উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
তবে কেবল সিপিএম বা বামফ্রন্টই নয়, তৃণমূলকে ঠেকাতে বিজেপির আশাতীত উত্থানের কারণে অনেকটাই মুখ থুবড়ে পড়েছে কংগ্রেসও। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর তারা বহরমপুর ও দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্র দু’টি দখল করলেও দলের ভবিষ্যতের প্রশ্নে পুরোপুরি নিশ্চিন্তে নেই। কারণ, এই দু’টি আসনেই বামেরা আনুষ্ঠানিকভাবে সৌজন্যের খাতিরে প্রার্থী না দিয়ে কংগ্রেসকেই পুরোপুরি সমর্থন জানিয়েছিল। তাই বাম, বিশেষ করে সিপিএমের ভোট না পেলে শেষমেশ কংগ্রেসের খাতা খোলার সৌভাগ্য হতো কি না, তা নিয়েও প্রদেশ নেতৃত্বের মধ্যে সংশয় রয়েছে। এই কারণে বিধানসভার আসনের নিরিখে বামেদের মতো পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন না হয়ে গেলেও এই খাতে তাদেরও ক্ষতি কম কিছু নয়। সবচেয়ে বড় কথা, সুজনবাবুর মতো কংগ্রেস পরিষদীয় তথা বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও তাঁর চাঁপদানি বিধানসভা কেন্দ্রে বহু হাজার ভোটে পিছিয়ে পড়েছেন। তবে এই ভরাডুবির বাজারেও কংগ্রেসের কয়েকজন বিধায়ক নিজেদের কেন্দ্রে বিজেপি বা তৃণমূলের থেকে এগিয়ে থাকার নজিরও তৈরি করেছেন।
২০১৬ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের বিধানসভা নির্বাচন করে বামফ্রন্টের টিকিটে মোট ৩২ জন বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। একজন উভয় দলের সমর্থনে নির্দল হয়ে জিতেছিলেন। সেই নির্দল বিধায়ক প্রথম শিবির ত্যাগ করে তৃণমূলে নাম লেখান। পরবর্তীকালে গত তিন বছরে সিপিএম সহ ফ্রন্টের আরও পাঁচ বিধায়ক শাসক শিবিরে চলে গিয়েছেন। সেই নিরিখে বর্তমানে যে ২৭ জন বাম বিধায়ক রয়েছেন, তাঁদের সকলেই এবারের ভোটে নিজেদের কেন্দ্রে পিছিয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ আসনে তাঁদের টেক্কা দিয়েছে বিজেপি। বাকিগুলিতে তৃণমূল। একই কারণ ও বিপর্যয়ের ছবি কংগ্রেস বিধায়কদের ক্ষেত্রেও ধরা পড়েছে।
দল তথা বামেদের এই বিপর্যয় নিয়ে সিপিএম নেতৃত্ব দলীয় নিয়ম মেনে দফাওয়াড়ি পর্যালোচনা বৈঠক করবে। সেই লক্ষ্যে আজ, শনিবার এ নিয়ে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী প্রথম বৈঠক করবে। তারপর ১ জুন তারা ফের আলোচনায় বসবে। বিশদে চর্চা হবে ৪ জুন রাজ্য কমিটির বৈঠকে। তবে বাম ভোট রামে চলে যাওয়ার কারণেই বিজেপির এই বিপুল উত্থান সম্ভব হয়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁদের দিকে আঙুল তোলায় তার তীব্র বিরোধিতা করেছেন সুজনবাবু। তিনি বলেন, রাজ্যে বিজেপি-আরএসএসের মতো বিপদকে খাল কেটে ডেকে এনেছিল তৃণমূলই। তারপর ক্ষমতা দখলের পর বামেদের খতম করতে নানা অত্যাচারের রাস্তা নিয়েছিল গত আট বছর ধরে। পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের ঠেকাতে চরম অগণতান্ত্রিক আচরণ চালিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে বিজেপির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তারা মেরুকরণের রাজনীতি করেছে। তবে তৃণমূলের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে মানুষ আপাতত বামেদের থেকে বিজেপিকে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে করেছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বলে।