যে কোনও ব্যবসায় অগ্রগতি আশা করা যায়। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের কর্মের প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে সমস্যা হতে ... বিশদ
বর্তমানে দেবরাজ কেন্দ্রের অধীন একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে অস্থায়ী কর্মচারী। প্রতি বছর পুনর্নবীকরণ হয় তাঁর চাকরির চুক্তি। ফলে সব সময় একটা ভয় তাঁকে তাড়া করে বেড়ায়। পরের বছর যদি চাকরিটা না থাকে! এই পরিস্থিতি শুধু তাঁর একার নয়। হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে কথা বলতে বলতে দেবরাজ অকপটে বললেন, কোথায় চাকরি? যদি থাকত, তাহলে আমাদের মতো শিক্ষিতরা কি ১০ বছর ধরে একটা স্থায়ী চাকরি জোটাতে পারতাম না? সরকারি অফিসে যেটুকু চাকরি হচ্ছে, তার অধিকাংশই অস্থায়ী বা কন্ট্রাক্টচুয়াল। ফলে মাইনেও তুলনামূলক কম। মানসিক শান্তি নেই।
স্থায়ী চাকরি না হলেও দেবরাজের বাড়ির অদূরেই মেট্রো স্টেশন। ভোটের মুখেই হুগলি নদীর নীচে দিয়ে মেট্রো পরিষেবা চালু হয়েছে। উদ্বোধন করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হাওড়ায় লোকসভা নির্বাচনে এই প্রকল্পকে কেন্দ্রের বড় সাফল্য বলে তুলে ধরছে গেরুয়া শিবির। তবে এই সাফল্য বেকারত্বের ইস্যুতে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তার জলজ্যান্ত উদাহরণ দেবরাজ। তাঁর মতো অনেকেরই দাবি, গঙ্গার নীচে দিয়ে মেট্রো যাওয়ায় মানুষের সুবিধা হয়েছে, একথা অনস্বীকার্য। কিন্তু এই মেট্রো ধরে যদি আরও বেশি সংখ্যক যুবক-যুবতী চাকরি করতে যেতে পারতেন, তাহলে এর স্বার্থকতা প্রমাণিত হতো। বলছিলেন হাওড়ার আরও এক বাসিন্দা সতীশ আগরওয়াল।
আগামী ২০ মে হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের ভোট। বালি, হাওড়া উত্তর, হাওড়া মধ্য, হাওড়া দক্ষিণ, শিবপুর, সাঁকরাইল ও পাঁচলা— এই সাতটি বিধানসভা ক্ষেত্রের অন্যান্য ইস্যুর পাশাপাশি ‘গঙ্গার নীচের মেট্রো’কে হাতিয়ার করে ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছে বিজেপি। তবে তৃণমূলের মজবুত সংগঠনই দলের প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় অ্যাডভান্টেজ। বিজেপি প্রার্থী ডাঃ রথীন চক্রবর্তী এবং সিপিএম প্রার্থী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়কে কাউন্টার করতে একেবারে তৃণমূল স্তরের ইস্যু ধরে প্রচার চালাচ্ছেন ঘাসফুলের কর্মীরা। সকালে বালি বিধানসভা কেন্দ্রের বেলুড় এলাকায় টোটো নিয়ে প্রচারে বেরিয়ে একটি ক্লাবকে প্রদক্ষিণ করে বিরোধীরা মিটিং করায় পাড়ার শিশুদের পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে, একথাও মানুষের কাছে কটাক্ষের সুরে পৌঁছে দিচ্ছে তৃণমূল। যদিও হাওড়া ও বালি পুরসভায় দীর্ঘদিন পুর নির্বাচন না হওয়াও বড় ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে ১৭ লক্ষ ৬৯ হাজার ১৮৪ জন ভোটারের এই কেন্দ্রে। যেখানে মহিলা ভোটার রয়েছেন ৮ লক্ষ ৫৮ হাজার ৬১০ জন।
রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলার তৃণমূল নেতা অরূপ রায়ের কথায়, দেশে বেকারত্বের থেকে বড় ইস্যু আর কিছু আছে নাকি? তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করে প্রসূনের দাবি, আমাদের সংগঠন যথেষ্ট মজবুত। ফলে আমাদের জয় সুনিশ্চিত। অন্যদিকে, বিজেপি প্রার্থীর দাবি, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কোনও স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। মোদিজির জন্যই আজ দেশের অর্থনীতি উজ্জ্বল হয়েছে। ভোটের ফলাফলেই মানুষ বুঝিয়ে দেবে, তারা কার পক্ষে। তৃণমূল-বিজেপি উভয়ের কাঁধেই অনুন্নয়নের দায় চাপিয়েছেন বাম প্রার্থী।