নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যে প্রকল্প নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলে। যে প্রকল্প রাজ্যের মহিলাদের আত্মনির্ভর করে তুলেছে। যে প্রকল্প মহিলাদের সাবলম্বী হয়ে উঠতে সাহায্য করছে। সেই প্রকল্পটির নাম ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। অথচ এই প্রকল্পটি নিয়ে ধারাবাহিক সমালোচনা চালাত বিজেপি। আচমকা ভোটের আগে তাদের ভোলবদল। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হঠাৎ জানালেন, তাঁরা লক্ষ্ণীর ভাণ্ডারে ১০০ টাকা অনুদান বৃদ্ধি করবেন। ভোটের ময়দানে ফায়দা তুলতে একথা বলে বেজায় বেকায়দায়ও পড়লেন তিনি। এই মন্তব্যটিকে সহজে নিচ্ছেন না রাজ্যের মহিলারা। রাজ্যের সর্বত্র মহিলাদের বক্তব্য, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অপমানজনক। তা ভিক্ষার সামিল। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো জনমুখী প্রকল্পের সঙ্গে সম্মান জড়িয়ে। কিন্তু অমিত শাহের কথায় মহিলাদের প্রতি প্রকাশ পেয়েছে চূড়ান্ত অসম্মান।’ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প। মাসে ৫০০ টাকা অনুদান ছিল। তা বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তপসিলি সম্প্রদায়ভুক্তরা পান ১২০০ টাকা। বিজেপি লাগাতার এই প্রকল্প বন্ধ করার হুঙ্কার দিত। কিন্থু ভোটের আগে ভোলবদল। অমিত শাহ নিজে ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিদিদের হাতে দিয়ে দেবেন বলে জানালেন। কিন্তু বাস্তবে অমিতবাবুর মন্তব্য ব্যুমেরাং হয়ে মহিলাদের ক্ষোভ উগড়ে দিল। তাঁদের বক্তব্য, ‘মহিলাদের তাচ্ছিল্য করল, অপমান করল বিজেপি। তারা আগে ভিক্ষার দান বলেছিল। এখন সেই ভিক্ষার দানের মতোই ১০০ টাকা ছুড়ে দিতে চাইছে।’
বিজেপি একা নয়, সিপিএমও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে লাগাতার কটাক্ষ চালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভোট আসার পর ঠেকায় পড়ে মহিলাদের মন জিততে এই প্রকল্প চালিয়ে যাবে এবং অনুদান বৃদ্ধি করে ২০০০ টাকা করবে বলে বলছে। ডিভিডেন্ড পেতে পিছিয়ে নেই কংগ্রেসও। তারাও ঘোষণা করেছে ‘মহালক্ষ্মী’ প্রকল্প। বলেছে, প্রত্যেক গরীব পরিবারের মহিলাদের বছরে এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে।
তবে ভোটের ফায়দা তুলতে অমিত শাহের ১০০ টাকা বাড়ানোর কথা বাস্তবে ঘি ঢেলেছে আগুনে। মহিলারা বেজায় ক্ষুব্ধ। বিজেপির ভিক্ষার দান ছুড়ে ফেলে দেওয়া হবে, রাজ্যের সর্বত্র একই আওয়াজ।