কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
কেন আধিকারিকরা এই বাগান তৈরিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাশ্মীরে সাগরদিঘি ব্লকের বেশ কিছু যুবক আপেল বাগানে কাজ করতে গিয়েছিলেন। জঙ্গিরা তাঁদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। তাতে ছ’জন শ্রমিক মারা যান। তারপরেই জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয় এই জেলাতেই তারা আপেল বাগান তৈরি করবে। তড়িঘড়ি জমিও চিহ্নিত হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে দেরাদুন থেকে গাছের চারা আনা হয়। আধিকারিকদের এমন সিদ্ধান্তের কথা জেলায় ছড়িয়ে পড়তেই অনেকেই মুচকি হাসেন। এই মাটিতে বাগান হবে? শীতপ্রধান অঞ্চল ছাড়া আদৌও কি গাছ বড় হবে? এ জাতীয় বিভিন্ন প্রশ্ন আসতে থাকে আধিকারিকদের কানে। তাতে তাঁদের আরও জেদ চেপে বসে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সুদীপ্ত পোড়েল বলেন, আগামী দিনে আপেল বাগান ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র করার পরিকল্পনাও রয়েছে। ধূমারপাহাড়ে ম্যাঙ্গো পার্কও তৈরি হয়েছে। সেখানে প্রায় ২৫০টি প্রজাতির আমগাছ রয়েছে। পর্যটকরা আপেলের পাশাপাশি হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন প্রজাতির আমও দেখতে পাবেন। আপেল গাছ অনেকটাই বড় হয়ে গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সরকারি জমিতেই এই বাগান তৈরি হয়েছে। তা পরিচর্যার জন্য কর্মী রাখা হয়েছে। তাঁদের একজন দেরাদুন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। বাগানের চারদিকে প্রাচীর তৈরি করে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। বাগান পরিচর্যা করতে করতেই বিজয় পাশোয়ান নামে এক কর্মী বলেন, ভারী বৃষ্টির জন্য গাছের ক্ষতি হচ্ছে। তারজন্য আমাদের বিশেষভাবে পরিচর্যা করতে হচ্ছে। পাতায় স্প্রে করতে হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য সময় গাছের গোড়ার মাটি, সার দিতে হয়। দেরাদুনে গাছের সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আমাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। শুধু শীতপ্রধান এলাকায় আপেল হয়। এই ধারণা ঠিক নয়। তবে গাছে ফুল আসার জন্য ১০-১৫দিন কনকনে শীত দরকার রয়েছে। শীত না পড়লে আপেলের স্বাদ ভালো হয় না। আমাদের এখানে কয়েকবছর ধরে ডিসেম্বর মাসের দিকে ভালোই ঠান্ডা পড়ছে। তেমনটা হলেই ভালো ফলন হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের প্রকল্প থেকেই দু’টি বাগান তৈরি হয়েছে। তাছাড়া কাবিলপুর এবং চাঁদপাড়ায় প্রশাসনিক সহায়তায় ব্যক্তিগত উদ্যোগেও গাছ রোপণ করা হয়েছে। আগামী দিনে প্রশাসনিক উদ্যোগে আরও বেশকিছু বাগান তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সাগরদিঘির এই আপেল বাগান নিয়ে আধিকারিকরা বেশি উৎসাহ দিচ্ছেন।