বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
এদিন ভোরে বাগদাদ থেকে ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত আহভাজ শহরে নিয়ে আসা হয় সোলেমানির দেহাবশেষ। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মোল্লাভি স্কোয়ারে প্রচুর মানুষ জড়ো হন। ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এদিনের অনুষ্ঠানে বিরাট সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। বিশেষ করে ইরাক-ইরান ও সিরিয়ার যুদ্ধে শহিদ সেনাদের পরিবারের অংশগ্রহণ এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন সমারোহকে গৌরবান্বিত করেছে।
সোলেমানির সঙ্গেই কাডস বাহিনীর নিহত ৫ সেনা ও ইরাক আধাসামরিক বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার আবু মহদি আল-মুহান্দিসের দেহাবশেষও এদিন আহভাজে নিয়ে আসা হয়েছিল। বিকেলে অবশ্য ওই মরদেহগুলি ফের তেহরানে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গিয়েছে, সেখানে আরও কিছু শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানের পর তাঁদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমেরই প্রকাশিত ছবিতে দেখা গিয়েছে, শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের ভিড়ে আহভাজের রাস্তায় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। শোকার্ত জনতার বেশিরভাগই এসেছিলেন কালো পোশাকে। ‘মার্কিন-বিরোধী’ পোস্টার-প্ল্যাকার্ডে ছেয়ে গিয়েছিল চারপাশ। ছিল শহিদের রক্তের প্রতীক— সবুজ, সাদা ও লাল রংয়ের পতাকাও। রাস্তার পাশাপাশি তেহরান পার্লামেন্টেও এদিন ‘আমেরিকার মুণ্ডপাত’ করে স্লোগান দেওয়া হয়। প্রাত্যহিক অধিবেশন শুরুর আগে বেশ কয়েকমিনিট এই স্লোগান দেওয়া চলে। পরে স্পিকার আলি লারিজানি বলেন, ‘শোনো ট্রাম্প, এটাই গোটা ইরানের কণ্ঠস্বর।’ অন্যদিকে, সোলেমানির পরিবার জানিয়েছে, আমেরিকার বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডের বদলা নেবে হেজবোল্লাহ।
আজ, সোমবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে সোলেমানির জন্য প্রার্থনা করবেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেইনি। তার আগে সোলেমানির মরদেহ নিয়ে আজাদি স্কোয়ার পর্যন্ত একটি মিছিলও করা হবে। পরে ইরানের পবিত্র শহর কওমে নিয়ে আসা হবে সোলেমানির মরদেহ। সেখানকার মাসুমেহ দরগায় কিছু ধর্মীয় রীতি পালন করে মঙ্গলবার তাঁর জন্মশহর কারমানে সোলেমানির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
এদিকে, সোলেমানিকে নিয়ে করা একটি দাবির জেরে নিজের দেশের সংবাদমাধ্যমেরই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। শুক্রবার সোলেমানির মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পরেই মাইক পেন্স ট্যুইটারে দাবি করেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় যুক্ত ১০-১২ জন জঙ্গিকে চোরাগোপ্তা পথে আফগানিস্তানে ঢুকতে সাহায্য করেছিল সোলেমানি।’ এরপরই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম পেন্সকে চ্যালেঞ্জ করে জানায়, ৯/১১-র হামলায় ১২ জন নয়, মোট ১৯ জন জঙ্গি জড়িত ছিল। যদিও পেন্সের তরফে তাঁর মুখপাত্র কেটি ওয়াল্ডম্যান জানান, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট শুধু সেই ডজনখানেক জঙ্গির কথা বলতে চেয়েছিলেন যারা আফগানিস্তান হয়ে আমেরিকায় পৌঁছেছিল। কিন্তু, তাতেও ড্যামেজ কন্ট্রোল হয়নি। নিউইয়র্ক টাইমস মনে করিয়ে দিয়েছে, ৯/১১’র হামলা নিয়ে গঠিত কমিশনের ৫৮৫ পাতার রিপোর্টে কোথাও সোলেমানির নাম নেই। ওয়াশিংটন পোস্ট আবার জানিয়েছে, ওই হামলায় জড়িত ১৯ জঙ্গির মধ্যে ১৫ জনই ছিল সৌদির বাসিন্দা এবং সুন্নি সম্প্রদায়ের। কিন্তু, সৌদি বরাবরই শিয়া অধ্যুষিত ইরানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত। ফলে ইরানের সেনা কমান্ডারের সাহায্য ওই জঙ্গিরা নিয়েছিল বলাটা একেবারেই অযৌক্তিক।