মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযো ... বিশদ
সাতপুরা পর্বতমালার মাথায় পাঁচ পাহাড়ের সমষ্টি পাঁচমারি। মধ্যপ্রদেশের একমাত্র শৈলশহর। যাকে অনেকেই বলেন মধ্যপ্রদেশের কাশ্মীর। পারমার, তোমর, চৌহান থেকে মুঘল হয়ে গোন্দ বংশীয় রাজাদের হাত ঘুরে ব্রিটিশের হাতে যায় পাঁচমারি। ১৮৬২-তে ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন ফোরসিথ এখানকার মনোরম আবহাওয়া আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন। মূলত, তার উদ্যোগেই পাঁচমারিতে তৈরি হয় ভারতের সেন্ট্রাল প্রভিন্সের সামার ক্যাপিটাল। ব্রিটিশ শাসকেরা এই শৈল শহরের নাম দেন ‘কুইন অব সাতপুরা’।
ইতিহাস, ভূগোল তো জানা হল। এবার যাব কীভাবে সেটা জানা দরকার। কলকাতা থেকে সরাসরি পিপারিয়া ট্রেনে। তারপর বাসে। কিন্তু একটাই ট্রেন। রিজার্ভেশন পাওয়া একটু সমস্যার। না পেলে শিপ্রা এক্সপ্রেসে ভোপাল। ওখান থেকে বাসে বা ট্রেনে পিপারিয়া। সেখান থেকে বাসে। পকেট পারমিট করলে ভোপাল থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়েও যাওয়া যায়। এত ঝক্কি ঝামেলা করে যাওয়া না হয় হল। কিন্তু দেখব কী? খরচ পোষাবে তো?
প্রথম দিন প্রথমেই দেখতে হবে জটাশঙ্কর মহাদেব। মাটির নীচে গুহার মধ্যে মন্দির। স্ট্যালাকমাইট দিয়ে তৈরি শিবলিঙ্গ। স্ট্যালাকটাইট দিয়ে তৈরি জটা। জনশ্রুতি শিব এখানে তাঁর জটা বিসর্জন দিয়েছিলেন। সেজন্য এই লিঙ্গের নাম জটাশঙ্কর।
এরপর হল পাণ্ডব গুহা। জনশ্রুতি অজ্ঞাতবাসের সময় পাণ্ডবরা এই গুহায় বেশ কিছুদিন ছিলেন। ওখান থেকে সোজা হাণ্ডি খো। ভি আকারের ৩০০ ফুট গভীর গিরিখাত। হ্যান্ডি নামে জনৈক ব্রিটিশ অফিসার এখানে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। তারপর প্রিয়দর্শিনী পয়েন্ট। যেখানে দাঁড়ি নেই ক্যাপ্টেন ফোরসিথ পাঁচমারি আবিষ্কার করেন।
সবশেষে বড়া মহাদেব দেখে একটু পায়ে হেঁটে গুপ্ত মহাদেব। দুই পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে অত্যন্ত সংকীর্ণ পথে প্রায় কাত হয়ে পঞ্চাশ ফুট হেঁটে শিবলিঙ্গ দর্শন করতে হয়। ভুঁড়িওলা মোটা চেহারা হলে আর ভেতরে ঢোকা হবে না।
দ্বিতীয় দিন সকালে ব্রেকফাস্ট করে সোজা চোরাগড়। তারপর প্রায় ১৩০০ সিঁড়ি ভেঙে ওপরে উঠে শিবমন্দির দেখতে হবে। চোরাগড় থেকে নেমে পরপর দেখতে হবে অপ্সরা বিহার, রজত ফলস, বি ফলস, বাইসন লজ, ত্রিধারা, রেচগড়, আইরিন পুল, অম্বা মাঈ মন্দির। সারাদিন এসব দেখে বিকেলে হাজির হতে হবে ধূপগড়ে। ওখানে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখা আর বাদাম ভাজা খাওয় ব্যস। সূর্য ডোবার পালা শেষ হলে যখন আঁধারের ধূপছায়া নামবে তখন হোটেলে ফেরা।
তৃতীয় দিন হাতে সময় থাকলে এবং পারমিট করানো থাকলে ঘুরে আসা যাবে সাতপুরা ন্যাশনাল পার্ক। এবার থাকার জায়গার খোঁজ।
পাঁচমারিতে থাকার কোনও সমস্যা নেই। মধ্যপ্রদেশ ট্যুরিজমের ওখানে আটটা বিভিন্ন দাম ও মানের হোটেল আছে। কলকাতায় ওদের অফিস থেকে ঘর বুক করে গেলেই হল। তাহলে আর দেরি কিসের? গরমের ছুটিতে ব্যাগ প্যাক করে পাঁচমারি গেলেই হল।