নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মঙ্গলবারও ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান মঞ্চকে ঘিরে ছিল দলীয় কর্মী-সমর্থকদের প্রবল উদ্দীপনা। এদিনও রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে বহু মানুষ ভিড় করেন অবস্থান মঞ্চের আশপাশে। ব্যারিকেডের বাইরে থাকা মানুষজন প্রবল ভিড়ের মধ্যেই নানাভাবে চেষ্টা করছিলেন, প্রিয় মুখ্যমন্ত্রীকে একবারের জন্য চোখের দেখা দেখতে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে আসা দুই যুবক তপন কর্মকার এবং সজল পাল দুপুরের কড়া রোদে অনেক চেষ্টায় অবস্থান মঞ্চে বসে থাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখামাত্রই চিৎকার করে ওঠেন। তৃপ্তির হাসি হেসে তাঁরা পরস্পরকে বলেন, দিদিকে দেখা হয়ে গিয়েছে। চল, বাড়ি চল। ওই দুই যুবক মুখ্যমন্ত্রীর দর্শন পেলেও কিছুটা হতাশ হয়ে ফিরতে হল জীবনতলার বাসিন্দা রত্না হালদার, তপতী সামন্ত, অর্চনা পালদের। তাঁদের কথায়, বাড়ি থেকে বেরিয়ে আমরা সকাল সকাল এলাম দিদিকে দেখতে। কিন্তু দেখাই পেলাম না। পুলিস তো আমাদের অবস্থান মঞ্চের ধারেকাছে ঘেঁষতেই দিল না। এরপরই কিছুটা রাগতস্বরে রত্নাদেবী বলেন, আমরা মহিলা, এত ভিড় ঠেলে কি আমাদের পক্ষে দিদিকে দেখা সম্ভব? তাই তাঁর বক্তব্য মাইকে শুনেই বাড়ির পথে পা বাড়াচ্ছি। এখানে কেন এলেন? প্রশ্ন শুনে মাঝবয়সি ওই তিন মহিলা বলেন, দিদির জন্যই তো আজ আমাদের এলাকায় স্কুল বাড়ি সংস্কার, পানীয় জল, রাস্তাঘাট হয়েছে। অচর্নাদেবী বলেন, দিদির জন্যই তো আমার নাতনি স্কুল থেকে সাইকেল পেয়েছে। পাচ্ছে কন্যাশ্রীর টাকা। বলুন তো, এটা কি কম কথা। তাই দিদি রাস্তায় বসে থাকবেন, আমরা একবার তাঁকে দেখতে যাব না?
এদিন ধর্মতলার অবস্থান মঞ্চকে ঘিরে ছিল উৎসবের মেজাজ। মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে এদিন মঞ্চে বসে থাকা কেউ গান, কেউ কবিতা, কেউ ছোট ছোট চিরকুটে লিখে আনা বক্তব্য অনাবিল আনন্দে পরিবেশন করেন। দু’-একজন মহিলা দেশাত্মবোধক গান গাওয়া শুরু করলে তার সঙ্গে সুর মেলান মঞ্চের ধারেকাছে থাকা অনেকেই। যাঁরা কবিতা গান পরিবেশন করছিলেন, মাঝেমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কারও কারও নাম উল্লেখ করে বলেন, বেশ ভালো হয়েছে। তোমরা দেশের মুখ উজ্জ্বল কর।
এদিন দুপুরে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু ছাত্রছাত্রীকে দেখা গেল ভিড়ের মধ্যেই অবস্থান মঞ্চের ছবি লেন্সবন্দি করতে। আবার কাউকে কাউকে সেলফি তুলতেও দেখা গেল। চলল গ্রুফিও। সব মিলিয়ে এদিন অবস্থান মঞ্চে ছিল উচ্ছ্বাসের ছোঁয়া।