ব্যবসায়ে যুক্ত হলে এই মুহূর্তে খুব একটা ভালো যাবে না। প্রেম প্রণয়ে বাধা। কারও সাথে ... বিশদ
জানা গিয়েছে, উত্তরাখণ্ড এবং দিল্লির বাসিন্দা ওই বাঙালি পরিবার ১৬মার্চ দিল্লিতে এক করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসার পর ১৪দিনের জন্য গৃহবন্দি থাকার সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সবাই চলে আসেন নদীয়ায়। সেখানে ওই যুবতীর কাশি শুরু হওয়ায় স্থানীয় হাসপাতালে দেখান। উপসর্গ দেখে সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে এবং পরিবারের ১৩জনকে মহকুমা হাসপাতালে আইসোলেশনে নিয়ে আসে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। তাঁদের মধ্যে উপসর্গ থাকা আটজনের নমুনা পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। শুক্রবার পাঁচজনের নমুনাই পজিটিভ আসে। এদিকে এই ঘটনার পর নদীয়া জেলাজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কারণ ইতিমধ্যে বহু মানুষ বাইরের রাজ্য থেকে জেলায় ফিরেছেন।
জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিতকুমার দেওয়ান বলেন, পাঁচজনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। বাকি তিনজনের রিপোর্ট নেগেটিভ। আমরা ওই পাঁচজনকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাঠিয়েছি। বাকি আটজনকে রাজারহাট কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হচ্ছে। তাঁদের ক্লোজ ওয়াচে রাখা হয়েছে।
তেহট্টর ঘটনা প্রসঙ্গে এদিন কৃষ্ণনগরে সাংবাদিক সম্মেলনে অসিতবাবু বলেন, আক্রান্তদের দু’জন দিল্লি এবং তিনজন উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা। তাঁরা সবাই তেহট্ট-২ ব্লকে বার্নিয়ায় একজনের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত ২৭ তারিখে একটি অনুষ্ঠানের জন্যই তাঁরা এসেছিলেন। সকলেই দিল্লি থেকে আসেন। মোট ছ’জন এসেছিলেন। ১৯তারিখ রাজধানী এক্সপ্রেসে ওঠেন। ২০ তারিখ শিয়ালদহে নেমে লালগোলা প্যাসেঞ্জার ধরে বেথুয়াডহরিতে নামেন। এরপর অটো করে ওই বাড়ি পৌঁছন। আমরা অটোর ড্রাইভার সহ সবাইকে চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টাইনে পাঠাচ্ছি। যাদের কোনও লক্ষণ দেখা যাবে আইসোলেশনে রেখে শরীরের নমুনা পাঠানো হবে। সেনাবাহিনীতে চাকরি করা আরও একজন আত্মীয় ওই বাড়িতে এসেছিলেন, তাঁকেও আপাতত কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বার্নিয়ার ওই ব্যক্তির বাড়িতে এরা ২০তারিখ দুপুর আড়াইটার পর ঢোকেন। প্রথম থেকেই স্ক্রিনিং হয়। প্রথমে কিছু ধরা পড়েনি। পরে একজনের জ্বর হলে সবাইকে নিয়ে আসা হয় তেহট্টের আইসোলেশন সেন্টারে। ২০ থেকে ২২মার্চ তাঁরা কোথায় কোথায় গিয়েছেন, কাদের সঙ্গে মিশেছেন, তা আমরা জানার চেষ্টা চালাচ্ছি। বাড়ির পরিচারিকা, প্রতিবেশী যারা দেখা করতে গিয়েছিলেন, বাজার-হাটেও তাঁরা গিয়েছিলেন। সেটাও আমরা মাথায় রাখছি। কোন সব্জি বা মাছ বিক্রেতার কাছে গিয়েছিল ওই পরিবার, কাদের সঙ্গে আড্ডা মেরেছে তার রিপোর্ট জোগাড়ের চেষ্টা করছি। ওঁরা যেখানে ছিলেন সেই জায়গাগুলি জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। কারা ওঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসে সবাই বললে আমরা কিন্তু আরও মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে পারব। তাই আমাদের আবেদন, এদের সংস্পর্শে কেউ এলে আমাদের কাছে দয়া করে রিপোর্ট করুন।
এদিকে এলাকার মানুষজনের দাবি, অবিলম্বে ওই এলাকায় একটি স্বাস্থ্য দপ্তরের দল পাঠিয়ে প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে চেক আপ করা হোক। প্রতিবেশী এক যুবক বলেন, ওরা দিব্যি মানুষের সাথে ঘোরাঘুরি করেছে। পরে উপসর্গ দেখা দেওয়ায় ওরা হাসপাতালে যোগাযোগ করে। ওদের জন্য আর কত মানুষের এই রোগ ছড়িয়েছে কে জানে। শনিবার ওই গ্রামে যান তেহট্ট-২ ব্লকের বিডিও শুভ সিংহরায় ও পলাশীপাড়া থানার ওসি প্রদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাঁরা মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলেন। কারও কোনও সমস্যা হলে তাঁদের হাসপাতালে যোগাযোগ করতে বলেন। ওই এলাকায় আশাকর্মী, এএনএম নার্স সহ সব স্বাস্থ্যকর্মী বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন।