পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজনে আইনি চাপ বাড়তে পারে। কাজকর্মে যোগাযোগের অভাবে বিঘ্ন। ... বিশদ
উল্টে রবিবার গুচ্ছের ঘাম উপহার দিল আবহাওয়া। সকাল থেকে রোদও বেশ চড়া। বৃষ্টির নামগন্ধ নেই। বেলা বাড়তেই দর দর করে ঘাম। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এদিন বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ প্রায় ৯০ ছুঁইছুঁই। যা গত ক’দিন ছিল কুড়ির ঘরে। তবে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি না ওঠায় গরম খানিক কম। গরম হাওয়ার চোখ-মুখ জ্বালানোর তীব্রতাও ছিল না। সূর্য ডোবার পর হাওয়ার গতিবেগ আরও বেড়েছিল। এরই মধ্যে ভেসে এল স্বস্তিমাখা খবর, আলিপুর হাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস বললেন, ‘আজ, সোমবার থেকে বৃষ্টির অনুকুল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সোম ও মঙ্গল বৃষ্টির সম্ভাবনা।’ শোনার পর ফের শহর আশায় বুক বাধল। আর এক পশলা ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির অপেক্ষায় চাতকের মতো আকাশে চোখ।
শ্যামবাজার বাস স্ট্যান্ডে কুলকুল করে ঘামছেন অনাদি মুখোপাধ্যায়। যাবেন গড়িয়া। বিরক্তিতে প্রায় চেঁচিয়ে উঠেই বললেন, ‘কবে যে বৃষ্টি আসবে কে জানে!’ পাশে দাঁড়িয়ে অন্য এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির অপেক্ষা ছেড়ে দিয়েছি।’ বাস পৌঁছল গড়িয়া মোড়ে। সেখানে কোনও এক সংস্থা ঠান্ডা জলের বোতল উপহার দিচ্ছিল পথচারীদের। যাত্রীদের প্রায় সবাই বাস থেকে হাত বাড়িয়ে জল নিলেন। এদিকে বালিগঞ্জে তখন আম পাড়ার হিড়িক। বাচ্চা ছেলেরা রাস্তার ধারের গাছে উঠে দেদার আম পাড়ছে। এক ব্যক্তি তাড়া করলেন। পালাতে পালাতে বাচ্চাগুলোর বলে গেল, বৃষ্টি এলে পাড়তে আসব। তখন কেউ দেখতে পাবে না।
হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বোচ্চ ৮৮ শতাংশ। সর্বনিম্ন ৫৪। এই আর্দ্রতা দিনকয়েক আগেও ছিল কুড়ির ঘরে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ হঠাৎ এতটা বেড়ে যাওয়ার কারণেই ঘেমে নেয়ে একসা শহর।
বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে দু’টি পানীয় জলের কলে লম্বা লাইন। অটো-ট্যাক্সি-বাসচালকরা গাড়ি দাঁড় করিয়ে বোতলে জল ভরে নিচ্ছেন দুপুরে। সরু ধারায় জল পড়ছে কল থেকে। বোতল ধরেই রয়েছেন সবাই। তাদের চোখেমুখে প্রবল বিরক্তি। গড়িয়াহাট মোড়ে ছোট গ্লাসে পথচারীদের জল দেওয়া হচ্ছে একটি সংস্থার পক্ষ থেকে। রাস্তা পারাপার করার সময় মানুষের হাতে জলের গ্লাস তুলে দিচ্ছেন সংস্থার সদস্যরা। এক ব্যক্তি বললেন, ‘গরমে জলও গরম হয়ে গিয়েছে। কবে যে ছাই বৃষ্টি আসবে?’ সায়েন্স সিটির সামনে এক মহিলা হকার বললেন, ‘দুপুরবেলা দোকান খুলছি না। আজ ভাবলাম বৃষ্টি হবে। খদ্দেরের ভিড় বাড়বে। তাই দোকান খুলেছিলাম। কিন্তু কোথায় কী?’ জলের গ্রাস হাতে নিয়ে এক ব্যক্তির সরস মন্তব্য গড়িয়াহাটে। ‘গলা ভেজানোর ব্যবস্থা তো স্বেচ্ছাসেবকরা করছেন। কিন্তু সবার মন তখনই ভিজবে যখন আকাশ থেকে জল পড়বে।’
একটু, সামান্য একটু বৃষ্টিসুখেরউল্লাস চায় কলকাতা। ইন্দ্রদেব মুখ তুলে চান, প্লিজ।