নিকট বন্ধু দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতা। গুরুজনের স্বাস্থ্যহানি। মামলা-মোকদ্দমায় পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে থাকবে। দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝিতে ... বিশদ
এদিন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বাংলায় আইনের শাসন নেই বলে সমালোচনা করলেও সুকৌশলে তাঁর নিজের রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি এড়িয়ে যান। হাতরস কাণ্ড নিয়েও তাঁর মুখে টুঁ শব্দটি শোনা যায়নি। এদিন দুপুরে গাজোল কলেজ ময়দানে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় যোগী বলেন, ‘আজ থেকে ২৫-৩০ বছর আগে সারা দেশের যুব সম্প্রদায় কাজের জন্য বাংলামুখী হতো। বর্তমানে বাংলার মানুষ রুটিরুজির জন্য দিল্লী, উত্তরপ্রদেশে যান। আমি উত্তরপ্রদেশে বহু বাঙালিকে কাজ করতে দেখি।’
করোনার পরিস্থিতিতে লকডাউনের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে কর্মরত এরাজ্যের শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়েছিল বলেও অনেকে অভিযোগ তুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে মালদহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব কড়া ভাষায় তোপ দেগেছে। মালদহ জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর বলেন, সারা দেশের মানুষ বিভিন্ন রাজ্যে কর্মসূত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন। এরাজ্যে অনেকে কাজ করতে আসেন। তেমন আমাদের রাজ্যের মানুষও ভিনরাজ্যে যান। করোনার সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিজেপি কিছু না করে এখন কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন করছে। করোনাকালে হঠাৎ করে দেশজুড়ে লকডাউন করে মানুষকে সর্বনাশের পথে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। আশ্রয়, পানীয় জল, খাবার না পেয়ে কর্মস্থল থেকে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফিরতে হয়। ট্রেনের ধাক্কায় স্ত্রী, পুত্র সহ পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যু হয়েছিল। রাস্তায় মহিলা শ্রমিকরা সন্তান প্রসব করতে বাধ্য হন। ফলে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মুখে এরাজ্যের শ্রমিকদের দুর্দশার কথা মানায় না। লকডাউনের সময় আমাদের দলের নেতাকর্মীরা পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তখন কোথায় ছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কোথায় ছিল বিজেপির নেতা-কর্মীরা। জেলা প্রশাসন ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে।
মৌসম আরও বলেন, এরাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তরপ্রদেশের থেকে ভালো। হাতরস কাণ্ড গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। তখন যোগী আদিত্যনাথ নীরব ছিলেন। নিজের রাজ্যে ফিরে গিয়ে তিনি আত্মসমালোচনা করবেন বলে আশা করি।
লকডাউনে বাড়ি ফেরা রতুয়ার বাসিন্দা শেখ সিরাজ, স্বপন মণ্ডল বলেন, আমরা মুম্বইয়ে বস্ত্র বয়ন শিল্পে কাজ করি। সেখানে বাংলার মতোই উত্তরপ্রদেশেরও বহু শ্রমিক কাজ করেন। আমরা একই জায়গায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতাম। সেসময় মালদহে আমাদের পরিবারকে দেখেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিনা পয়সায় রেশনে চাল-গম পেয়েছি। যোগী আদিত্যনাথের কথার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই।
মিল্কির বাসিন্দা শেখ রমজান বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীরের আপেল বাগিচায় কাজ করছি। বাংলার শ্রমিকদের মতো পেশাদারিত্ব এবং দক্ষতা অন্য রাজ্যের শ্রমিকদের নেই। ফলে সেখানে আমাদের চাহিদা রয়েছে। এরাজ্যের মানুষ বিজেপি শাসিত গুজরাতে কাজের জন্য যায়। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ যায় বলে শুনিনি। উল্টে উত্তরপ্রদেশের পরিযায়ী শ্রমিকরাই দেশজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।
যোগী এদিনের সভায় আরও বলেন, বর্তমানে বাংলায় শুধু গরিবী, আতঙ্কবাদ এবং অরাজকতা রয়েছে। তাঁর ওই মন্তব্যেরও কড়া সমালোচনা করে তৃণমূল। মৌসম বলেন, এটা বাংলা। এখানকার কৃষ্টি, সংস্কৃতি য়ুগ য়ুগ ধরে স্বীকৃত। আর ওনারা ভোটের সময় বাইরে থেকে এসে বাংলার মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছেন। ওনাদের মনে রাখা উচিৎ বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি।