উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
কেন্দ্রীয় সরকার এবং সাধারণ মানুষের উদ্বেগের মধ্যেও অবশ্য আশার আলো দেখাচ্ছে আমেদাবাদের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম)। তারা দেশজুড়ে বিভিন্ন শিল্প সংস্থার উপর একটি সমীক্ষা করেছে। পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে খরচ বৃদ্ধি, বিক্রিবাটা, ব্যবসায় লাভের সম্ভাবনা কতটা খতিয়ে দেখা হয়। তাতে সিংহভাগ শিল্প সংস্থা বলছে, জিনিস তৈরি করার ব্যয়ে লাগাম দেওয়া গিয়েছে। বিক্রিও বেড়েছে বেশ খানিকটা। অল্প হলেও লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে। গত জুন মাসে দেশজুড়ে আনলক পর্ব শুরু হয়েছিল। সমীক্ষাটি আভাস দিচ্ছে, তখনকার তুলনায় পরিস্থিতি অনেক বদলেছে। স্বাভাবিকতার দিকে ফিরছে দেশের শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্য। ফলে সাধারণ পণ্যের দামের ছ্যাঁকায় আগামী দিনে কিছুটা মলম পড়তে পারে।
করোনার সংক্রমণ এবং লকডাউনের জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছিল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। সেই সময় থেকেই নিত্যব্যবহার্য দ্রব্যের দামে রাশ টানা সম্ভব হয়নি। খাদ্যপণ্যের দর ক্রমশ এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্কও দিশাহারা। বিগত মাসগুলিতে আরবিআইয়ের আর্থিক নীতি নির্ধারণ কমিটি একাধিকবার বৈঠকে বসেছে। কিন্তু রেপো রেট কমানো সম্ভব হয়নি। কারণ হিসেবে স্বয়ং গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছেন, যতক্ষণ না মুদ্রাস্ফীতির হার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লক্ষ্যমাত্রায় আসবে, ততক্ষণ রেপো রেট কমানো সম্ভব হবে না। কবে তা সম্ভব হবে, তার আভাসও দিতে পারেনি তিনি। এই অবস্থায় উৎসবের মরশুমে প্রবল মূল্যবৃদ্ধি সরকারের কাছে চরম অস্বস্তি নিয়ে এসেছে।
কিন্তু কী বলছে আইআইএমের সমীক্ষা? শুরু করা যাক, পণ্য তৈরির খরচ দিয়েই। গত সেপ্টেম্বর মাসে ৫৫ শতাংশ শিল্প সংস্থা জানিয়েছে, তাদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে সর্বোচ্চ ছ’শতাংশ। এর মধ্যে ৩০ ভাগ শিল্প সংস্থার দাবি, তাদের উৎপাদন খরচ হয় একটুও বাড়েনি, অথবা এক থেকে তিন শতাংশ বেড়েছে। মজার বিষয়, ১৭ ভাগ শিল্প সংস্থা দাবি করেছে, গত বছরের তুলনায় তাদের পণ্য উৎপাদন খরচ এক শতাংশ বা তারও বেশি কমে গিয়েছে। অথচ গত জুন মাসেও পরিস্থিতি এমন ছিল না। তখন সমীক্ষায় ৫৮ শতাংশ শিল্প সংস্থা জানিয়েছিল, তাদের উৎপাদন খরচ অনেকটাই বেড়েছে। তার মধ্যে দশ শতাংশ বা তারও বেশি খরচ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছিল কুড়ি ভাগ শিল্প সংস্থা।
আসা যাক বিক্রিবাটার কথায়। গত জুন মাসে ৭১ ভাগ শিল্প সংস্থা জানিয়েছিল, তাদের পণ্য বিক্রি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম। সেপ্টেম্বরে এসে ৫১ ভাগ শিল্প সংস্থা সেকথা বলছে। গত জুনে ২৪ ভাগ শিল্প সংস্থা দাবি করেছিল, তাদের বিক্রি স্বাভাবিকের তুলনায় সামান্য কম অথবা স্বাভাবিক। সেপ্টেম্বর মাসে ৪৩ ভাগ শিল্প সংস্থা সেকথা বলছে।
একই পরিস্থিতি ব্যবসায় লাভ করার ক্ষেত্রেও। গত জুনে ৬৮ ভাগ শিল্প সংস্থা বলেছিল, মুনাফা এখন অতি কষ্ট-কল্পনা। এমন কথা গত সেপ্টেম্বরে বলেছে ৫৪ ভাগ শিল্প সংস্থা। ৪১ ভাগ শিল্প সংস্থার দাবি করছে, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের লাভের পরিস্থিতি মোটামুটি ফিরে এসেছে।
পণ্য উৎপাদনের খরচ নিয়ন্ত্রণে থাকলে এবং বিক্রিবাটা বাড়লে ছন্দে ফিরবে শিল্প। যেহেতু সাধারণ মানুষও কাজকর্মে ফিরছেন, তাই গত জুন- জুলাই মাসের তুলনায় সামান্য হলেও বেড়েছে আয়। এই পরিস্থিতিতে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে কিছুটা হলেও লাগাম দেওয়া সম্ভব, এমনটাই মনে করছে শিল্পমহল।