শরীর নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে। মাথা ও কোমরে সমস্যা হতে পারে। উপার্জন ভাগ্য শুভ নয়। ... বিশদ
বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) শঙ্কর নস্কর বলেন, জেলায় প্রায় ২৬ হাজার অপুষ্ট শিশু রয়েছে। লকডাউনের কারণে তাঁদের অধিকাংশের পরিবার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার প্রভাব ওই শিশুদের উপরেও পড়ছে। তাই ওই সমস্ত পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ১০০দিনের কাজের মাধ্যমে আর্থিকভাবে সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তার জন্য ওই শিশুদের পরিবারের জবকার্ড সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়াও ওই শিশুর পরিবারকে অন্যান্য সামাজিক প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টির জন্য ফলের চারাও দেওয়া হবে।
বাঁকুড়া জেলা সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক পার্থসারথি বসু বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে অপুষ্ট শিশুদের পরিবারের জবকার্ড সহ অন্যান্য তথ্য চাওয়া হয়েছে। তা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্মগতভাবে অথবা পুষ্টিকর খাবারের অভাবে কম ওজনের শিশুদের জেলার প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সাধারণদের চেয়ে দ্বিগুণ খাবার দেওয়া হয়। চাল, ডাল, আলু সহযোগে খিচুড়ি সহ ছাতু, ডিম ও কলা দেওয়া হয়। শিশুরা কেন্দ্রে বসেই তা খায়। তাতে তাদের ওজন অনেকটাই বৃদ্ধি পায়। এভাবেই ধীরে ধীরে জেলায় অপুষ্টির হার কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু, লকডাউনের কারণে বর্তমানে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রতিমাসে একবার করে সকল শিশুকে ২ কেজি করে চাল, আলু ও ৩০০গ্রাম করে ডাল দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে তা পরিবারের হাতে পড়ায় অপুষ্ট শিশুদের সরাসরি কাজে আসছে না। তাছাড়া কেন্দ্র বন্ধ থাকায় ছাতু, ডিম ও কলা থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছে।
অপরদিকে, লকডাউনের কারণে গ্রামবাংলার বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে আর্থিকভাবেও সঙ্কটে পড়েছেন। তার প্রভাব অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের উপরেও পড়েছে। আর্থিক সঙ্কটের জেরে অভিভাবকরা বাড়িতে তাঁদের শিশুকে পুষ্টিযুক্ত খাবার দিতে পারছেন না। তাই জেলায় অপুষ্ট শিশুর হার বাড়ার আশঙ্কা করে জেলা প্রশাসন তাদের পরিবারকে বিশেষ আর্থিক সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, কোনও পরিবারের ১০০দিনের কাজের জন্য জবকার্ড না থাকলে শিবির করে তা করে দেওয়া হবে। এছাড়াও ওই পরিবারগুলিকে ফলের চারা দেওয়া হবে। ১০০দিনের কাজের মাধ্যমেই ফলের চারার গর্ত খোঁড়া থেকে শুরু করে পরিচর্যার কাজ করা হবে। তার জন্য অপুষ্ট শিশুর পরিবারই ১০০দিনের কাজের প্রকল্পে টাকা পাবেন। পরবর্তীকালে ওই ফলের গাছ স্থায়ী সম্পদে পরিণত হবে। তা শিশুদের পুষ্টি বৃদ্ধিতে কাজে আসবে।
বিষ্ণুপুরের সিডিপিও দেবরঞ্জন রাজ বলেন, আমাদের ব্লকে ১৩৬২জন অপুষ্ট শিশু রয়েছে। লকডাউনের সময়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে গত দু’মাসে দু’বার করে চাল, ডাল ও আলু দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্র চলাকালীন অপুষ্ট শিশুদের জন্য পরিপূরক পুষ্টিযুক্ত খাবারে বাড়তি বরাদ্দ থাকলেও এক্ষেত্রে সব শিশুকে সমান হারে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি অপুষ্ট শিশুদের পরিবারের জবকার্ড সংক্রান্ত তথ্য জেলায় পাঠানো হয়েছে।