কর্মপ্রার্থীদের নতুন কর্ম সংস্থানের সুযোগ আছে। সরকারি বা আধাসরকারি ক্ষেত্রে কর্ম পাওয়ার সুযোগ আছে। ব্যর্থ ... বিশদ
শনিবার ৪১ দিনের জন্য ভগবান আয়াপ্পা দর্শনের জন্য মন্দির খুলেছে। এদিন বেশি রাত থেকে পুণ্যার্থীদের পাথনিমথিট্টা জেলার পাহাড়ঘেরা এই মন্দিরমুখী হওয়ার কথা। আজ, রবিবার শুরু হবে দর্শন পর্ব। অন্যান্যবারের মতো এবারেও আগামী ৪০ দিন ধরে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের নিরাপত্তা দেখভাল করার পাশাপাশি সেই বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থীদের ভিড়ে কোনও ঋতুমতী মহিলাকে আয়াপ্পার বিগ্রহের সামনে যাচ্ছে কি না, এবার সেদিকেও কড়া নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। শনিবার পুলিসি ব্যবস্থা ও তাদের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য রাজ্য পুলিসের ডিজি লোকনাথ বেহেরা উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রকাশ্যে ঘোষণা না করলেও প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল থেকে পুলিসকে বলা হয়েছে, শবরীমালা পাহাড়ে ওঠার আগেই আয়াপ্পা দর্শনে ইচ্ছুক ঋতুমতী মহিলাদের পথ আটকাতে হবে। যদিও গত বছরের তুলনায় এবার সামগ্রিক পুলিসি ব্যবস্থা অনেক কম বলেই জানা গিয়েছে বিজয়ন প্রশাসন সূত্রে।
বাম জোটের সরকার যে এবার ইচ্ছুক ঋতুমতী মহিলাদের আয়াপ্পা দর্শনে আটকাতে চায়, সেটা অবশ্য পরোক্ষে বুঝিয়েও দিয়েছেন রাজ্যের দেবশ্বমমন্ত্রী কে সুরেন্দ্রন ও আইনমন্ত্রী একে বালন। শুক্রবার তাঁরা বলেছেন, যে কোনও বয়সি মহিলারই আয়াপ্পা দর্শনের সাংবিধানিক অধিকার থাকার যুক্তিতে পূর্বে তাদেরই দেওয়া রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন নিয়ে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের বিদায়ী প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ কোনও স্থির সিদ্ধান্ত জানায়নি। এনিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে ফের মামলাটি পাঠিয়েছে। যদিও সেই সিদ্ধান্ত পর্যন্ত শীর্ষ আদালতের দেওয়া আগের রায়ই বহাল থাকবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। তাই এবারের রায় নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে কিছুটা। তাই মন্দির তথা আয়াপ্পা দর্শনে ইচ্ছুক ঋতুমতী মহিলাদের আগে আদালতের রায়ের কপি নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি শবরীমালা নিয়ে তথাকথিত সমাজকর্মীদেরও এব্যাপারে সতর্ক করেছেন তাঁরা। প্রচারের অভিপ্রায়ে এনিয়ে অহেতুক রাজনীতি করার বিষয়েও দুই সিপিএম মন্ত্রী সাবধান করেছেন সব পক্ষকেই।
কিন্তু দেশের একমাত্র বামশাসিত এই রাজ্যে মূল ক্ষমতাসীন দল সিপিএমের এই অবস্থানই এখন চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। গত বছর সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এই নভেম্বরেই আয়াপ্পা দর্শনে দুই বামপন্থী যুবতীর আয়াপ্পা দর্শনে যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে, সেজন্য প্রশাসন নিখুঁত পরিকল্পনা করেছিল। গোপন ওই পরিকল্পনা মাফিক রীতিমতো পুলিসি পাহারায় ওই দু’জনকে নিয়ে যাওয়া হয় শবরীমালায়। তা নিয়ে পরবর্তীকালে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়। সর্বোচ্চ আদালতের রায় মেনেই প্রশাসন তার ভূমিকা পালন করেছে বলে সে সময় সিপিএম নেতৃত্ব সাফাই দিয়েছিল। বিজেপি, কংগ্রেস সহ তামাম বিরোধীদের জবাব দেওয়ার জন্য বকলমে বাম মহিলা সংগঠনগুলিকে ময়দানে নামিয়ে রাজকোষের টাকা খরচ করে রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত রেকর্ড লম্বা ‘মানব প্রাচীর’ কর্মসূচিও পালন করেছিল সরকার। কিন্তু লোকসভা ভোটে দলের হিন্দু ভোট ব্যাঙ্কে এর জেরে বড় রকমের ধস নামার স্পষ্ট ছবি ধরা পড়ে দলের পর্যালোচনা রিপোর্টে। এই ভোট বিপর্যয়ের কারণেই এবার শবরীমালা নিয়ে জেদ ছেড়ে উল্টো পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত করেছেন বিজয়নরা। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ রায় খতিয়ে দেখার পর এই অবস্থান বদলানোর পক্ষে সহমত হয়।