শরীর নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে। মাথা ও কোমরে সমস্যা হতে পারে। উপার্জন ভাগ্য শুভ নয়। ... বিশদ
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে বিডিও’র ময়নাতদন্তের পর সরকারি উদ্যোগেই সোমবার তাঁর নিজস্ব বাড়ি কার্শিয়াংয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। প্রসঙ্গত, রবিবার বিডিও তপন ব্লকের মালদহ-দক্ষিণ দিনাজপুর সীমান্তের আমতলি ঘাটে গিয়েছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকদের গতিবিধি খতিয়ে দেখতে। সেখান থেকে তপনে ফেরার পথে নিজেই চালাচ্ছিলেন গাড়ি। তাঁর গাড়িতে চালক থাকলেও জানা গিয়েছে, শখের বশেই স্টিয়ারিং নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। এদিকে করদহ এলাকায় রাস্তার উপরই ধান শুকাতে দিয়েছিলেন স্থানীয় কৃষকরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়িটি সেই এলাকায় আসতেই ধানের উপর চাকা পিছলে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি গাছে গিয়ে সজোরে ধাক্কা মারে। এরপর গাড়িটি সোজা মাঠে পড়ে যায়। সেখানে গুরুতর আহত হন বিডিও ও তাঁর গাড়ির চালক সুব্রত মণ্ডল।
বিকট শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। ওই দু’জনকে উদ্ধার করে প্রথমে তপন হাসপাতাল ও পরে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকরা বিডিওকে শিলিগুড়িতে রেফার করে দেন। শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এবিষয়ে জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন, খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমরা তাঁর পরিবারের সঙ্গে রয়েছি। সবরকম সাহায্য করার জন্য পাশে থাকব। অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রণবকুমার ঘোষ বলেন, শিলিগুড়িতে নিয়ে যাওয়ার পথেই হয়ত মারা যান তিনি। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। আমিও সঙ্গে গিয়েছিলাম। এদিন সকালে শিলিগুড়ি থেকে ফিরে এসেছি। বিডিও খুব ভালো মানুষ ছিলেন। চাকরি জীবনে প্রথম এখানেই বিডিও হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিল। তাঁর অকালমৃত্যুতে আমরা শোকাহত।
মহকুমা শাসক বিশ্বরঞ্জন মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, সম্ভবত ওই এলাকার রাস্তায় ধান পড়ে ছিল। বিডিও নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। এবিষয়ে আমরা পুলিসকে ভালোভাবে নজরদারি চালাতে বলেছি যাতে কেউ রাস্তাতে ধান না শুকোতে দেয়। এই ঘটনায় আমরা খুবই মর্মাহত।
রাজ্যসভার সংসদ সদস্য অর্পিতা ঘোষ বলেন, তিনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা বলেন, বিডিও খুবই অল্পবয়সী ছিলেন। তিনি সব দায়িত্ব দক্ষভাবে পালন করতেন। আমরা পুলিসকে বলেছি, যাতে কেউ আর রাস্তায় ধান না শুকোতে দেয়।
এবিষয়ে তপন ব্লকের জয়েন্ট বিডিও বন্দনা শেরপা বলেন, বিডিও খুব বন্ধুসুলভ ছিলেন। আমরা একটা পরিবারের মত কাজ করতাম। সবাই খুব শোকাহত।
বিডিও ছোগেল মোক্তার তামাংয়ের বয়স ছিল মাত্র ত্রিশ বছর। প্রায় নয় মাস আগে তপন ব্লকের বিডিও হিসেবে নিযুক্ত হন। তাঁর বাড়ি দার্জিলিং জেলার কার্শিয়াং ব্লকের সোনাদা খাসমহল এলাকায়। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই গাড়ি চালাতে জানতেন। পাহাড়ি এলাকাতেও তাঁর গাড়ি চালানোর দক্ষতা ছিল। তা সত্ত্বেও এই দুর্ঘটনায় হতবাক সকলেই। প্রয়াত বিডিও’র পরিবারে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা ও দাদা। বাড়ির ছেলের অকালমৃত্যুতে শোকাহত তাঁরা সবাই।