আর্থিক উন্নতি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। বস্ত্রাদি ও বিবিধ অলঙ্কারাদি ব্যবসার গতি বৃদ্ধি ও মানসিক তৃপ্তি। ... বিশদ
জেলার অনেক ঘরের ছেলে ভিনরাজ্যে পাঠরত। বেছে বেছে এই ধরনের ফোন আসছে তাঁদের বাবা-মায়ের কাছে। স্বাভাবিকভাবে সকলেই ঘাবড়ে যাচ্ছেন। নাওয়া-খাওয়া ভুলে ‘ধর্ষণ’-এর মতো অপরাধ থেকে ছেলেকে বাঁচাতে তৎপর হয়ে উঠছেন। কেউ কেউ ওই ‘ডিএসপি’র প্রস্তাব মতো টাকাও ঢেলে দিচ্ছে। কিন্তু একবারের জন্য তাঁদের মাথায় আসছে না, আচ্ছা ছেলেকে তো একবার ফোন করে দেখলে হয়! সত্যিই কী সে ‘ধর্ষণ’-এর মামলায় জড়িয়েছে? আসলে, ওইরকম ভরাট গলায় ‘ডিএসপি’র ফোন পাওয়ার পরই অনেকের অবস্থাটা হয়ে যায় ‘দশচক্রে ভগবান ভুত’-এর মতো! তখন আসল ডিএসপি আর সাইবার চক্রের ‘ডিএসপি’র তফাৎটাই গুলিয়ে ফেলেন অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছে জেলার সাইবার ক্রাইম থানা। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনের বড়িতে এরকম ফোন এসেছিল বলে থানা সূত্রেই খবর।
ক’দিন আগের কথা। সিউড়ি আদালতের এক সরকারি আইনজীবীর কাছে একটি ফোন আসে হোয়াটস অ্যাপে। নম্বরটির প্রোফাইলে একজন উর্দিধারীর ছবি। কাঁধে তিনটে স্টার। দেখলেই মনে হবে ডিএসপি র্যাঙ্কের অফিসার। ফোন ধরতেই হিন্দিতে পরিচয় দেয় সে। কোন থানা ফোন করা হচ্ছে, কোন অফিসার বলছে, তা বলে। তার পরই বলতে শুরু করে, একটি গণধর্ষণের মামলাতে আপনার ছেলে ফেঁসে গিয়েছে। সবাইকে আটক করে রাখা হয়েছে। আদালতে পাঠানোর আগে মিটমাটের সুযোগ রয়েছে। ৭ লক্ষ টাকা দিয়ে মামলাটি থানাতেই মিটিয়ে নেওয়া যাবে। ফোন পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই ওই আইনজীবী ঘাবড়ে যান। পরক্ষণেই তিনি অবশ্য বুঝতে পারেন, এটা ভয় দেখানো হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ছেলেকে ফোন করেন। এবং নিশ্চিত হয়ে যান, এসব কিছুই ঘটেনি।
ওইদিনই ওই আইনজীবীর ছেলের এক বন্ধুর বাবার কাছেও একই রকম ফোন এসেছিল বলে জানা গিয়েছে। তিনি ঘাবড়ে সটান চলে যান সাইবার থানায়। পুলিস তাঁকে আশ্বস্ত করে।। পুলিসের অনুমান, সম্ভবত কলেজ থেকেই ওই দুই বন্ধুর নাম, ফোন নম্বরের তথ্য প্রতারকদের হাতে কোনওভাবে গিয়েছে। পাকিস্তান থেকে ওই ফোন করা হয়েছিল বলে মনে করছে পুলিস। ওই আইনজীবী বলেন, ‘প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। পরে সব বুঝতে পারি। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।’
সাইবার অপরাধ দমনে যুক্ত অফিসাররা বলছেন, দিন দিন মানুষ সতর্ক হয়ে যাওয়াই প্রতারকরা তাদের ছক বদলে ফেলছে। মানুষককে কীভাবে প্রলোভন কিংবা ভয় দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা যায়, তা নিয়ে নিত্য নতুন টোপ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি অফিসাররা জানতে পেরেছেন, বিভিন্ন এজেন্টরা তথ্যভাণ্ডার জোগাড় করে মোটা টাকায় তা প্রতারকদের কাছে বিক্রি করছে। বেনামের একাধিক মোবাইল সিম কার্ডও এভাবেই বিক্রি হয়। সাইবার বিশেষজ্ঞদের দাবি, নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্য যতটা সম্ভব গোপন রাখতে হবে। কোনও অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে ব্যক্তিগত তথ্য চাইলে দেওয়া চলবে না। সতর্ক না হলে সমূহ বিপদ!