নিকট বন্ধু দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতা। গুরুজনের স্বাস্থ্যহানি। মামলা-মোকদ্দমায় পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে থাকবে। দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝিতে ... বিশদ
এ বছর নামকরণের ‘রীতি’ ভেঙে আইফোন মডেলের নাম থেকে রোমান হরফ সরিয়ে দিয়েছে অ্যাপল। আইফোন ১০-এর পরবর্তী দু’টি ভার্সন ছিল ‘এক্সএস’ এবং ‘এক্সআর’। নতুনটির নাম তারা দিয়েছে, ১১ প্রো এবং ১১ প্রো ম্যাক্স। এই পার্থক্যটুকু বাদ দিলে পূর্বসূরি এক্সএসের স্ক্রিন সাইজের সঙ্গে কোনও পার্থক্য নেই ১১ প্রো-র। দুটোই ৫.৮ ইঞ্চি। আর ম্যাক্স মডেলগুলির আয়তন ৬.৫ ইঞ্চি। নতুন সিরিজের ফোনগুলির ডিসপ্লে ওলেড ‘সুপার রেটিনা এক্সডিআর’। অ্যাপলের দাবি, ওলেড হলেও আগের মডেলের থেকে এর ঔজ্জ্বল্য বেশি (সূর্যালোকে ৮০০ নিটস)। সেই তুলনায় পুরনো এক্সএসের ম্যাক্স মডেলে ঔজ্জ্বল্য সর্বোচ্চ ৭২৫ নিটস ছিল। অন্যদিকে, আইফোন ১১ এবং তার পূর্বসূরি এক্স আর-এর এলসিডি ডিসপ্লের সাইজও একই — ৬.১ ইঞ্চি।
নয়া আইফোনের ফেস আইডি আরও দ্রুতগতির (৩০ শতাংশ) হয়েছে বলে দাবি করেছে অ্যাপল। এখন বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকেও মসৃণভাবে কাজ করবে এই ফিচার। প্রসেসর চলবে সংস্থার নিজস্ব এ-১৩ বায়োনিক চিপে। অপারেটিং সিস্টেম আইওএস ১৩। এছাড়াও স্পাশিয়াল অডিও, ডলবি অ্যাটমস সাপোর্টও রয়েছে নয়া আইফোনে।
রঙে তেমন আহামরি কোনও বদল আনেনি কুপার্টিনোর সংস্থাটি। ১১ প্রো এবং ম্যাক্স পাওয়া যাবে গোল্ড, স্পেস গ্রে, সিলভার এবং মিডনাইট গ্রিনে। আর ‘এক্স আর’ ভার্সনের কোরাল ও ব্লু রং বদলে আইফোন ১১ হাজির হয়েছে সবুজ এবং পার্পল রঙে।
ব্যাটারির দিক থেকে নতুন মডেল পূর্বসূরিদের টপকে গিয়েছে। এক্সআরের তুলনায় আইফোন ১১ মাত্র এক ঘণ্টা (ভিডিও প্লেব্যাক ১৭ ঘণ্টা) বেশি ব্যাকআপ দিলেও, বাকি দু’টি ভার্সন কিন্তু পুরনো মডেলগুলির থেকে বেশ খানিকটা এগিয়ে। যেমন, এক্সএস-এর থেকে ১১ প্রো ৪ ঘণ্টা বেশি এবং এক্সএস ম্যাক্স-এর থেকে প্রো ম্যাক্স ৫ ঘণ্টা বেশি ব্যাকআপ দেবে বলে জানিয়েছে টিম কুক। চার্জার ১৮ ওয়াটের।
ভক্তদের বহুদিনের প্রত্যাশা পূরণ করে এ বছর আরও শক্তিশালি নাইট মোড এবং আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরা নিয়ে হাজির হয়েছে অ্যাপল আইফোন ১১। ডিসপ্লে নচ-এর মধ্যেই ফ্রন্ট ক্যামেরা বসিয়েছে অ্যাপল। মেগাপিক্সেল ৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ১২। গ্যালাক্সি নোট ১০ প্লাস বা হুয়াই পি ৩০-তে আল্ট্রা ওয়াইড লেন্স থাকলেও আইফোন ১১ তাদের থেকে এগিয়েই থাকবে বলে জানিয়েছে অ্যাপল। প্রো ভার্সনে রয়েছে তিনটি ক্যামেরা। যার একটি হল এই আল্ট্রা ওয়াইড লেন্স। প্রত্যয়ী কণ্ঠে অ্যাপল জানিয়েছে, স্মার্টফোনের জগতে এত নিখুঁত আল্ট্রা ওয়াইড লেন্স আগে কেউ আনেনি। এর পাশাপাশি উন্নত নাইট মোড নিজে থেকেই ছবির এক্সপোজার, হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করে আপনাকে ঝকঝকে ছবি দেবে সেকেন্ডেরও কম সময়ে। এছাড়াও ডিপ ফিউশন বলে একটি নতুন ক্যামেরা ফিচার যোগ হয়েছে ১১ প্রো সিরিজে। যা প্রথম সফটওয়্যার আপডেটের পর হাতে পাবেন গ্রাহকরা।
পুরনো মডেলগুলোর তুলনায় নতুন আইফোন অনেক বেশি টেকসই এবং পোক্ত। প্রতি বছরই ফোনের জল নিরোধক ক্ষমতা এবং স্থায়িত্ব নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায় অ্যাপল। এবারও তার অন্যথা হয়নি। ওয়েবসাইটে নতুন সিরিজ নিয়ে বলতে গিয়ে ভূমিকাতেই অ্যাপল জানিয়েছে, স্মার্টফোনের ইতিহাসের এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে শক্ত গ্লাস লাগানো হয়েছে আইফোন ১১ সিরিজে। সামনে তো বটেই, ফোনের পিছনেও রয়েছে শক্তপোক্ত ম্যাট গ্লাস। সংস্থার দাবি, ৪ মিটার পর্যন্ত জলের তলায় ৩০ মিনিট রাখলেও কিচ্ছুটি হবে না ফোনের। আগের মডেলগুলোর চূড়ান্ত সীমা ছিল, ২ মিটার জলে ৩০ মিনিট।
নতুন সিরিজে না পাওয়ার তালিকাও নেহাত ছোট নয়। আইফোনপ্রেমীরা আশা করেছিলেন রিভার্স এবং ওয়ারলেস চার্জিং- দুটোই থাকবে নতুন এই সিরিজে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। যদিও নতুন ফোনগুলোকে কিউআই প্যাড দিয়ে তারবিহীন ভাবে চার্জ দেওয়া যাবে ঠিকই, কিন্তু এক ফোন থেকে অন্য ফোন বা ফোন থেকে অ্যাপল স্মার্ট ওয়াচ চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা এখানে নেই। যে প্রযুক্তি অ্যাপলের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্যামসাং তাদের নতুন গ্যালাক্সি সিরিজে ইতিমধ্যেই নিয়ে এসেছে। এছাড়াও অনেকে এবার থ্রিডি টাচের আশা করেছিলেন। কিন্তু দাম কম রাখতে গিয়ে ভক্তদের সেই আশাতেও জল ঢেলে দিয়েছে অ্যাপল।