যায় পরীক্ষায় বসে। তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতিদের মধ্যে পাশের হার যথাক্রমে ৮০.৬১ শতাংশ এবং ৬৮.৮৩ শতাংশ। জালিয়াতি রুখতে পর্ষদ মার্কশিট এবং শংসাপত্রে কিউআর কোড চালু করেছে।