সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: বুধবার নকশালবাড়ি ব্লকের অটল চা বাগানের সাতভাইয়া ডিভিশনে দিনদুপুরে চিতাবাঘের হামলায় দু’জন জখম হন। এ ঘটনায় গোটা এলকায় আতঙ্ক ছড়ায়। এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাঘ ধরতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন বনকর্মীরা। বিকেলে বনদপ্তর চিতাবাঘ বন্দি করতে ছাগলের টোপ দিয়ে বাগানে খাঁচা পাতে। তবে রাত পর্যন্ত বাঘ জালে ধরা পড়েনি। ব্লকের একাধিক জায়গায় হাতি, চিতাবাঘের মতো বন্য জীবজন্তুর দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বাসিন্দারা বনবিভাগের নিয়মিত নজরদারি অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। যদিও বনদপ্তরের দাবি, চা শ্রমিকরা খরগোশ, ছাগল, গোরু পোষেন। চিতাবাঘ ওসব খেতেই বনাঞ্চল ছেড়ে বাগানতে আশ্রয় নিচ্ছে। বনদপ্তর জানিয়েছে, চিতাবাঘের হামলায় জখমরা হলেন মারওয়ার খরিয়া ও রাজীব লিম্বু। তাঁরা দু’জনই সাতভাইয়া ডিভিশনের বাসিন্দা। স্থানীয় ও বনবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ৮টা নাগাদ মারওয়ারবাবু বাগানের ৭ নম্বর সেকশনে ওষুধ স্প্রে করছিলেন। সেই সময় আচমকাই একটি চিতাবাঘ তাঁর উপর হামলা করে। এতে তাঁর মুখ, হাত-পা সহ শরীরের একাধিক অংশ জখম হয়। বাগানে ওই সময়ে গাছে স্প্রে করা তাঁর সহকর্মীরা এসে উদ্ধার করে নকশালবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়েই কার্শিয়াং ডিভিশনের টুকরিয়াঝাড় রেঞ্জ ও বাগডোগরা এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের কর্মীরা চলে আসেন। তাঁরা বাজিপটকা ফাটিয়ে বাঘটিকে বাগান থেকে সরিয়ে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। ওই সময়ে চিতাবাঘ দেখতে প্রচুর শ্রমিক সেখানে জড়ো হন। তখন আচমকাই বাঘটি চা শ্রমিক রাজীববাবুর উপর হামলা চালায়। বনকর্মীরা তড়িঘড়ি আহত ওই যুবককে উদ্ধার করে নকশালবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। জখম দু’জনেরই সেখানে চিকিৎসা চলছে।
এরপর বনকর্মীরা এলাকায় জোরদার তল্লাশি শুরু করেন। শ্রমিকরা আতঙ্কে কাজ বন্ধ করে দেন। বাগানের শ্রমিক রবীন্দ্র রাজ বলেন, একমাস ধরে এলাকায় চিতাবাঘের আতঙ্ক রয়েছে। এর আগেও কয়েকজন চিতাবাঘের হামলায় আহত হয়েছেন। বনদপ্তরকে একাধিকবার অভিযোগ জানানোর পরেও তারা বাঘ ধরতে উদ্যোগী হয়নি। আরএক শ্রমিক কুমার লিম্বু বলেন, আমরা কিছুদিন ধরেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাগান পরিচর্যার কাজ করছি। এতদিনে বাঘ ধরতে খাঁচা পাতল বনদপ্তর। বনদপ্তরের কার্শিয়াংয়ের এডিএফও চিন্ময় বর্মন বলেন, চিতাবাঘ ধরতে সেখানে খাঁচা পাতা হয়েছে। আমরা নজরদারি চালাচ্ছি। জখম দু’জনকে চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে টাকা দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, মাস দু’য়েক আগে ব্লকের বিজয়নগর চা বাগানের ১৪ নম্বর সেকশনে চিতাবাঘের হামলায় এক মহিলা শ্রমিক জখম হয়েছিলেন। অটল ও বিজয়নগর চা বাগান থেকে অদূরেই উত্তমচন্দ ছাট ও বাগডোগরা বনাঞ্চল।