নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: রাজ্যের অন্যতম সেরা পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সম্মান পেল চন্দননগর পুরসভার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। পরিকাঠামো থেকে পরিষেবা, একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রক এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে সেরার স্বীকৃতি দিয়েছে। চন্দননগরের ধরাপাড়ার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি মূলত শিশু হাসপাতাল নামে পরিচিত। জানা গিয়েছে, বিভিন্ন মাপকাঠিতে বিচার করে স্বাস্থ্য মন্ত্রক এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে ৮৮.৩১ শতাংশ নম্বর দিয়েছে। চন্দননগর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি দল রাজ্যের সমস্ত পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সমীক্ষা করে। তাতে রাজ্যের ১২টি পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র সেরার স্বীকৃতি পেয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে হুগলি জেলার একমাত্র ধরাপাড়ার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালেও চন্দননগরের একটি পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র সর্বভারতীয় সমীক্ষায় সেরা হয়েছিল। সেই নিরিখে পরপর দু’বছর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে সেরার শংসাপত্র ছিনিয়ে আনল চন্দননগর। এই প্রাপ্তিকে ঘিরে পুরকর্তাদের মধ্যে উল্লাস ছড়িয়েছে। চন্দননগরের মেয়র তথা প্রবীণ তৃণমূল নেতা রাম চক্রবর্তী বলেন, এই সাফল্য পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। তবে বিষয়টির একটি রাজনৈতিক তাৎপর্য আছে। কেন্দ্রীয় সরকার সর্বত্রই বাংলাকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করে। রাজ্যের পুরস্বাস্থ্য পরিষেবার মান যে উন্নত, তা আরও একবার প্রমাণিত হল। এনিয়ে পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) শুভজিৎ সাউ বলেন, সাফল্য পাওয়ার থেকেও বড় কথা হল তা ধরে রাখা। সেই নিরিখে আমরা সফল। পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এই সম্মান তারই ফসল। আমরা পরিষেবার মানকে আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছি। যাতে ১০০ শতাংশের কাছাকাছি নম্বর পেতে পারি।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার দেশজুড়ে সমীক্ষা করেছিল। সেই সমীক্ষার ভিত্তিতে ভালো কাজের নিরিখে শংসাপত্র দেওয়া হয়। সেই শংসাপত্রের সরকারি নাম কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সার্টিফিকেট। এতেই সম্মানের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে চন্দননগর পুরসভা ও তার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, সামগ্রিক পরিষেবার নিরিখে গড় হিসেবে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে ৮৮ শতাংশ নম্বর দেওয়া হয়েছে। রোগীদের সন্তুষ্টির নিরিখে দেশের গড় মানকে স্পর্শ করেছে চন্দননগরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। এই বিচারে প্রায় ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে তারা। শুধু হাসপাতালে পরিষেবার নিরিখে জুটেছে ৯০.৩৮ শতাংশ নম্বর। মা ও শিশুর স্বাস্থ্য, সদ্যোজাতের জন্য পরিষেবা, পরিবার পরিকল্পনা, টিকাকরণের মতো ক্ষেত্রে ৮০-৮৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তবে কিছু ত্রুটিও চিহ্নিত হয়েছে। সেগুলি সমাধানের পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে নদীয়ার পঞ্চাননতলার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ওই দু’টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৯২ শতাংশেরও বেশি নম্বর পেয়েছে। জেলা হিসেবে ওই জেলার তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র সেরার শিরোপা পেয়েছে।