বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
শুক্রবার ভোরে বাগদাদ বিমানবন্দর থেকে বেরচ্ছিলেন সোলেমানি। মনে করা হচ্ছে, সিরিয়া অথবা লেবানন থেকে ফিরেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন সেনাকর্তা। মাত্র দু’টি গাড়ির কনভয় ছিল। বিমানবন্দরের কার্গো এরিয়ার সামনে আচমকাই মার্কিন ড্রোন থেকে কনভয় লক্ষ্য করে মিসাইল ছোঁড়া হয়। দু’টি গাড়িই সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই সোলেমানি এবং মুহান্দিস সহ মৃত্যু হয় মোট ১০ জনের। ঘটনার পরপরই পেন্টাগন বিবৃতি জানায়, সবটাই হয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে। দেশের বাইরে মার্কিন নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল বলেও বিবৃতিতে দাবি করেছে পেন্টাগন। আমেরিকার দাবি, চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে ইরানের মার্কিন দূতাবাস ঘেরাও করে যে হিংসাত্মক বিক্ষোভ হয়েছিল, তাতে হাশেদের সমর্থকরাই জড়িত ছিল। যাতে ইন্ধন জুগিয়েছিলেন কাশেম সোলেমানি।
কয়েকদিন আগে রকেট হামলায় ইরানে কর্মরত এক মার্কিন কন্ট্রাক্টরের মৃত্যুর পর তেহরানকে সরাসরি হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তখন থেকেই এই হামলার ছক কষা শুরু হয়ে যায় বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সময় ট্যুইটারে ট্রাম্প লিখেছিলেন, ‘এর জন্য ইরানকে বড় মূল্য চোকাতে হবে। এটা কোনও সাবধানবাণী নয়, সরাসরি হুমকি দিচ্ছি।’ তবে, শুক্রবারের এই হামলার খবর মন্ত্রীদেরও টের পেতে দেননি প্রেসিডেন্ট। এমনটাই জানিয়েছেন হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান এলিয়ট এঙ্গেল। বর্তমানে ফ্লোরিডায় ছুটি কাটাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিন সোলেমানির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মার্কিন জাতীয় পতাকার একটি ছবি ট্যুইট করেন ট্রাম্প। যদিও ছবির সঙ্গে একটি শব্দও লেখেননি তিনি। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে ইতিমধ্যেই স্বাগত জানিয়েছেন তাঁর প্রাক্তন ক্যাবিনেট সদস্য নিকি হ্যালি।
এদিকে, এই হামলার জন্য আমেরিকাকে কঠোর প্রত্যাঘাতের জন্য তৈরি থাকার হুমকি দিয়েছেন ইরানের শীর্ষনেতা আয়াতোল্লা আলি খামেইনি। সোলেমানিকে শ্রদ্ধা জানাতে তিনদিন রাষ্ট্রীয় শোকপালনের ঘোষণাও করেন তিনি। পাশাপাশি, সোলেমানির উত্তরসূরি হিসেবে রেভলিউশনারি ফোর্সের ডেপুটি চিফ ইসমাইল কানির নামও ঘোষণা করে দেন তিনি। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি জানান, আমেরিকার এই নারকীয় অপরাধের জন্য ইরান সহ এই অঞ্চলের স্বাধীন রাষ্ট্রগুলি প্রতিশোধ নেবেই। ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভাদ জারিফ আক্রমণের সুরে জানান, এই হামলা চালিয়ে আমেরিকা ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং মূর্খের’ মতো কাজ করেছে। প্রশাসনের আর এক শীর্ষকর্তা মোহসেন রেজাই আবার আমেরিকার বিরুদ্ধে ‘ভয়ঙ্কর প্রতিশোধের’ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি জানান, কীভাবে সেই প্রত্যাঘাত করা হবে, তার রূপরেখা ঠিক করতে শীঘ্রই বৈঠকে বসছে দেশের শীর্ষ নিরাপত্তা পরিষদ। ইরাকের তরফে প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহাদি এই ঘটনাকে ‘ভয়ঙ্কর’ আখ্যা দিয়েছেন। এর জেরে ‘অশান্তি’ আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা করেছেন তিনি। ইরানের মদতপুষ্ট লেবাননের হেজবোল্লা গোষ্ঠী সোলেমানির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে চরম প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে। অন্যদিকে, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই হত্যাকাণ্ডের জেরে গ্রিস সফর কাটছাঁট করতে বাধ্য হয়েছেন। এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ইরানের মিত্রদেশ চীনও। চীনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্কে সেনাবাহিনীর ব্যবহারের বরাবরই বিরোধ করেছে বেজিং। তিনি বলেন, ‘দু’পক্ষের উদ্দেশে বিশেষ করে আমেরিকার কাছে আবেদন, শান্ত থাকুন। সংযম বজায় রেখে উত্তাপ কমানোর চেষ্টা করুন।’ ভারতের তরফেও দু’তরফে সংযম বজায় রাখার আর্জি জানানো হয়েছে।