বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
একসময় অন্তরালে থাকতে পছন্দ করলেও, সম্প্রতি প্রচারের আলোয়ে আসতে শুরু করেছিলেন জেনারেল সোলেমানি। ইনস্টাগ্রামের ফলোয়ার সংখ্যার নিরিখে ইরানে রীতিমতো সেলেব্রিটির তকমা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে ইরানের হস্তক্ষেপের পরই সোলেমানিকে সামনে তুলে ধরেছিল তেহরান। যুদ্ধক্ষেত্রের ছবি হোক বা তথ্যচিত্র, সবেতেই সগর্ব উপস্থিতি ছিল সোলেমানির। এমনকী, বিভিন্ন মিউজিক ভিডিও এবং অ্যানিমেশন ছবিতেও তাঁকে হামেশাই দেখতে পাওয়া যেত। গত অক্টোবরে ইরানের সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে সোলেমানি জানিয়েছিলেন, ২০০৬ সালে হেজবোল্লাহ-ইজরায়েল যুদ্ধের সময় তিনি লেবাননে ছিলেন। সেখান থেকে এই যুদ্ধের উপর নজর রাখছিলেন তিনি। যদিও আমেরিকার দাবি, লেবাননের হেজবোল্লাহ এবং প্যালেস্তাইনের হামাস জঙ্গিগোষ্ঠীর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের কাজ করতেন নিহত ওই সেনা কমান্ডার।
মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক দিক থেকে তেহরানকে এগিয়ে রাখতে সোলেমানির ভূমিকা ছিল অপরিসীম। জিহাদিদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে ইরাক, সিরিয়ার মতো দেশগুলির সঙ্গে ইরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করার নেপথ্যেও তিনিই ছিলেন মূল কারিগর। ‘মধ্যপ্রাচ্যের শিয়াদের কাছে উনি হলেন জেমস বন্ড, আরউইন রোমেল এবং লেডি গাগার মিশেল। অন্যদিকে ইরানের ইসলামিক বিপ্লবের ভাবধারা পশ্চিমে আমদানি করার জন্য সোলেমানিকেই দায়ী করে পাশ্চাত্যের দেশগুলি।’ ২০১৭ সালে টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় সোলেমানি সম্পর্কে এমনটাই লিখেছিলেন সিআইএ’র প্রাক্তন অ্যানালিস্ট কেনেথ পোলাক।
যুদ্ধক্ষেত্রে অন্য রূপে থাকলেও স্বভাবে অত্যন্ত বিনয়ী এবং মিতভাষী ছিলেন সোলেমানি। ইরান তো বটেই, ইরাকেও তাঁর এই ব্যক্তিত্ব ব্যাপক সমাদৃত ছিল। ইরাকের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘উনি ঘরের একটা কোনায় চুপচাপ বসে থাকতেন। কোনও মন্তব্য করতেন না, প্রতিক্রিয়াও দিতেন না। শুধু সবার কথা শুনে যেতেন। যদিও, তখন ঘরের মধ্যে সকলের মাথায় শুধু তাঁরই চিন্তা ঘুরত।’
সোলেমানির জনপ্রিয়তার আঁচ পাওয়া গিয়েছে ২০১৮ সালের একটি সমীক্ষায়। মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইরানপোলের ওই যৌথ সমীক্ষায় সোলেমানির জনপ্রিয়তার রেটিং ৮৩ শতাংশে পৌঁছে যায়। যা ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি এবং বিদেশমন্ত্রী জাভাদ জারিফের রেটিংয়ের থেকে অনেকটাই বেশি ছিল।
ইরান-আমেরিকার সংঘাতের
আবহে ফের তেলের দামবৃদ্ধি
তেহরান, ৩ জানুয়ারি (এএফপি): মার্কিন হামলায় ইরানের সেনা কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলেমানির মৃত্যু পর যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ইরান এবং আমেরিকার মধ্যে। আর তার ফলেই শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম একধাক্কায় ৪ শতাংশের বেশি বেড়ে গেল। তেল সরবরাহকারী সংস্থা ব্রেন্ট দাম বাড়িয়েছে ৪.৪ শতাংশ। তাদের ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৬৯.১৬ মার্কিন ডলারে। অন্যদিকে, আর এক সংস্থা ডাব্লুটিআই ৪.৩ শতাংশ বাড়িয়ে ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম ধার্য করেছে ৬৩.৮৪ মার্কিন ডলার। শেষবার গত সেপ্টেম্বরে তেলের দাম এতটা বেড়েছিল। সেবার সৌদির দু’টি তেল শোধনাগারে হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তেলের উৎপাদন ও সরবরাহে প্রভাব পড়ে। ফলে একধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যায় তেলের দাম। ওই হামলাতেও ইরানকেই দায়ী করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, সোলেমানির মৃত্যুর পর ইরাকের বিভিন্ন তেল শোধনাগারে কর্মরত মার্কিন কর্মী-আধিকারিকরা তড়িঘড়ি দেশ ছাড়তে শুরু করেছেন। শুক্রবার ভোরেই অনেকে ইরাক ছেড়েছেন। বাকিরাও বিকেলের মধ্যে বিমান ধরে নেন। তবে, এর ফলে ইরাকের তেল উৎপাদনে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই জানিয়েছে সেদেশের তেল মন্ত্রক।